শনিবারের হাসি
আবদুর রব শরীফ
প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৪৪ পিএম
আমাদের বন্ধু মফিজ। তাকে আলাদা করে চেনা যেত তার দাঁতে কালো দাগের কারণে। এ দাগ দূর করতে বেচারা কত কিছুই না করেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিচ্ছু হয়নি।
তার কালেকশনে ছিল বাজারের সব ধরনের টুথপেস্ট। সেসব ট্রাই করেও কাজ হয়নি!
ক্লোজআপ, পেপসোডেন্ট, কোলগেট, হোয়াইটপ্লাস থেকে শুরু করে সেনসোডাইন- সব ব্র্যান্ডের পেস্ট ব্যবহার করেছে। কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়েছি কি না কেউ বলতে পারবে না।
আমরা একসঙ্গে একই মেসে থাকতাম। প্রায় প্রতিদিন সকালে বা রাতে দাঁত ব্রাশ করে এসে বলত, -ইইই! দেখত দোস্ত, কেমন দেখাচ্ছে দাঁত- ইইই!
প্রতিবারই তাকে হতাশ করতে হতো। কখনও ডানে-বাঁয়ে মাথা নেড়ে, কখনও শুকনো হাসি দিয়ে, কখনওবা মুখে কোনো কথা না বলে।
কয়লা থেকে কালো মাজন, কোনো কিছুই ব্যবহার করে ফল পাচ্ছিল না মফিজ।
একদিন লোডশেডিংয়ের রাতে সে দাঁত মেজে এসে চিরাচরিত প্রশ্ন করল,
-দেখত দোস্ত, আমার দাঁত কেমন পরিষ্কার হয়েছে?
একসঙ্গে বসে আড্ডা দিতে থাকা আমরা সবাই সমস্বরে বলে উঠলাম,
-আরে, কি চমৎকার! কি চমৎকার!!
একজন প্রশ্ন করল,
-কী ব্যাপার বন্ধু, আজকে দেখি তোর দাঁত ঝিলিক দিচ্ছে। কোনো দাগ নেই। কোন ব্র্যান্ডের পেস্ট ব্যবহার শুরু করলি?
যুদ্ধজয়ের হাসি দিয়ে মফিজও একটু কলার নেড়ে ভাব নিয়ে বলল,
-একবার দাগ না গেলে ব্র্যান্ড চেঞ্জ করো শতবার। টপ সিক্রেট মামা, টপ সিক্রেট! নাম তো বলা যাবে না!
আমাদেরই এক মেস মেম্বার কদম আলী একটু জোরের সঙ্গে ইনিয়েবিনিয়ে বলতে থাকল,
-নামটা একটু বলো না প্লিজ ভাই!
কদম আলীর কথায় মফিজ একটু ভাবল। কিন্তু ঠিকঠাক বলতে পারল না কোন ব্র্যান্ডের পেস্ট ছিল সেটা। কারণ তখন তো বিদ্যুৎ ছিল না, লোডশেডিং চলছিল।
‘একটু আসতেছি’, বলে মফিজ বাথরুমে গেল!
তারপর টুথপেস্টের টিউবটি হাতে নিয়ে পড়ার চেষ্টা করল, কী সেই পেস্ট!
হাতে নিয়ে দেখল, সেখানে লেখা ‘ফেয়ার এন্ড লাভলী’!