নাকিব নিজাম
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৩ ১১:২০ এএম
ফরাসি রসায়নবিদ ড. মুঙ্গি বাওয়েন্ডি
রসায়নে এবার যে তিনজন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তার মধ্যে একজন হচ্ছেন MIT-এর প্রফেসর ফরাসি রসায়নবিদ ড. মুঙ্গি গ. বাওয়েন্ডি। যে বাওয়েন্ডি রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেলেন সে বাওয়েন্ডিই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে প্রথম পরীক্ষায় রসায়নে ফেল করেছিলেন।
এতে কিন্তু তার জীবন রসাতলে যায়নি। বরং তিনি সেটা অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলেন যে কেমিস্ট্রিতে ফেল করেও আজ তিনি কেমিস্ট্রির বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী। যৌথভাবে রসায়নে নোবেল পাওয়া ম্যাসাচুসেটসের অধ্যাপক মুঙ্গি গ. বাওয়েন্ডি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় রসায়নের প্রথম পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। এই নিয়ে মানসিকভাবে অস্বস্তিতে থাকতেন তিনি। তবে তিনি ভেঙে পড়েননি। ব্যর্থতাকে পাস কাটিয়ে হয়েছেন সফল। এখন ৬২ বছর বয়সি মুঙ্গি গ. বাওয়েন্ডির হাতে উঠল নোবেল।
বাওয়েন্ডি ওই পরীক্ষার ফলাফলের পর বিজ্ঞানে দক্ষতা অর্জন করেন। এরপরই ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে পড়তে যান। এ সময় তিনি বেশ কঠিন সময় পার করেন। বাওয়েন্ডি বলেন, ‘পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করতে অভ্যস্ত ছিলেন না তিনি। পরীক্ষা হলের বিশাল আকার এবং পরীক্ষা পরিদর্শকে কঠোর উপস্থিতিতে তিনি ভয় পেয়েছিলেন। আমি প্রশ্নপত্রের প্রথম প্রশ্নটি দেখেছিলাম। কিছু বুঝতে পারিনি। এর উত্তর করতে পারিনি। এরপর দ্বিতীয় প্রশ্নটির উত্তরও বের করতে পারিনি।’ শেষ পর্যন্ত তিনি ১০০–এর মধ্যে ২০ নম্বর পেয়েছিলেন। এটি পুরো ক্লাসের মধ্যে সবচেয়ে কম নম্বর। তখন মুঙ্গি বাওয়েন্ডির মনে হয়েছিল, এখানেই শেষ। বাওয়েন্ডি রসায়ন পছন্দ করতেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কৌশলটি শেখেননি বলেই পরীক্ষার ফল ভালো করতে পারেননি। বাওয়েন্ডি পরে শিখেছিলেন কীভাবে পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তরগুলো লিখতে হয়।
তিনি বলেন, ‘কীভাবে পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করতে হয়, তা বের করেছিলাম, যা আমি আগে জানতাম না।’ তিনি বলেন, ‘এরপরের অনেক পরীক্ষায় আমি ১০০-তে ১০০ পেয়েছিলাম।’ তরুণদের উদ্দেশে এ নোবেলজয়ী বলেন, ‘অধ্যবসায়ী হও এবং বাধা-বিপত্তিগুলো এলে হতাশ হয়ো না, সচেতন থাকবে তোমাদের যেন কোনো কিছু ধ্বংস করতে না পারে। এফ (ফেল করা) শব্দটির সঙ্গে আমার প্রথম অভিজ্ঞতা আমাকে সহজেই ধ্বংস করে দিতে পারত। ওটি এখন পর্যন্ত ছিল আমার সর্বনিম্ন গ্রেড।’
মুঙ্গি গ. বাওয়েন্ডি ১৯৬১ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) অধ্যাপনা করছেন। সুতরাং পরীক্ষায় ফেল করা বা জিপিএ-৫ না-পাওয়া মানেই ব্যর্থতা নয়। অনার্সে সিজিপিএ ৩.৫-এর নিচে থাকলেই সে কম মেধাবী নয়। মনে রাখতে হবেÑ চেষ্টা, মনোবল, অধ্যবসায়, একাগ্রতা এবং লক্ষ্য স্থির থাকলে সফলতা আসবেই।