× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হালুম ও প্লাস্টিক

বিশ্বজিৎ দাস

প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:২৭ পিএম

আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:৫৪ পিএম

অংলকরণ: জয়ন্ত সরকার

অংলকরণ: জয়ন্ত সরকার

হালুমের সকাল সকাল ঘুম ভেঙেছে। আজ স্কুল বন্ধ। মা ঘরে নেই। খাবার জোগাড় করতে গেছে। বসে বসে কী করবে বুঝতে পারছে না হালুম। মন খারাপ হয়ে গেল। স্কুলে গেলে মন খুলে কথা বলার জন্য কেউ না কেউ থাকেই।

‘হালুম, কী করছ?’ কিচকিচ করে জানতে চাইল মংকু। বানরদের মধ্যে ওর সঙ্গে বেশি খাতির হালুমের।

বলল, ‘বসে বসে ঝিমাচ্ছি।’

মংকু প্রস্তাব দিল ‘চলো, দুজনে মিলে লুকোচুরি খেলি।’

‘শুধু আমরা দুজন!’ হতাশ হয়ে বলল হালুম।

‘খরগুকে সঙ্গে নেব।’ ওদের আরেক খেলার সাথি খরগোশ।

অনিচ্ছাসত্ত্বেও গুহা থেকে বের হলো হালুম। রোজ রোজ লুকোচুরি খেলতে ভালো লাগে না।

লটারি করল ওরা। খরগোশ নির্বাচিত হলো। ওরা লুকোবে। খরগু ওদের খুঁজে বের করবে। পালাক্রমে খেলতে লাগল।

‘আর পারছি না। পানি খাব।’ ক্লান্ত হয়ে বলল হালুম।

সবাই মিলে খালের পাড়ে চলল।

তিনজনেরই পিপাসা পেয়েছে। পানিতে মুখ ডুবিয়ে দিল।

একটু পর হালুমের মুখ থেকে গোঙানি বেরিয়ে এলো।

মংকু দেখল, হালুমের মুখে কী যেন আটকে গেছে। খরগু আর মংকু দুজনে মিলে সেটা ধরে টানতে লাগল।

একটু পরই হালুমের গলা থেকে বেরিয়ে এলো সেটা।

একটা প্লাস্টিকের প্যাকেট।

‘এটা কী?’ জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বলল হালুম। ভীষণ রেগে গেছে।

‘এটা হলো প্লাস্টিকের প্যাকেট। মাটিতে পচে না।’

‘এটা কোত্থেকে এলো। কে এনেছে এটা বনে জঙ্গলে?’ হুংকার দিয়ে বলল সে।

‘কে আবার! মানুষ এনেছে। ওরা প্রতি বছর সুন্দরবন দেখতে আসে। সঙ্গে নিয়ে আসে প্যাকেট ভর্তি খাবার। খাবার খেয়ে যায়। ফেলে যায় প্যাকেট। এগুলো মাটিতে গলে না। পচেও না।’ এক নিঃশ্বাসে বলল মংকু।

‘ওগুলো আমি খেতে পারি না। খুব শক্ত।’ খরগু বলল।

‘চললাম আমি।’ হালুম বলল।

‘কোথায় চললে?’

‘মানুষের সঙ্গে দেখা করতে। আজ ওদের একদিন কি আমার একদিন।’

রওনা হলো হালুম। সুজন আর শমী সুন্দরবন দেখতে এসেছে। এইমাত্র ওরা বাবা-মায়ের সঙ্গে লঞ্চ থেকে নেমেছে। হাতে চিপসের প্যাকেট। সবাই মিলে এগিয়ে চলেছে জঙ্গলের মাঝ দিয়ে। কাঠের পুল ধরে।

‘দ্যাখ দ্যাখ, কী সুন্দর প্রজাপতি!’ সুজন চেঁচিয়ে বলল।

‘আমাকে একটা ধরে দিবি ভাইয়া।’ শমী আবদার ধরল।

‘আয় দুজনে মিলে ধরি।’

রাস্তা থেকে নিচে নেমে এলো ওরা।

চিপস খাওয়া শেষ। ফেলে দিল ওরা প্যাকেট দুটো।

‘ওগুলো এখানে ফেললে কেন? তোমরা কি জানো ওগুলো আমাদের জঙ্গলের কত ক্ষতি করছে?’ কে যেন মানুষের গলায় বলে উঠল। সুজন আর শমী চমকে গেল। ওদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে হালুম। ভয় পেল ওরা। চিৎকার করতে গিয়ে টের পেল গলা শুকিয়ে গেছে।

‘ভয় পেয়ো না।’ হালুম আবার বলল।

ওপর-নিচে মাথা নাড়ল ওরা।

‘তোমরা জঙ্গলে বেড়াতে এসেছ ভালো কথা। তোমরা আমাদের মেহমান। এভাবে যদি জঙ্গলের ক্ষতি করো, তাহলে কীভাবে চলবে?’

‘আমরা আবার কী করলাম তোমাদের?’ ধীরে বলল সুজন।

‘প্লাস্টিক আমাদের পরিবেশের অনেক ক্ষতি করে। এগুলো মাটিতে গলে না, পচে না। তোমরা যদি এভাবে দিনের পর দিন জঙ্গলের মধ্যে প্লাস্টিকের প্যাকেট ফেলে যাও, তাহলে গাছপালা ঠিকভাবে জন্মাবে না। আমরা ঠিকমতো পানি খেতে পারব না।’

চলে গেল হালুম।

‘সুজন-শমী কইরে তোরা?’ মায়ের ডাক শুনে সম্বিৎ ফিরে পেল ওরা।

প্লাস্টিকের প্যাকেট দুটো কুড়িয়ে নিল সুজন।

সত্যিই তো জঙ্গলের ক্ষতি করা ঠিক না।

হালুম ওদের চলে যাওয়া দেখল।

ভাবল, এবার থেকে পানি খাওয়ার সময় সাবধানে খেতে হবে। আরেকটু হলেই আজ মরতে বসেছিল ও। সবাইকে জানিয়ে দিতে হবে প্লাস্টিক খুব ভয়ংকর।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা