× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রকৃতি পুনঃচক্রের নায়কেরা

পাভেল পার্থ

প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪ ১৪:৪১ পিএম

প্রকৃতি পুনঃচক্রের নায়কেরা। ছবি : সংগৃহীত

প্রকৃতি পুনঃচক্রের নায়কেরা। ছবি : সংগৃহীত

আমাদের লাগামহীন ভোগ-বিলাসিতা প্রতিনিয়ত পৃথিবী নামের গ্রহটিকে বসবাসের অনুপযোগী করে তুলছে। পরিবেশগত সুরক্ষাপ্রশ্নে ১৯৯০ সালের পর থেকে ‘পুনঃচক্রায়ণের বিষয়টি বেশ আলোচিত ও অনুশীলিত। এটিকে বৈশ্বিকভাবে জনপ্রিয় করতে ২০১৮ সাল থেকে প্রতিবছরের ১৮ মার্চ ‘বিশ্ব পুনঃচক্র দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে লিখেছেন পাভেল পার্থ


প্রাণ-প্রজাতির বিবর্তন এবং পৃথিবী নামক গ্রহে মানুষের দীর্ঘতম অভিযাত্রায় আমরা কী দেখছি? নানা প্রান্তে গড়ে ওঠা সভ্যতা, তরতর করে আবার বিলীন হয়ে যাওয়া। এই গ্রহে জীবনের লাখো-নিযুত বিকাশ হলেও একমাত্র মানুষ প্রজাতি হিসেবে এই গ্রহকে নিদারুণভাবে রক্তাক্ত ও খণ্ডবিখণ্ড করেছে। প্রতিনিয়ত বর্জ্য ও জঞ্জাল তৈরি করেছে। মানুষ সৌরজগতের সবচেয়ে নিষ্ঠুর প্রাণী। যারা মানুষকে মেরে ফেলার জন্য অস্ত্র বানায়, যুদ্ধকে বৈধতা দেয়। প্রতিদিন এই একটিমাত্র বেঁচে থাকা গ্রহকে দখল ও দূষণ করে। প্রাণ-প্রজাতির বিকাশকে রুদ্ধ করে। পৃথিবীর ইতিহাসে ডেনিসোভান, ইরেক্টাস, ফ্লোরিয়েনসিস, নিয়ানডার্থাল মানুষেরা এমন নিষ্ঠুর আর নির্দয় ছিল কি-না আমাদের জানা নেই। তবে স্যাপিয়েন্স মানুষের লোভ, লুণ্ঠন আর লাভের বেসাতি জানা আছে। এই স্যাপিয়েন্স মানুষেরা নিজের ভোগবিলাস আর বেঁচে থাকার জন্য মাটির তলার সকল সম্পদ টেনে-হিঁচড়ে তুলেছে। পাহাড়, নদী, অরণ্য টুকরো টুকরো করে ছিন্নভিন্ন করেছে। তেল, গ্যাস, কয়লা, হিরা, স্বর্ণ, রৌপ্য, পাথর খনির জন্য মরিয়া হয়েছে। এই স্যাপিয়েন্স মানুষেরাই প্রজাতির গণবিলুপ্তি ঘটিয়ে এক অসম খাদ্যব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠা করেছে। আজ আমাদের চারপাশে বিষ আর বিষ। বিষের প্যাকেট, বিষের বোতল। এই স্যাপিয়েন্স মানুষেরা নিজের ভোগবিলাসের জন্য প্রতিদিন পৃথিবীতে বর্জ্যের স্তুপ তৈরি করছে। দূষণের জঞ্জালে ম্লান করে দিচ্ছে পৃথিবীর মুখ। আজ নিজের বাহাদুরিতে মানুষ নিজেই কাহিল। মায়ের দুধ থেকে শুরু করে শিশুর শরীর, মাছ কী মাটিÑ সর্বত্র আজ মাইক্রোপ্লাস্টিক। কোনো উন্মুক্ত সবুজ বলয় আমরা আস্ত রাখিনি। নদীর রেখাগুলোকে মুছে দেওয়ার জন্য উত্তুঙ্গ হয়ে আছি। কিন্তু এভাবে মানুষ বাঁচতে পারে না। প্রকৃতিতে ফিরে আসা নানা দুর্যোগ কি মহামারি মানুষের কাছে অশনিসংকেত হয়ে ওঠে। সম্প্রতি করোনা মহামারিও পৃথিবীকে আরেকবার প্রকৃতির সতর্কবার্তা দিয়েছে। প্রকৃতিকে প্রকৃত রাখার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। গ্রহকে বর্জ্যমুক্ত রাখার বার্তা দিয়েছে। মানুষ বৈশ্বিকভাবে নিজের তৈরি করা বিপদ বিষয়ে সতর্ক হয়েছে প্রথম ১৯৭২ সালে। ১৯৭২ সালের ১৬ জুন মানব পরিবেশের ওপর জাতিসংঘের সম্মেলনে ঘোষিত ‘স্টকহোম ঘোষণাকে পুনঃসমর্থন করে। পরবর্তীতে ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনেরিও নগরে ১৯৯২ সালের ৩ থেকে ১৪ জুন আয়োজিত বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলনে ঘোষিত হয় ‘পরিবেশ ও উন্নয়নসম্পর্কিত রিও ঘোষণা ১৯৯২। রিও ঘোষণায় প্রাণ ও প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সামাজিক বিকাশ ও উন্নয়নকে এক স্থায়িত্বশীল সম্পর্কের জায়গা থেকে বিবেচনা করা হয়েছে। রিও ঘোষণার ২০ বছর পর আবার আয়োজিত হয় রিও সম্মেলন-২০১২। দেখা যায় নয়া উদারবাদী উন্নয়ন কোনোভাবেই প্রাণ ও প্রকৃতির পক্ষে দাঁড়ায়নি, বরং সম্পদের অতিব্যবহার এই গ্রহকে এক নাজুক ও ভঙ্গুর ভবিষ্যতের দিকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। রিও ঘোষণা ২০১২-এর ৪নং নীতিতে বলা হয়েছে, স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন অর্জন করার ক্ষেত্রে পরিবেশগত সুরক্ষাকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে এবং একে পৃথক হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। পরিবেশগত সুরক্ষা প্রশ্নে ১৯৯০ সালের পর থেকে ‘পুনঃচক্রায়ণের’ বিষয়টি বেশ আলোচিত ও অনুশীলিত হয়ে উঠছে। পুনঃচক্রের বিষয়টিকে বৈশ্বিকভাবে জনপ্রিয়করণের জন্য প্রতিবছরের ১৮ মার্চ ‘বিশ্ব পুনঃচক্র দিবস আয়োজিত হচ্ছে। চলতি লেখাখানি বিশ্ব পুনঃচক্র দিবসে ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় তৎপরতা সবক্ষেত্রে সবাইকে পুনঃচক্রের বিন্দু বিন্দু অভ্যাসগুলো গড়ে তোলার আহ্বান জানায়। আর আমাদের সমষ্টিগত দায়িত্বশীল ও দায়বদ্ধ পুনঃচক্রায়ণের ভেতর দিয়েই সতেজ থাকুক আমাদের গ্রহ।

২০১৮ সালে পুনঃচক্র দিবসটি ঘোষিত হয়। একটিমাত্র পৃথিবীকে বাঁচানোর লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী পুনঃচক্রকে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে অনুশীলনের আহ্বান জানানো হয়। বিশেষ করে, হ্রাসকরণ (রিডিউস), পুনর্ব্যবহার (রিইউজ) এবং পুনঃচক্র (রিসাইকেল) এই ত্রয়ী বিষয়কে একত্র করে এই তিন শব্দের প্রথম বর্ণ নিয়ে ‘তিন আর হিসেবে মূলত পুনঃচক্রের বিষয়টি শহুরে নাগরিকদের কাছে পরিবেশবান্ধব চর্চা হিসেবে একটা চল আছে। ‘দ্য গ্লোবাল রিসাইকেল ফাউন্ডেশন এ বছরের ‘বিশ্ব পুনঃচক্র দিবস-এর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘পুনঃচক্রের নায়কেরা


আমরা যখনি বলি সভ্যতা, বিশেষ করে নগরসভ্যতা, তখন এর চাকচিক্য আর স্থাপনা বা বিলাসবহুল জীবনই শুধু নয়, এর সাথে চলে আসে বর্জ্য বা আবর্জনার প্রসঙ্গ। দেখা গেছে, কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ জীবন থেকে কোনো এলাকা যখনি নগরায়ণ ও শিল্পায়নের ফলে পরিবর্তিত হয়েছে, তখনি বর্জ্য এক তীব্র সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে। কারণ আমরা অধিকাংশ জিনিস একবারমাত্র ব্যবহার করি। কিন্তু কোনো কিছু বহুবার নানাভাবে নানা কাজে ব্যবহারের চিন্তা, অনুশীলন ও সংস্কৃতি আমাদের ভেতর এখনও গড়ে ওঠেনি। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, পৃথিবীতে প্রতিদিন নগরে প্রায় ২.০২ বিলিয়ন টন কঠিন বর্জ্য তৈরি হয় এবং জনপ্রতি ০.৭৪ কেজি কঠিন বর্জ্য তৈরি হয়। যদি এভাবে কঠিন বর্জ্যের পরিমাণ বাড়তে থাকে, তবে ২০৫০ সালের ভেতর পৃথিবীতে প্রতিদিন প্রায় ৩.৪০ বিলিয়ন টন কঠিন বর্জ্য তৈরি হতে পারে, যার ব্যবস্থাপনা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক কর্মসূচির এক প্রতিবেদন উল্লেখ করেছে, আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় প্রতিদিন কঠিন বর্জ্য বাড়ছে এবং এই বর্জ্য সরাসরি বাস্তুতন্ত্র ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় ১১.২ বিলিয়ন টন কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় এবং এই পরিমাণ বর্জ্যের জৈব অংশের পচনের মাধ্যমে গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন ঘটে। যা মোট গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের প্রায় ৫ ভাগ। এ ছাড়া এই কঠিন বর্জ্যের ভেতর প্রতিনিয়ত ইলেকট্রিক ও ডিজিটাল বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ছে। যার ব্যবস্থাপনা খুবই কঠিন বিষয় এবং এই নতুন কঠিন বর্জ্য সামগ্রিক পরিবেশ ও জীবনযাত্রায় তৈরি করছে নতুন সংকট। স্থায়ী টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সম্পদের বহু-ব্যবহার ও পুনঃচক্রায়ণকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। কোনো কিছু ব্যবহারের পর দুম করে ফেলে দেওয়ার আগে আমাদের ভাবা দরকার তা আর কী কী কাজে লাগতে পারে এবং কীভাবে একে কাজে লাগানো যেতে পারে। পুনঃচক্রায়ণের অভ্যাসকে সাংস্কৃতিক ও দার্শনিকভাবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আমাদের বিদ্যায়তন, গণমাধ্যম ও জনসংস্কৃতি গুরুত্বপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। শৈশব থেকেই কোনো শিশু সৃজনশীলতা ও দায়িত্বশীলতায় বেড়ে ওঠুক, যেখানে পুনর্ব্যবহার ও পুনঃচক্রের বিষয়টি তার দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে গড়ে ওঠে। এক বালতি পানি নানাভাবে ব্যবহার করা যায়। স্নান, কাপড় ধোয়া, হাতমুখ ধোয়া, ঘর মোছা এবং সবশেষে ঘর মোছা পানি বাগান বা বারান্দার গাছে দেওয়া যায়। লেখার সময় আমরা কাগজের উভয় দিকে কাঠপেনসিলে লিখতে পারে, তার ওপর পরে কালি দিয়ে লিখতে পারি। কারণ যত কাগজ তত গাছের মৃত্যু, যত কালি তত কার্বন নিঃসরণ। পুনঃচক্রায়ণকে সংস্কৃতির অংশ হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের খাদ্যব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন দরকার। একই সঙ্গে আমাদের উৎপাদন প্রক্রিয়া, কর্মপরিসর, দৈনন্দিন জীবনযাপনে ব্যবহৃত তৈজস, নির্মাণকলা ও স্থাপত্যবিদ্যা- সবকিছুকেই পুনঃচক্রায়ণ উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা দরকার।

১৯৫৮ সালের পর থেকে এই প্লাস্টিক পৃথিবীব্যাপী ক্রেতা-ভোক্তার ক্রয়সীমানা এবং দৈনন্দিন জীবনযাপন দখল করে নিতে থাকে। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির এক সূত্র অনুযায়ী (২০২২), ১৯৫০ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় ৯.২ বিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন করা হয়েছে। ১৯৫০ সালে ২.৩ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপন্ন হয়, যা ২০১৫ সালে এসে দাঁড়ায় ৪৪৮ মিলিয়ন টন (সূত্র : ন্যাশনাল জিওগ্রাফি)। পৃথিবীর জনসংখ্যার মোট ওজনের সমান প্লাস্টিক প্রতিবছর উৎপাদিত হয় (সূত্র : আর্থডে)। যদি বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক ব্যবহারের ধারা অব্যাহত থাকে, তবে ২০৫০ সালের ভেতর ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হবে। পৃথিবীতে প্রতিবছর প্রায় ৬০ মিলিয়ন টন পলিথিনসামগ্রী তৈরি হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের জরিপমতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১০ লাখ ৯৫ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়। কঠিন বর্জ্যের দশ ভাগই প্লাস্টিক। বেসরকারি পরিবেশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান এসডোর জরিপ বলছে, দেশে বছরে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক উৎপন্ন হয় ৮৭ হাজার টন। ২০১৪ সালে প্রথম জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনে শীর্ষ দশ জরুরি পরিবেশগত সমস্যার ভেতর সামুদ্রিক প্লাস্টিক বর্জ্যদূষণকে তালিকাভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে দ্বিতীয় পরিবেশ সম্মেলনে মাইক্রো প্লাস্টিকদূষণকে পরিবেশ গবেষণার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈজ্ঞানিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ এর বহু আগেই পলিথিন নিষিদ্ধ করে। ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৬(ক) (সংশোধিত ২০০২) ধারা অনুযায়ী ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকা শহরে এবং একই বছরের ১ মার্চ বাংলাদেশে পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়। ২০১৯ সালে বেলাসহ ১১টি পরিবেশ সংগঠন একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পণ্য বন্ধে রিট করে। পরে দেশের উপকূল অঞ্চলে, দেশের সর্বত্র হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় পানি বহনকারী প্লাস্টিকের বোতলসহ একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকসামগ্রী ব্যবহার বন্ধে হাইকোর্ট নির্দেশ দেন। ২০২৬ সালের ভেতরে দেশকে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকমুক্ত করতে লক্ষ্য অর্জনে প্রথম ধাপে সকল সরকারি দপ্তরে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানা যায়। সরকারি দপ্তরগুলোতে প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাচের বোতলে পানি রাখার জন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এমনকি সরকারি আমন্ত্রণপত্র, নিমন্ত্রণপত্র, ভিজিটিং কার্ড ও ফাইল ফোল্ডারে প্লাস্টিক ব্যবহার ও লেমিনেটিং ব্যবহার বন্ধ করতে বলা হয়েছে। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে প্রাথমিকভাবে দেশের ১২টি জেলার ৪০টি উপজেলাকে বেছে নিয়েছে সরকার। প্লাস্টিকদূষণ রোধে আমাদের স্বল্প, মধ্য, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও জনতৎপরতা তৈরি করতে হবে। একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক উৎপাদন, বিক্রয় ও ব্যবহার সম্পূর্ণত বন্ধ করে কাজটি আমরা শুরু করতে পারি। এক্ষেত্রে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা ও বিশেষ বরাদ্দ নিশ্চিত করে পরিবেশবান্ধব কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র বাড়াতে হবে। একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করে দেশজ উপাদানে তৈরি উপকরণসমূহের ব্যবহার বাড়ালে দেশের পাটশিল্প, কাচশিল্প, কাঠশিল্প, বাঁশ-বেত শিল্প, শিশু খেলনা শিল্প, হাতে তৈরি কাগজ শিল্পসহ বহু সৃজনশীল প্রাকৃতিক কুটিরশিল্প একটা নতুন চেহারা নিয়ে দাঁড়াতে পারবে।

মাটি ও জলজ বাস্তুতন্ত্রের পুনঃচক্রায়ণ ছাড়া আমাদের খাদ্যব্যবস্থার ন্যায্য ও স্থায়ী রূপান্তর সম্ভব নয়। পুরোনো কাপড় থেকে শুরু করে আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহার্য যেকোনো সামগ্রীর নানামুখী পুনর্ব্যবহার হতে পারে। অনেকে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক ব্যবহার করে উল্লম্ব বাগান, ঘরবাড়ি, বাগান নানা কিছু তৈরি করছে। অনেকে পুনর্ব্যবহার ও পুনঃচক্রকে শিল্পকলা চর্চার অংশ করেছে। আমরা কি খুব সহজে পুনর্ব্যবহার ও পুনঃচক্রায়ণের একটি সহজ কাজ সবাই মিলে শুরু করতে পারি? আসুন আমরা সবাই কাগজের ঠোঙা বানানো শুরু করি। পুরোনো পত্রিকা, লেখার খাতা, বইপত্র থেকে শুরু করে পুরোনো কাগজ কি নতুন কাগজের ঠোঙা। পরিবারের সবাই মিলে সৃজনশীল সক্রিয় এই কর্মতৎপরতার পরিবেশগত, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবদান বেশ গুরুত্ববহ। আর এই একটিমাত্র ছোট্ট অনুশীলনের ভেতর দিয়েও কিন্তু আমরা হয়ে উঠতে পারি পুনঃচক্রের নায়ক।

  • লেখক ও গবেষক

[email protected]

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা