‘হাত বাড়াই মানবতার সেবায়, লক্ষ্য মোদের আকাশ ছোঁয়ায়’ অদম্য উচ্ছ্বাসিত এ স্লোগানকে ঘিরে খরস্রোতা নদীর মতো বহমান স্বপ্নসিঁড়ি পাঠশালা। বলছিলাম সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করা স্বপ্নসিঁড়ি সংগঠনের আত্মকথা।
স্বপ্নসিঁড়ি একটি চেতনাস্পৃহ নাম। এই নামের মাঝে জড়িয়ে আছে মহৎ অনুপ্রেরণার আবেশ। কয়েকজন স্বপ্নবাজ তরুণ-তরুণীকে নিয়ে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে গড়ে উঠেছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন স্বপ্নসিঁড়ি। স্বপ্নসিঁড়ি সংগঠনের রূপকার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. লাভলু হোসেন। তা ছাড়াও সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষার্থী ও অনান্য শুভাকাঙ্ক্ষীর সহযোগিতায় এগিয়ে চলছে স্বপ্নসিঁড়ি সংগঠনের কার্যক্রম।
বর্তমানে এটি অবস্থিত রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের পাশে বাবুপাড়ায় (লিচুবাগান)। শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম হিসেবে আছে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির উঠান। মানবতার কাজ করে সমাজে সঠিক পথ দেখানো সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য। ছিন্নমূল ও সুবিধাবঞ্চিত শিশু যারা স্কুলগামী কিন্তু উপযুক্ত শিক্ষার অভাবে ঝরে পড়ে; সেই সব কোমলমতি শিশুর ঝরে পড়া রোধকল্পে যাত্রা শুরু করে স্বপ্নসিঁড়ি পাঠশালা।
স্বপ্নসিঁড়ি সংগঠনের অন্যান্য কাজের মধ্যে অন্যতম স্বপ্নসিঁড়ি পাঠশালায় কিছু সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাঠদান করানো হয়। বর্তমানে পাঠদানরত শিশু শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ৮২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের চলমান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়া, খাতা-কলম ও অনান্য শিক্ষা উপকরণ প্রদান, পরীক্ষার মেধাক্রম অনুসারে শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা এবং শিক্ষার্থীদের উন্নতি-অবনতি নিয়ে তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করা। এ ছাড়াও স্বপ্নসিঁড়ি সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য- অধিকারবঞ্চিত প্রতিটি শিশু যেন সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে এবং পরবর্তীতে এই শিশুদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা।
স্বপ্নসিঁড়ি পাঠশালার কোনো শিশুর যেন আর্থিক অভাবের কারণে পড়ালেখা বন্ধ না হয়, সে ব্যাপারে সচেতন থাকা। ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক তহবিল গঠন করা, যাতে স্বপ্নসিঁড়ি পাঠশালার বাইরেও কোনো শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষা ব্যাহত না হয়। শিশুরা যাতে পড়াশোনায় এগিয়ে যায়, সেজন্য প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা এবং পুরস্কার বিতরণ করে অনুপ্রাণিত করেন।
স্বপ্নসিঁড়ি সংগঠনের রূপকার মো. লাভলু হোসেন বলেন, ‘স্বপ্নসিঁড়ি শুধু রংপুরে নয়, ছুঁয়ে যাক বাংলাদেশের প্রতিটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশে যেন একটি শিশুও সুবিধাবঞ্চিত না থাকে সেই প্রত্যাশা করি।’ একদিন এই বস্তির আলোয় আলোকিত হবে পুরো পৃথিবী।
দিনমজুর জিয়ারুল হক জানান, আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা নয় জন। আমার একার আয় দিয়ে সংসার পরিচালনা করা এবং বাচ্চাদের পড়াশোনা করা অনেক কষ্টকর। কিন্তু স্বপ্নসিড়িঁ পাঠশালার কারণে অনেক খরচ বেঁচে যাই। আমার দুই সন্তান এখানে পড়তে আসে।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী বেবি জানান, আগে পড়াশোনায় ভালো পারতাম না। এখানে আসার পর অনেক ভালো পড়াশোনা করি। এ ছাড়াও ভাইয়া-আপুরা আমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও আদব-কায়দা শেখায়।স্বপ্নসিঁড়ি সংগঠনের আদলে সুযোগ পাচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত ও ছিন্নমূল শিশুরা। পরবর্তী সময়ে তারা তাদের মেধা, মননশীলতাকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলবে স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। সুবিধাবঞ্চিত প্রতিটি শিশু হবে একেকটি মানচিত্রের মতো বৃহৎ ও প্রজ্ঞাময়।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.