শাদমান শাবাব
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪ ১৪:৫৮ পিএম
বন্ধুদের সাথে দেখা করতে এক হয়েছিলেন শাবিপ্রবি অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
‘ব্যস্ততা থেকে ধার দিলে/দেখা হবে, বন্ধু/ভীষণ খেয়ালী মনের আতিথেয়তায়’— গানের এই কথামালার মতোই ব্যস্ততা থেকে সময় ধার নিয়ে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে এক হয়েছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের একত্র করতে শাবিপ্রবির অর্থনীতি বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ২য় বারের মতো আয়োজন করা হয় পুনর্মিলনীর। এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ব্যাচ থেকে শুরু করে ৩৩ তম ব্যাচ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা।
নবীন–প্রবীণের মিলনমেলার এই আয়োজনে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস মেতে ওঠে আনন্দ উৎসবে৷ এসময় গল্প-আড্ডায় মুখরিত ছিল ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রান্তর৷ পুরনো বন্ধুদের দেখা পেয়ে কেউ কেউ স্মরণ করছিলেন ফেলে আসা দিনের কথা, আবার কেউবা পুরো ক্যাম্পাস একপলক ঘুরে দেখে আড্ডা জমালেন–রেখে যাওয়া ক্যাম্পাস কতখানি বদলেছে সে নিয়ে। কেউ কেউ আবার গল্প-আড্ডা থেকে খানিকটা বিরতি নিয়ে ঢু মারলেন স্মৃতিবিজড়িত আবাসিক হলে। আবার কেউবা হাস্যরসে মাতলেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধুর পরিবর্তন দেখে। আনন্দ উৎসবের এ আয়োজনে সাবেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সামিল হয়েছিলেন তাদের স্ত্রী-সন্তানরাও।
দুই দিনের এই মিলনমেলাকে ঘিরে চলে নানা আয়োজন। এ উপলক্ষে ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছিল বর্ণিল সাজে। ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শিক্ষাভবন– ডি’ এর সামনে বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ। অনুষ্ঠানের প্রথমদিন শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা, প্রয়াত শিক্ষার্থীদের স্মরণে ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ এবং সব শেষে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বাউল সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।
২৪ ফেব্রুয়ারি পুনর্মিলনীর দ্বিতীয় দিনে সাবেক শিক্ষার্থী এবং তাদের সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।সবশেষে সমাপনী অনুষ্ঠান ও ভয়েজ অব মাইলসের কনসার্টের মাধ্যমে শেষ হয় মিলনমেলা।
অর্থনীতি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুসলেহ উদ্দিন খুশবু বলেন, ‘পুনর্মিলনীতে দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে অসংখ্য অ্যালামনাই অংশ নিয়েছেন। এ মিলনমেলায় সহযোগিতার জন্য বিভাগের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শাবিপ্রবি অর্থনীতি সমিতির সকল সদস্যদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি । এ ছাড়াও যারা শ্রম ও মেধা দিয়ে পুনর্মিলনী সফল করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হাকিম বলেন, ‘এই আয়োজনের দরুণ অনেকদিন পরে আমার সিনিয়র, সহপাঠী, জুনিয়র এবং একজন শিক্ষক হিসেবে আমার অনেক পুরনো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। সবাইকে একসাথে দেখে অনেক ভালো লেগেছে। গল্প-আড্ডায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবনের পুরনো সেই দিনগুলো যেন চোখের সামনে ভেসে উঠছিল।’
নতুন এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরির এই আয়োজন বিভাগের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘এই মিলনমেলা বিভাগ–শিক্ষার্থী সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বর্তমান চাকরির বাজারের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের এখান থেকে পড়ালেখা শেষে কর্মসংস্থানের দিক নির্দেশনার প্রয়োজন হয়। তারা এখান থেকে বের হয়ে যদি জানতে পারে সিনিয়ররা কে কোথায় আছেন তাহলে তারা তাদের কাছ থেকে পরামর্শ এবং সাহায্য চাইতে পারে। এই পরিচয়টা ঘটানোর জন্য এমন আয়োজন হওয়া দরকার।’