× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হাতুমের কাণ্ড

জুয়েল আশরাফ

প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ০৮:২৪ এএম

আপডেট : ২৬ মে ২০২৩ ১০:২২ এএম

অলংকরণ: রাইয়্যা খায়ের, অষ্টম শ্রেণি, বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়

অলংকরণ: রাইয়্যা খায়ের, অষ্টম শ্রেণি, বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়

দিগন্ত জোড়া আকাশ। সারি সারি গাছ। বিশাল সবুজ এক বন। বনের নাম মায়াকানন। এই বনের প্রাণীরাও বড় আকৃতির। বাঘ, মহিষ, সিংহ, কুমির, জলহস্তী দানবসমান। হাতুম নামে একটি শক্তিশালী হাতি এই বনে বাস করে। শরীরে ও ক্ষমতায় সবচেয়ে বড় হওয়ায় বনে তার বেশ নামডাক। তাকে দেখে অন্যসব প্রাণী ভয়ে তার থেকে দূরে থাকে। যখনই হাতুমের খিদে পায়, সে সহজেই তার শুঁড় দিয়ে গাছের ডাল ভেঙে আনন্দে পাতা খায়। পুকুরের কাছে গিয়ে পানি খায় আর চুপ মেরে বসে থাকে। আসলে হাতুম বনের রাজা নয়। কিন্তু তাকে দেখলেই সবাই ভয়ে পালিয়ে যায়। যদিও হাতুম কাউকে বিরক্ত করে না। এমনকি কারও কাজে বাধাও দেয় না।
তবু কিছু প্রাণী তাকে হিংসা করে।
বনের বাঘগুলো হাতুমকে পছন্দ করে না। তারা সবাই মিলে ভাবল, যেভাবেই হোক এই হাতিকে একটা শিক্ষা দিয়ে আমাদের পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। তার এত বড় শরীর, আমরা তাকে মেরে অনেকদিন তার মাংস খেতে পারব।
অন্য বাঘটি বলল, কিন্তু এত বড় হাতিকে মেরে ফেলা কোনো শিশুর খেলা নয়। কার এই হাতিকে মারার সাহস আছে?
বাঘের মধ্যে একজন ঘাড় তুলে বলল, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ করে তাকে মারতে পারব না, তবে আমার বুদ্ধি দিয়ে তাকে ধরাশায়ী করতে অবশ্যই পারব।
এই কথা শুনে অন্য বাঘেরা খুশি হয়ে গেল। সবাই তাকে তার বুদ্ধি দেখাতে বলল।
চালাক বাঘটি হাতুমের কাছে গিয়ে সম্মান করল। বলল, বনের রাজা! আমার শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। আমাদের ওপর আপনার ভালোবাসা রাখুন।
হাতুম জিজ্ঞেস করল, কে ভাই তুমি? কোথা থেকে এসেছ? আমাকে এত ভালোবাসা দেখাও কেন? আমি তোমাকে চিনি না। কী কাজে এসেছ?
মহারাজ! আমি একটি সাধারণ বাঘ। আমাকে বনের সব প্রাণী আপনার কাছে পাঠিয়েছে। বনের রাজা সবার দেখাশোনা করেন, তিনি আমাদের অহংকার। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখন কোনো রাজা নেই বনে। আমরা সবাই মিলে ভেবেছি আপনার মতো একজন শক্তিশালী হাতিকে বনের রাজা করা উচিত। আপনি যদি কিছু মনে না করেন, তাহলে আমার সঙ্গে এসে রাজা হতে পারেন। আমাদের জঙ্গলের রাজা।
এমন রাজা হওয়ার কথা শুনে কে না খুশি হবে? হাতুমও খুশি হলো। কিছু সময় আগে সে সাধারণ একটা প্রাণী ছিল; একটু পর সে রাজা হবে ভেবে হাতুম রাজি হয়ে গেল।
দুজনেই হাঁটতে লাগল। চালাক বাঘ বলতে
লাগল, শুভ সময় ঘনিয়ে আসছে, তাড়াতাড়ি হাঁটতে হবে।
বাঘ জোরে দৌড়াতে শুরু করল আর হাতুম পেছনে পেছনে তাকে অনুসরণ করল। এর মধ্যে একটা পুকুর পেল। সেই পুকুরের চূড়ায় পানি দেখা যাচ্ছে। কিন্তু নিচে অনেক বড় জলাভূমি। ছোট হওয়ায় বাঘটি পুকুরের পাড়ে লাফ দিয়ে হাতুম কতদূর পৌঁছেছে তা দেখতে পেছন ফিরে তাকাল।
হাতুম ভারী শরীর নিয়ে পুকুরে যেতে শুরু করতেই জলাভূমিতে আটকে যেতে থাকে। বেরোতে না পারার কারণে সে বাঘকে ডাকল, আরে বন্ধু। আমাকে একটু সাহায্য করো। আমি এই জলাভূমি থেকে বের হতে পারব না।
চালাক বাঘ বলল, আরে বোকা হাতি! তুমি আমার মতো বাঘকে বিশ্বাস করেছ, কিন্তু এখন কষ্ট করো আর তোমার মৃত্যুঘণ্টা গুনতে থাক, আমি চলে গেলাম!
এই বলে বাঘ খুশি হয়ে ছুটে গেল তার সাথিদের এই সুসংবাদ দিতে।
বেচারা হাতুম, মনে মনে তার বাবার কথা মনে পড়ল। হাতুমের বাবা একদিন
বলেছিল, কাউকে একবারে বিশ্বাস না করাই ভালো। আজ অন্ধবিশ্বাস করে বিপদ ডেকে এনেছে নিজের। এখন উপায়?
চালাক বাঘটি সুসংবাদ দিতেই বনের মধ্যে আনন্দ উল্লাস করতে করতে ছুটে দৌড়াতে লাগল।
কিছু সময় পর ভানু বানর গাছে গাছে লাফিয়ে এসে যে সংবাদটি দিল, খবর শুনে সবারই চোখ কপালে ওঠার উপক্রম। হাতুম হাতি দলবলের সাহায্যে জলাভূমি থেকে রক্ষা পেয়েছে। আর দলবল নিয়ে এদিকেই আসছে, বাঘদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে।
একটু পরই বন কেঁপে উঠল। বনের সমস্ত প্রাণী ভয়ে নেতিয়ে গেল। মাটিতে ধপাস ধপাস শব্দ। ঝড়ের মতোন ভেঙে আসছে ওরা। বাঘগুলো দৌড়ের ওপর দৌড়…

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা