শাহিনা নদী
প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৩ ১৩:১৭ পিএম
একদিকে গ্রীষ্মের তীব্র তাপদহন, অন্যদিকে প্রায়ই ঝুম বৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ের আনাগোনা। এই সময়ে আকাশ পরিষ্কার দেখে ঘর থেকে বের হওয়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎ কালো মেঘে আকাশটা ছেয়ে যায়। এরপর শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। তাই হঠাৎ এমন বৈরী আবহাওয়ার মোকাবিলা করতে পরিধানকৃত পোশাক ও জুতার ওপর বিশেষ খেয়াল রাখা প্রয়োজন। এ ছাড়াও সঙ্গে রাখুন ছাতা কিংবা রেইনকোট এবং ব্যাগ বাঁচানোর জন্য পানিরোধক কভার ইত্যাদি।
ছাতা : বাসা থেকে বেরিয়েছেন কিছুদূর যেতে না যেতেই হঠাৎ বৃষ্টি শুরু। জামাকাপড় ভিজে বেহাল। বাড়িতে ফিরে যে পোশাক বদলে আসবেন এমন সুযোগও নেই। এমন অবস্থা এড়াতে সঙ্গে রাখুন ছাতা। ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হিসেবে এখন বিভিন্ন ধরনের ছাতা বাজারে মেলে। ফোল্ডিং ছাতার চাহিদা এখন সবচেয়ে বেশি। এগুলো এক ভাঁজ, দুই ভাঁজ ও তিন ভাঁজেরও হয়ে থাকে। এমনকি মিনি ফোল্ডিং ছাতাও মেলে, যা প্যান্টের পকেটে ঢুকে যায় সহজেই। ভাঁজগুলো খুললেই দেখা যায় আকারে অনেক বড়। এসব ছাতা ব্যাগে বহনের জন্য ভালো। এ ছাড়া যেখানে-সেখানে ভুল করে ফেলে আসার সুযোগ থাকে না। রঙেও রয়েছে ভিন্নতা। চাইলেই ইচ্ছামতো রঙের ছাতা বেছে নিতে পারেন।
পোশাক : বৈরী এই আবহাওয়ায় পোশাক নির্বাচনে দিতে হবে বিশেষ মনোযোগ। এ ক্ষেত্রে জর্জেট, সিল্ক কিংবা দেশি ভয়েল কাপড়ের পোশাক পরতে পারেন। এ ছাড়া রাজশাহী সিল্ক, হাফসিল্ক, সুতি জর্জেট কিংবা বেক্সি জর্জেটের তৈরি পোশাকগুলোও এমন দিনে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়ানোর স্বাধীনতা দেবে। রঙের ক্ষেত্রে এই সময়টায় নীল, সবুজ, ছাই, কমলা, মেরুন, আকাশি, লেমন বা উজ্জ্বল যেকোনো রঙের পোশাকই বেশি মানায়। বিশেষ করে যেসব দিনে আকাশ মেঘলা থাকে সেসব দিনে খানিকটা উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরাই ভালো। বৃষ্টির সময় রাস্তার কাদাপানিতে পোশাকের যেন বারোটা না বাজে, সেজন্য খুব বেশি নিচু বা পায়ের কাছে পড়ে এমন প্যান্ট, ট্রাউজার বা সালোয়ার এড়িয়ে চলুন। এ ছাড়া এ সময়ের সালোয়ার কিংবা কামিজ খানিকটা ঢিলেঢালা হলে তা বৃষ্টিতে ভেজার পর যেমন দ্রুত শুকিয়ে যায় আবার হঠাৎ রোদ উঠলেও অস্বস্তি তৈরি করে না।
জুতা : এমন দিনে কম উচ্চতার একেবারে ফ্ল্যাট জুতা না পরে একটু উঁচু হিলের জুতা পরতে পারেন। এতে সহজে পায়ে কাদা লাগবে না। এই সময়ে কেস বা পুরো পা জুতার মধ্যে আটকে থাকে এমন জুতা না পরে দুই ফিতার জুতা ব্যবহার করা উচিত; যাতে বৃষ্টিতে পা ভিজে গেলেও বাতাসের সংস্পর্শে দ্রুত শুকিয়ে যায়। এখন নানা ব্র্যান্ডের ফ্যাশনেবল জুতা পাওয়া যায়, যা পানিতে ভিজলেও নষ্ট হয় না। এ সময়ের জন্য এ ধরনের জুতা পরুন।
রেইনকোট : বৃষ্টির দিনে অন্যতম অনুষঙ্গ হলো রেইনকোট। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এর ডিজাইনে এসেছে ভিন্নতা। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের জন্যও তৈরি হয়েছে এসব কোট। বহনের সুবিধার কারণে এখন সবার পছন্দের তালিকায় অনেকটাই ওপরে রেইনকোট। বৃষ্টি এলে একপাশে দাঁড়িয়ে দ্রুত পরে নেওয়া যায় এটি। গন্তব্যস্থলে গিয়ে খুলে আবার ভাঁজ করে রেখে দিতে পারেন ব্যাগে। কোনো জায়গায় রেখে শুকানোর তেমন ঝামেলা নেই। সিঙ্গেল বা ডবল পার্টের রেইনকোর্ট রয়েছে। একই সঙ্গে ডিজাইনেও আছে ভিন্নতা। শর্ট ও লং- দুই ধরনের ডিজাইন থাকে। তবে ফ্যাশনের দিকে লক্ষ করলে লংটি বেশ মানানসই। কেনার সময় লক্ষ রাখবেন, এটি যেন মোটা হয়। বাজারে পাওয়া যায় যেসব রেইনকোট তা সাধারণত পলিয়েস্টার অথবা প্যারাশুট কাপড়ের। এর বাইরে কম দামে পাবেন প্লাস্টিকের রেইনকোটও। একরঙা রেইনকোটগুলো পাবেন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লোগোর ছাপসংবলিত। বেশি দামের রেইনকোটের মধ্যে রয়েছে ডার্বিসুপার, কমফোর্ট, ব্রিদবেল, রেড চ্যাম্পিয়ন ইত্যাদি ব্যান্ডের রেইনকোর্ট। যেগুলো বেশি জনপ্রিয়। কাপড় ভালো মানের হওয়ায় ব্যবহারও করা যায় দীর্ঘদিন। আর কম দামে মিলবে প্যারাসুট, বিগবস, ফিলিপস, পলিয়েস্টার, ওয়াটারপ্রুফ প্রভৃতি রেইনকোট। তবে প্লাস্টিকের রেইনকোট না কিনে প্যারাশুট কাপড়ের রেইনকোট কেনাই ভালো।