কী কেন কিভাবে
টি এইচ মাহির
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৫৫ পিএম
আমাদের জীবন সহজ করেছে নানান উদ্ভাবন, যেমন লিফট। উঁচু উঁচু বিল্ডিংয়ের এক তলা থেকে অন্য তলায় সহজেই যাওয়া যায় লিফটের সাহায্যে। সিঁড়ির তুলনায় দ্রুত যাতায়াতে এই ধারণা তৈরি হয়েছিল ৩৩৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। প্রাচীন এলিভেটরগুলো মানুষ পরিবহনে ব্যবহৃত হতো না। মালামাল উঠানো এবং উঁচু কাঠামো তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আধুনিক যুগে লিফট বিল্ডিংয়ে মানুষের ওঠানামার কাজে ব্যবহার করা হয়। একাধিক নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ ছোট কেবিনে উঁচু উঁচু বিল্ডিংয়ে সহজেই ওঠা যায়। আধুনিক যুগের লিফটগুলো যাতে ছুটে না যায় সেই ব্যবস্থা করেছিলেন এলিশা ওটিস নামে এক মার্কিন শিল্পপতি। তিনি ১৮৫০-এর দশকে লিফটের সেফটি ব্রেক আবিষ্কার করেন। আগেকার লিফটগুলোয় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত। এলিশা ওটিস এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন যা এ দুর্ঘটনা থেকে অনেকাংশে প্রতিকার দিতে পারে।
এ নিরাপত্তাব্যবস্থা চালুর পরও মানুষের মনে আতঙ্কের শেষ নেই। ক্লস্ট্রোফোবিয়া নামে এক ধরনের ভীতি থাকে কিছু মানুষের মনে। ক্লস্ট্রোফোবিয়া হলো সীমাবদ্ধ স্থানের অযৌক্তিক ভয়। ক্লাস্ট্রোফোবিয়ায় আক্রান্তরা প্রায়ই সীমিত স্থান যেমন লিফট, টানেল, টিউব ট্রেন ও পাবলিক টয়লেট এড়িয়ে চলতে চায়। কিন্তু এ জায়গাগুলো এড়িয়ে যাওয়া ভয়কে আরও শক্তিশালী করতে পারে। ক্লস্ট্রোফোবিয়ায় আক্রান্ত কিছু লোক সীমিত স্থানে থাকার সময় হালকা উদ্বেগ অনুভব করে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক বেশি উদ্বেগও অনুভব করে। তাই এ উদ্বেগ কমাতে লিফটের চারপাশ স্বচ্ছ রাখা হয়, যা আয়নার মতো কাজ করে। আগেকার লিফটগুলো বেশ ধীরগতির ছিল। লোকেদের অনেক সময় ধরে লিফটে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। আবার লিফটে উচ্চতাভীতিও কাজ করত। তাই লিফটে আয়না দেওয়া হয়, যাতে কিছু সময় লোকদের মনোযোগ আয়নায় নিজেদের দেখার মাধ্যমে কাটে। আবার ক্লস্ট্রোফোবিয়ার রোগীদের যাতে লিফটে ছোট স্থানের ভয় না করে, দর্পণের কারণে তা অনেকাংশে কাটিয়ে ওঠা যায়। লিফটের আয়না আবার নিরাপত্তা হিসেবেও কাজ করে। ছোট লিফটে যখন অনেক লোক একসঙ্গে ওঠে তখন অন্যদের অবস্থা সম্পর্কে সতর্ক থাকা যায়। যেমন চুরি হওয়া ঠেকাতে কাজ করে। হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীরা লিফটে জ্যাম পর্যবেক্ষণ করে হুইলচেয়ার নড়াচড়া করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে লিফটের স্বচ্ছ দর্পণ নিজের পোশাক ও চুল যাচাই করার ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়ায়।