× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ওপারে মোহনবাগান এপারে বসুন্ধরা কিংস

ইকরামউজ্জমান

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১১:১২ এএম

আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৪৬ পিএম

বসুন্ধরা কিংস ফুটবল টিম

বসুন্ধরা কিংস ফুটবল টিম

‘সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল।’ কোটি বাঙালির চিরকালের ভালোবাসা আর আবেগের নাম। নানা উপলক্ষ ঘিরে বাঙালির ফুটবলপ্রেম পুনর্জন্ম নিয়ে কেবলই যেন ফিরে ফিরে আসে। তেমন এক উদযাপনের ডালা সাজিয়ে এখন অপেক্ষা করছে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা। যেখানে দেশের ফুটবল জায়ান্ট বসুন্ধরা কিংস আর কলকাতার মোহনবাগান মুখোমুখি হচ্ছে ৭ নভেম্বর। উপলক্ষ এএফসি কাপ

মোহনবাগান ফুটবল টিম

দক্ষিণ এশিয়ার ২০০ কোটি মানুষের ফুটবল শ্রেষ্ঠতার প্রশ্নে ভারতের মোহনবাগান এবং বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংস এ দুটি ক্লাব এখন সচেতন মহলের আলোচনায় আছে। স্ব স্ব দেশের পেশাদারি ঘরোয়া ফুটবলে দুটি ক্লাবের ভূমিকা অনন্য এবং অসাধারণ। তাদের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ টার্গেট গ্রুপের কাছে শুধু পরিপক্ব নয়, পূর্ণতাময়ও। দুনিয়াজুড়ে দেশে দেশে ফুটবল সংস্কৃতিতে প্রধান অভিভাবক হলো ক্লাব। ১৮৫৭ সালে ইংল্যান্ডে ‘শেফিল্ড’ নামে প্রথম ফুটবল ক্লাব গঠিত হয়। ফুটবলের লালনপালন, খেলোয়াড় সৃষ্টি, নতুন প্রতিভার বিকাশ, খেলা সব মহলে জনপ্রিয় করে তোলার পেছনে ক্লাবের ভূমিকা সব সময় স্মরণীয়। দেশে দেশে ঘরোয়া ফুটবলে রেষারেষি সৃষ্টি করে ক্লাবগুলো খেলার আকর্ষণ বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে।

শুধু তাই নয়, মহাদেশীয় পর্যায়ে ক্লাবগুলোর মধ্যে চ্যাম্পিয়নশিপ ও টুর্নামেন্ট সামগ্রিকভাবে বিশ্ব ফুটবলে মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। ১৮৬৬ সালে নটিংহাম এবং শেফিল্ড ক্লাবের মধ্যে প্রথম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, ইতিহাস সেটি তার বুকে ধরে রেখেছে। মাঠে ফুটবলের রথ গড়িয়ে চলেছে দেশে দেশে। ঐতিহ্যবাহী মোহনবাগান, মহাদেশের ফুটবলের অনেক ঐতিহাসিক সাফল্যের জন্মদাতা। ভালোবাসা এবং আবেগে মোড়ানো আশ্চর্য ও স্পর্শকাতর একটি নাম। কলকাতার ফুটবলে সেরা তিন বড় ক্লাবের মধ্যে (মোহনবাগান, মোহামেডান ও ইস্টবেঙ্গল) সবার আগে মাঠে এসেছে মোহনবাগান। সবুজ-মেরুন জার্সির দল। উত্তর কলকাতার ধনী ব্যবসায়ী কীর্তিমিত্রের ‘মোহনভিলা’ নামের বাগানবাড়িতে ক্লাবের জন্ম ১৫ আগস্ট ১৮৮৯ সালে। এখন থেকে ১৩৪ বছর আগে। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, আইনজীবী এবং খ্যাতিমান ব্যবসায়ী এ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মোহনবাগানের অনেক রীতিনীতি ও মূল্যবোধ পাল্টে গেছে।

প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে ১৯১১ সালে আইএফএ শিল্ড জিতেছে মোহনবাগান। দলের ১১ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে আটজন ছিলেন আমাদের পূর্ব বাংলার সন্তান। স্থানীয় দল হিসেবে ১৯১৫ সালে মোহনবাগান প্রথম কলকাতার ‘ফার্স্ট ডিভিশন ফুটবল লিগে’ খেলার সুযোগ পেয়েছে। শুরুর প্রথম দিকে ক্লাবের প্রতীক ছিল সুন্দরবনের বাঘ। পরে একটি সময় থেকে পালতোলা নৌকা। পরাধীন ভারতবর্ষে লম্বা একটি চিহ্নিত সময়ে মোহনবাগান ও মোহামেডান (ক্লাবের জন্ম ১৮৯১) এ দুটি জনপ্রিয় ক্লাবের মাঠের ফুটবল হয়ে উঠেছিল স্বাধীনতার প্রতীক। যেটি ইতিহাসে লাল হরফে লেখা আছে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কলকাতা মোহনবাগান প্রথম বিদেশি ক্লাব হিসেবে ১৯৭২ সালের ১৩ মে ঢাকা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ একাদশের বিপক্ষে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেছে। এ খেলায় বাংলাদেশ ১-০ গোলে জয় লাভ করে। গোল করেন কাজী সালাউদ্দিন। বাংলাদেশ একাদশের অধিনায়ক ছিলেন মো. জাকারিয়া পিন্টু।

এবার ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর এএফসি কাপে বাংলাদেশের ফুটবল জায়েন্ট বসুন্ধরা কিংস মুখোমুখি হবে মোহনবাগানের। খেলা হবে কিংসের নিজস্ব আধুনিক অ্যারেনায়। মোহনবাগানের জন্য এটি ‘অ্যাওয়ে’ ম্যাচ। আর কিংসের জন্য হোম ম্যাচ। আন্তর্জাতিক ক্লাব ম্যাচ তাতে কী, এ ম্যাচের খেলার ফলাফলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেশের ফুটবলের সুনাম ও ভাবমূর্তি। মানুষ মুখিয়ে আছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি ভালো ম্যাচ উপভোগের জন্য। ২৪ অক্টোবর ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে মোহনবাগান ‘হোম ম্যাচ’ খেলেছে কিংসের বিপক্ষে। খেলা ২-২ গোলে ড্র হয়েছে। বসুন্ধরার জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ ‘হোম ভ্যানুতে’ লড়াই করে ভারতের ফুটবলের ‘পাওয়ার হাউসকে’ পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া। কিংসের যদি তাদের নিজস্ব অ্যারেনায় মোহনবাগানকে ফুটবলের লড়াইয়ে হারাতে পারে তাহলে গ্রুপসেরা হওয়ার স্বপ্ন বেঁচে থাকবে। কারণ হলো সামর্থ্য অনুযায়ী অন্য প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দলগতভাবে পরিকল্পনামাফিক খেলতে পারলে জয়ের রথ টেনে নিয়ে যাওয়া খুবই সম্ভব! অন্যদিকে ভারতের ক্লাব ফুটবলে সেরা মোহনবাগান চাইবে বাংলাদেশের অপ্রতিদ্বন্দ্বী দল, গত চার মৌসুম ধরে একনাগাড়ে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরার বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করে তৃতীয়বারের গ্রুপ সেরা হওয়ার সম্মানে গর্বিত হতে।

বসুন্ধরা কিংস এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্লাব ম্যাচে মোহনবাগানের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পায়নি। ২০২১ সালে মালদ্বীপের মালেতে এএফসি কাপে বসুন্ধরা কিংস ১-১ গোলে ড্র করেছে। এরপর ২০২২ সালে কলকাতার সল্টলেকে ৪-০ গোলে পরাজিত হয়েছে। সর্বশেষ ২৪ অক্টোবর (২০২৩) ভুবনেশ্বরে অ্যাওয়ে ম্যাচে কিংস ড্র করেছে ২-২ গোলে। এদিকে বাংলাদেশের আবাহনী লিমিটেড গত আগস্টে কলকাতায় মোহনবাগানের বিপক্ষে ১-৩ গোলে হেরে এএফসি কাপ থেকে আবারও সামর্থ্যের মৃত্যু ঘটিয়ে বিদায় নিয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় বসুন্ধরা কিংস একমাত্র ফুটবল ক্লাব যাদের নিজস্ব আধুনিক ফুটবল অ্যারেনা আছে। এ অ্যারেনায় কিংস আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবল ম্যাচ ছাড়াও নিয়মিতভাবে প্রিমিয়ার লিগ ও অন্যান্য টুর্নামেন্টের হোম ম্যাচগুলো খেলে। অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের বড় ক্লাবগুলো অন্যের ভেন্যুকে নিজের ভেন্যু বানিয়ে খেলে থাকে।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ নতুন দেশে ফুটবল চত্বরে আবাহনী ক্রীড়া চক্রের আগমন ছিল আশীর্বাদ। ক্লাবটি দেশের ফুটবলের চেহারা পাল্টে দিয়েছে অল্প সময়ের মধ্যে। সনাতনী ফুটবল চত্বরকে দিয়েছে আধুনিক ফুটবলের স্বাদ। আবাহনী প্রথম থেকেই প্রাধান্য বিস্তার করে সেরা হিসেবে ফুটবল খেলেছে। আবাহনীর মাঠে আগমনের সাড়ে চার দশকের কিছু পরে নির্দিষ্ট লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং কমিটমেন্টের মাধ্যমে ফুটবলে এসেছে বসুন্ধরা কিংস। দেশের বৃহৎ করপোরেট গ্রুপ বসুন্ধরার পৃষ্ঠপোষকতার ক্লাব। বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলে আগমন সময়ের প্রয়োজন এবং দাবিতে। ক্লাবটির প্রথম থেকেই লক্ষ্য ছিল ভালো ফুটবল খেলা। মাঠে দর্শক ফিরিয়ে আনার জন্য ধারাবাহিকতার সঙ্গে আকর্ষণীয় ফুটবল উপহার দেওয়া।

মাঠে কিংসের খেলা এবং দেশের ফুটবলে ক্লাবের ভূমিকা প্রথম থেকেই বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষ আগ্রহের সঙ্গে লক্ষ করেছে। আবাহনীর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে কিংস ফুটবল চত্বরে সঠিক ভূমিকা পালনের পেছনে আছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ও টিম ম্যানেজমেন্টের পেশাদারি মনোভাব, খেলার প্রতি ভালোবাসা, আন্তরিকতা, শৃঙ্খলা, দূরদৃষ্টিতা এবং নতুন সংস্কৃতির বাস্তবায়ন। কিংস থেকে দেশের অন্য ক্লাবগুলোর যেটি অনুকরণীয় তা হলো পেশাদার মানসিকতা এবং ক্লাব ম্যানেজমেন্টে জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা।

স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে পাইওনিয়ার হিসেবে প্রথম ‘করপোরেট কালচার’ ও পেশাদার মোড়কে মোড়ানো ফুটবল দল বসুন্ধরা কিংস। দলটির মাঠে আত্মপ্রকাশের পেছনে আছেন বৃহৎ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ক্রীড়া-অন্তঃপ্রাণ চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, যিনি একসময় খেলাধুলা করতেন, এখনও প্রতিদিন খেলাধুলার সব খবর রাখেন; এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর যিনি শেখ রাসেল ক্লাবের চেয়ারম্যান এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের খেলার প্রতি উৎসাহ, আগ্রহ ও ভালোবাসা। বাবা থেকে শুরু করে সন্তানরা সবাই স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাটি ঘিরে আছে তাদের নির্দিষ্ট ভিশন। বসুন্ধরা পরিবারের সব সদস্যের রক্তে মিশে আছে খেলাধুলা।

১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির কাছে চিরস্মরণীয় ও অম্লান। আনন্দ ও আবেগে মাখা বিজয় দিবস। জাতির জীবনে এক অনন্য গৌরবোজ্জ্বল দিন। ফুটবলপ্রেমী ইমরুল হাসান (বর্তমানে বসুন্ধরা কিংসের প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট) এবং তার কয়েকজন ফুটবল অনুরাগী সহকর্মী বন্ধু মিলে বসুন্ধরা কিংস প্রতিষ্ঠা করেনÑ দিনটি ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস বাঙালির ফুটবলে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য বসুন্ধরা কিংসের জন্ম। বসুন্ধরা কিংসের ব্র্যান্ডিংয়ে ’১৬’ প্রতীক। ২০১৬ সালে পাইওনিয়ার লিগে বসুন্ধরা কিংসের যাত্রা। খেলতে নেমেই চ্যাম্পিয়ন।

ভালো বিদেশি ও দেশি খেলোয়াড়দের নিয়ে যদি দল গঠন করা সম্ভব হয় তাহলে দর্শক করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্লাবের খেলা মাঠে দেখতে আসবে, এতে মাঠে প্রাণ ফিরে পাবেÑ ইমরুল হাসানের আত্মবিশ্বাসী এ বক্তব্যে আস্থা রেখেই গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের ‘সবুজ সংকেতের’ মাধ্যমেই বসুন্ধরা কিংস বড় মাঠে দাপটের সঙ্গে যাত্রা করে। প্রিমিয়ার ফুটবলে পর পর চার মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঢাকার ফুটবলে ৭৫ বছরে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি। ২০১৮ সালে খেলতে নেমে আটটি ট্রফি জয়, যা ঘরোয়া ফুটবলে অন্য কোনো ক্লাবের পক্ষে সম্ভব হয়নি।

বসুন্ধরা কিংসের স্লোগান হলো, BORN TO BEAT অর্থাৎ জন্ম জয়ের জন্য। আর এ জয় শুধু মাঠের লড়াইয়ে নয়, ফুটবলের উন্নয়নে সব প্রতিবন্ধকতার বিপক্ষেও। কিংস পরাজয় মানতে রাজি নয়। কিংসের ফুটবল মানে ভালো ফুটবল এবং সময়ের চাহিদা পূরণের জয়। ফুটবলে নতুন সংস্কৃতির জয়। ফুটবল চত্বরে সংস্কার সাধনের জয়। বসুন্ধরা কিংস ফুটবলের জয় উপভোগ করতে চায় সব অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে। স্বপ্ন একা দেখে না, স্বপ্ন দেখে সমষ্টিগতভাবে অংশীদারদের নিয়ে।

লেখক : কলামিস্ট ও বিশ্লেষক। সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি, এআইপিএস এশিয়া। আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতি)

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা