বেতিলা জমিদারবাড়ি
সাহিদা আক্তার
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৩ ১২:৫৫ পিএম
রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী হওয়ায় বেতিলা জমিদারবাড়ি দেখে দিনে দিনেই ফিরে আসা যায়
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলায় অবস্থিত বেতিলা জমিদারবাড়ি একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। সবুজে ঘেরা ছিমছাম গ্রাম বেতিলা। এই গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে বেতিলা খাল। এই খালই একসময় ছিল প্রবল খরস্রোতা।
নানা বজরা, মহাজনি নৌকা আসা-যাওয়া করত ধলেশ্বরী আর কালীগঙ্গার নদীপথে। এই ধলেশ্বরী আর কালীগঙ্গাকে সংযুক্ত করেছে বেতিলা খাল। এরই ফলে তৎকালীন সময়ের বড় বড় বণিকরা এই বেতিলা খালকে নিরাপদ পথ হিসেবে ব্যবহার করতেন।
বেতিলা জমিদার বাড়ির নির্মাণ এবং তৎকালীন ইতিহাসের ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রের সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, কলকাতার বণিক জ্যোতি বাবু ছিলেন বেতিলা জমিদারবাড়ির পূর্বপুরুষ। ধারণা করা যায়, এই এলাকার পাটের ব্যবসায়ের সুবিধার কারণে এ অঞ্চলে তার আগমন আর পাটের বণিক জ্যোতি বাবুর কলকাতার ব্যবসা আর বাড়ির এক্সটেনশন হচ্ছে এই বেতিলা জমিদারবাড়ি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে সবুজ গাছপালার সমারোহে ঘেরা নদীর উত্তর পাড়ে শোভা পাচ্ছে চুন, পাথর আর লোহার ইস্পাতে তৈরি নানা কারুখচিত পাশাপাশি দুটি ভবন। দোতলাবিশিষ্ট ভবন দুটির নিচতলায় কক্ষ রয়েছে আটটি করে ১৬টি। দ্বিতীয় তলায় সাতটি করে ১৪টি। দুটি ভবনে মোট কক্ষ রয়েছে ৩০টি। দুই তলাতে বিনোদনের জন্য রয়েছে খোলা জায়গা। বিশাল জায়গাজুড়ে এ বাড়িতে দুটি পুকুরে চারটি ঘাট রয়েছে। একটি চারচালা টিনের ঘর, খাবার পানির জন্য নলকূপ, একটি কুয়া এবং ভবনের পেছনে ছোট ছেলেমেয়েদের খেলার জন্য মিনি পার্ক। এখন সরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকলেও এর অবস্থা খুবই শোচনীয়। এখানে-ওখানে অযত্নের ছাপ। এখন পর্যন্ত এর স্থাপনা যথেষ্ট মজবুত হলেও অনাদর আর অবহেলা স্পষ্ট।
কীভাবে যাবেন?
রাজধানী ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে নীলাচল, পদ্মা লাইন, সেলফি প্রভৃতি পরিবহনের বাস মানিকগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বেতিলা বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার বিভিন্ন বাইক, বেবিট্যাক্সি ও বাস রয়েছে। বেতিলা বাসস্ট্যান্ড থেকে অটো বাইকে চড়ে বেতিলা বাজারের কাছে অবস্থিত বেতিলা জমিদারবাড়ি যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন?
রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী হওয়ায় বেতিলা জমিদারবাড়ি দেখে দিনে দিনেই ফিরে আসা যায়। এ ছাড়া আশপাশে থাকার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে মানিকগঞ্জ শহরে থাকার মতো বেশকিছু আবাসিক হোটেল পাবেন। খাবারের জন্য এখানে রয়েছে সাধারণ ও মাঝারি মানের বেশকিছু হোটেল ও রেস্টুরেন্ট। তবে সুযোগ পেলে অবশ্যই মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী গ্রামের বিখ্যাত নিজামের মিষ্টির স্বাদ নিতে ভুল করবেন না।