× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কালো মানুষের আলো

হ্যাটি ম্যাকড্যানিয়েল: অস্কারজয়ী প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী

রাতুল মুন্সী

প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৩ ১৩:২৩ পিএম

হ্যাটি ম্যাকড্যানিয়েল

হ্যাটি ম্যাকড্যানিয়েল

আমেরিকান সমাজের বর্ণবাদের দেয়াল ভেঙে অনেকে সফল হয়েছেন। এমনই একজন হ্যাটি ম্যাকড্যানিয়েল। তিনি ছিলেন একাধারে অভিনেত্রী, গীতিকার ও কৌতুকাভিনেত্রী। অস্কারজয়ী প্রথম কৃষ্ণাঙ্গও ছিলেন তিনি...


আফ্রিকায় কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ওপর ইউরোপ থেকে আসা সাদা চামড়ার বৈষম্য যখন চরম শিখরে, তখন প্রথম সোচ্চার হতে দেখা যায় সেখানকার মানুষকে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের মানুষও বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন শুরু করে। এক্ষেত্রে মার্টিন লুথার কিং, ফ্রেডারিক উইলিয়াম দ্যা ক্লার্ক, মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা কিংবা ডেসমন্ড টুটুর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

আমেরিকায় বাস করা কৃষ্ণাঙ্গ নারী অভিনেত্রী, গীতিকার ও কৌতুক অভিনেত্রী যিনি অস্কার পাওয়ার পরেও মৃত্যুর পর হলিউডের মাটিতে সমাধির জন্য জায়গা পাননি, তিনি হলেন হ্যাটি ম্যাকড্যানিয়েল। যিনি তার ক্যারিয়ারজুড়ে বর্ণবাদ ও জাতিগত বিচ্ছিন্নতার সম্মুখীন হয়েছিলেন এবং আটলান্টায় ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’-এর প্রিমিয়ারে যোগ দিতে পারেননিÑ কারণ এটি শুধু শ্বেতাঙ্গদের জন্য অনুষ্ঠিত হয়েছিল। লস অ্যাঞ্জেলসে অস্কার অনুষ্ঠানে তিনি ঘরের পাশে একটি পৃথক টেবিলে বসে ছিলেন।

ম্যাকডানিয়েল ১৮৯৩ সালের ১০ জুন ডেনভারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার পিতামাতার ১৩ সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। তার মাতা সুজান হোলবার্ট একজন গসপেল সংগীতশিল্পী ছিলেন এবং পিতা হেনরি ম্যাকড্যানিয়েল ( ১৮৪৫-১৯২২) ১২২তম মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ সেনাদলের হয়ে গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯০০ সালে তার পরিবার কলোরাডোয় চলে যায়, সেখানে প্রথমে ফোর্ট কলিন্সে ও পরে ডেনবারে বসবাস শুরু করে।

তিনি প্রথম আফ্রো-মার্কিন; যিনি প্রথম ‘গন উইথ দ্য উইন্ড’-এ ম্যামি এর চমৎকার অভিনয়ের জন্য অস্কার জিতেছিলেন। হলিউড ওয়াক অব ফেমে তার দুটি তারকা রয়েছে। ১৯৭৫ সালে ব্ল্যাক ফিল্মমেকারস হল অব ফেমে তিনি অন্তর্ভুক্ত হন।


২০০৬ সালে তিনি প্রথম ব্ল্যাক অস্কার বিজয়ী হয়েছিলেন; যা একটি ইউএস ডাকটিকিট দিয়ে তাকে সম্মানিত করা হয়েছিল। ২০১০ সালে তিনি কলোরাডো মহিলা হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন। অভিনয়ের পাশাপাশি ম্যাকড্যানিয়েল ১৯২৬ থেকে ১৯২৯ সালের মধ্যে ১৬টি ব্লুজ সাইড রেকর্ড করেছিলেন এবং একজন রেডিও পারফরমার ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রেডিওতে গান করতেন।

তার অভিনীত সিনেমার সংখ্যা তিন শতাধিক। তিনি অন-স্ত্রিনে ক্রেডিট পেয়েছেন ৮৩টি সিনেমার জন্য । তার সবচেয়ে পরিচিত অন্যান্য চলচ্চিত্র হলোÑ অ্যালিস অ্যাডামস, ইন দিস আওয়ার লাইফ, সিনস ইউ ওয়েন্ট অ্যাওয়ে, সং অব দ্য সাইথ। সাংসারিক জীবনে চারবার বিয়ে করেছিলেন তিনি। প্রথম স্বামী ছিলেন হাওয়ার্ড হিকম্যান ( ১৯১১-১৫) এবং শেষ বিয়ে ও বিচ্ছেদ হয় ল্যারি উইলিয়ামসের সঙ্গে ১৯৫০ সালে। ১৯৪০-এর দশকের শেষের দিকে ম্যাকড্যানিয়েল পেশাগত ও ব্যক্তিগতভাবে দ্বন্দ্বে পড়েছিলেন। ৫১ বছর বয়সে মিথ্যা গর্ভাবস্তার অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন এবং ব্যর্থ দুটি বিয়ে করেছিলেন। তার সেরা বন্ধু গুডউইনের মতে, যখন সে ভেবেছিল তার জাতি শৈল্পিকতার প্রশংসা করে না, একাকিত্ব ও মোহভঙ্গের তিক্ত বছর ছিল সেই বছর। তার অভিনয় মূলত শেতাঙ্গ দর্শকদের কাছে হিট করেছিল। ১৯৪৭ সালে তিনি হিট সিবিএস রেডিও শো বেউলাহ (মূলত একজন শ্বেতাঙ্গ দ্বারা অভিনয় করেছিলেন) এর প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন।

১৯৫০ সালের আগস্টে হ্যাটি ম্যাকড্যানিয়েল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। বাড়িতে সুস্থ হওয়ার জন্য তাকে অক্টোবরে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। রিপোর্ট করা হয়েছিল সামান্য স্ট্রোক। পরে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার উডল্যান্ড হিলসের মোশন পিকচার হাউসের হাসপাতালে ২৬ অক্টোবর ১৯৫২ সালে স্তন ক্যানসারে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুর পর সমাহিত হওয়ার জন্য তার প্রথম পছন্দ ছিল হলিউডের কবরস্থান। হলিউডের কবরস্থানে কৃষ্ণাঙ্গদের কবর দেওয়ার রীতি না থাকায় তার পছন্দের দ্বিতীয় জায়গা রোজেডেল কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

ম্যাকড্যানিয়েল শৈল্পিকতা, প্যাথোস ও অধ্যবসায়ের একটি উল্লেখযোগ্য, জটিল উত্তরাধিকার রেখে গেছেন। একটি কবিতায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘যন্ত্রণা ও শাস্তির ওপর প্রশিক্ষিত/ আমি সারা রাত ধরে আমার পথ চলেছি/তবে পতাকাটি এখনও আমার তাঁবু থেকে উড়ছে/ এবং আমি কেবল লড়াই শুরু করেছি।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা