× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বাইক রাইডে মুস্তাং ভ্যালি

আসিফ খান সূর্য

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩ ১২:২৬ পিএম

বাইক রাইডে মুস্তাং ভ্যালি
বাইক রাইডে মুস্তাং ভ্যালি

বাইক নিয়ে বিদেশ ভ্রমণের ইচ্ছা আমাদের দেশের কমবেশি সব বাইকারেরই। আজ থাকছে আমার ১০ দিনের নেপাল ভ্রমণে বাইক রাইডের গল্প। যেখান থেকে পাঠক তথ্য নিয়ে তার পরবর্তী নেপাল বাইক ট্রিপের পরিকল্পনা সাজাতে পারবেন।

প্রথমত মাথায় রাখতে হবে মুস্তাং ভ্যালি যেতে হলে আপনার হিল রাইড আর অফরোড রাইডিংয়ের একটা ভালো অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। গ্রীষ্মে রাইড করতে পারেন কারণ আমি ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে মাইনাস  ১২ ডিগ্রি তাপমাত্রা আর স্নো ফল পেয়েছি; যার ফলে আমার জন্য রাস্তাটা আরও চ্যালেঞ্জিং ছিল। টিভিতে বা স্ক্রিনে স্নো ফল দেখতে যতটা আনন্দদায়ক বাস্তবে এর চেয়ে অনেক বেশি ভয়ানক। তাই এ ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকবেন।

এবার আসুন কী লাগবে আপনার ওইখানে যেতে জেনে নিই। প্রথমত পাসপোর্ট তো অবশ্যই আর সার্কভুক্ত দেশ হওয়ায় নেপালের ভিসা ফ্রি বাংলাদেশিদের জন্য। এয়ারপোর্টে নেমে ওদের মেশিনে সব তথ্য ইনপুট করলে একটি স্লিপ পাবেন। সে স্লিপ নিয়ে ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে সামনে এগিয়ে গেলেই ফ্রি ভিসা পেয়ে যাবেন।

সঙ্গে শীতের জন্য ভালো রাইডিং জ্যাকেট, ওয়াটারপ্রুফ জুতা ও গ্লাভস অবশ্যই নেবেন। সম্ভব হলে শুকনো খাবার কিছু সঙ্গে রাখুন। আর অবশ্যই ডলার নিয়ে যাবেন। বাংলা টাকা নিয়ে এক্সচেঞ্জ করলে রেট অনেক কম পাবেন।

প্রথম দিন : এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে ট্যাক্সি নেবেন। এয়ারপোর্টে মানি এক্সচেঞ্জ করবেন না বা কোনো হোটেলের এজেন্টের কাছে যাবেন না। ট্যাক্সি ভাড়া ৪০০-৫০০ নেপালি রুপি। ট্যাক্সি যাবে থামেল শহরে। সেখান থেকে ৩০ মিনিটের রাস্তা। থামেল পর্যটন এলাকায় নিজের মতো ঘুরে হোটেল খুঁজে নিতে পারেন।

দ্বিতীয় দিন : ঘুম থেকে সকালেই উঠুন। সেখানে অনেক মোটরবাইক রেন্ট পাবেন। তবে সবচেয়ে ক্লাসি বাইক পাবেন BS Motorbike-এ। বেছে দামের মধ্যে যা হয় এক সপ্তাহের জন্য ভাড়া নিন। সকাল ৮টার মধ্যে বাইক নিজের মতো করে চালিয়ে ঠিক ৯টায় সরকারি ট্যুরিজম অফিসে চলে যান। সেখানে আপনার ছবি ও পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে দুটি অনুমতি নিতে হবে মুস্তাং ভ্যালি (মুক্তিনাথ) যাওয়ার জন্য। দুটির জন্য  মোট ১ হাজার ৬০০ নেপালি রুপি লাগবে। এরপর রওনা দিন পোখারার উদ্দেশে। পোখারা পিচঢালা ভালো হিল রোড। মোট ২১০ কিলো রাস্তা। কাঠমান্ডু থেকে পোখারা যেতে ছয় ঘণ্টা লাগবে। পোখারা গিয়ে লেক সাইড চলে যান। সেখানে অনেক হোটেক পাবেন।

তৃতীয় দিন : আজ কিছুটা অফরোড রাইড করতে হবে। সকাল সকাল বের হয়ে যাত্রা করুন বেণির উদ্দেশে। কাঁচাপাকা দুই ধরনের রাস্তাই পাবেন বেণি যেতে। কিছুটা অফরোড রাইড করে এখানে হাত পাকিয়ে নিন, কারণ সামনে আপনার জন্য অনেক কিছু অপেক্ষা করছে। বেণি পৌঁছে দুপুরের লাঞ্চ করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন।

আপনার ট্যুরের জার্নি শুরু হবে আজ এখান থেকেই। বেণির পর আর কোনো রাস্তা নেই, সব দুর্গম অফরোড। আজ তাতোপানি যেতে হবে, যার দূরত্ব মাত্র ১৫ কিমির মতো। পৌঁছাতে লাগবে এক ঘণ্টার বেশি। এখান থেকেই শুরু পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক আর রোমাঞ্চকর রোডের মধ্যে একটি মুস্তাং ভ্যালি যাওয়ার রাস্তা। তাতোপানি গিয়ে প্রথম যে হোটেলটি পড়বে হাতের বাঁয়ে, সেটায় পার্কিং সুবিধা ভালো পাবেন তবে কক্ষ ছোট। শীত থাকলে এখানেই রাতে মাইনাস ৩-৪ তাপমাত্রা পাবেন।

চতুর্থ দিন : সকাল সকাল বেরিয়ে পড়ুন, কারণ আজ পাথরের দুর্গম পাহাড়ি রাস্তা, নদী, ঝিরিপথ সবকিছুর ওপর দিয়েই বাইক চালাতে হবে। আজ আপনার গন্তব্য হচ্ছে জমসম। এখানে কোনটা রাস্তা আর কোনটা রাস্তা নয়, তা বোঝার উপায় নেই। সিমে নেটওয়ার্ক থাকবে না তাই নেটেও কিছু তেমন করতে পারবেন না। ওই পথে চলা কোনো গাড়ি পেলে জিজ্ঞেস করুন জমসম কোন দিকে। ক্লান্ত হলে বিশ্রাম নিন। এ রাস্তায় এমনও হতে পারে যদি স্নো ফল হয় এক ঘণ্টায় আপনি ৪ কিলো যেতে পারবেন না। জমসম গিয়ে হোটেল নিন দুই দিনের জন্য, কারণ আজকের দিন আপনি থাকবেন আর কালকের দিন রাইড+বিশ্রাম করবেন।

পঞ্চম দিন : জমসম থেকে শুরু করুন। আজ আপনার গন্তব্য মুক্তিনাথ। ঘণ্টাখানেক চালানোর পর দেখবেন পাকা রাস্তা। এতদিন এরকম ভয়ানক পাথরের হিলে অফরোড করে, নদীতে চালিয়ে যাওয়ার পর যখন পিচের রাস্তা দেখবেন নিশ্চিত আবেগপ্রবণ হয়ে যাবেন আনন্দে। পিচঢালা রাস্তায় ছবি তুলে আর চালিয়ে ৩০-৪০ মিনিটে পৌঁছে যাবেন মুক্তিনাথ; যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩ হাজার ফুট ওপরে। ইতোমধ্যে আপনি জয় করে ফেলেছেন পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক রাস্তার মধ্যে একটি মুস্তাং ভ্যালিÑ মুক্তিনাথ। শীতকালে এখানে মাইনাস ১৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা পাবেন। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে গেলে মাইনাস ১০-১২ পেতে পারেন। চলে আসুন আবার জমসম। হোটেলে উঠে শরীরকে বিশ্রাম দিন।

ষষ্ঠ দিন : এবার ফেরার পালা। জমসম থেকে বেণি চলে আসুন এক দিনে। বেণিতে থেকে পোখারা চলে আসুন। তারপর সেখান থেকে কাঠমান্ডু। আনুমানিক ৮০০-৯০০ কিলো রাইড হবে ঘোরাঘুরি করে। কিন্তু এ রোডকে কিলো দিয়ে হিসাব করে ভুল করবেন না আশা করি।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা