× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হেভেন চাকমার অর্কিড ও ফাইকাসের স্বর্গরাজ্য

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ১১:৪৭ এএম

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৩:৪৩ পিএম

 ১৫০ প্রকারের অর্কিড ও ১০ প্রজাতির ফাইকাস আছে হেভেন চাকমার সংগ্রহশালায়

১৫০ প্রকারের অর্কিড ও ১০ প্রজাতির ফাইকাস আছে হেভেন চাকমার সংগ্রহশালায়

বাড়ির প্রবেশপথ থেকে চারপাশ জুড়ে ফুটে আছে হলুদ, বেগুনি, গোলাপি, সাদাসহ নানা রঙের ফুল। সেমিপাকা বাড়ির দেয়াল, উঠান, গাছগাছালি; বাড়ির চারপাশে এক ইঞ্চিও খালি নেই। এসব গাছের বিশেষত্ব হলো এগুলো পাহাড়ের হারিয়ে যাওয়া অর্কিড, বনাজি ও দুর্লভ প্রজাতির ফাইকাস।

খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে তেঁতুলতলায় হেভেন চাকমার বাড়ি। পেশায় ব্যবসায়ী হলেও বিভিন্ন ফলদ বাগান রয়েছে তার। স্ত্রী মিনা চাকমা গৃহিণী। স্ত্রী আর দুই মেয়ে নিয়ে সংসার। তারাও ভালোবাসেন অর্কিড।

হেভেন চাকমা জানান, ১৫০ প্রকারের অর্কিড, বিলুপ্তপ্রাপ্ত ১০ প্রজাতির ফাইকাস আর অগণিত ঔষধি গাছ সংগ্রহে আছে তার। এরিডাস ওডোরাটা আলভা, ফক্সটেইল আলভা, অ্যাফাইলাস আলভা, পেন্ডুলাম, কাসুলাটুম, এডুনকাম, বেনসনিসহ নানা অর্কিডও আছে। কখনও অর্কিড ও ফাইকাস বিক্রি করেন না। মাঝেমধ্যে বিনিময় করেন। ছোটবেলা থেকেই গাছগাছালি আর ফুলের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা। প্রায় ১০ বছর আগে জানতে পারেন পাহাড়ের অর্কিড হারিয়ে যাচ্ছে। তখন সিদ্ধান্ত নেন অর্কিড সংগ্রহ করার। হারিয়ে যেতে দেবেন না পাহাড় থেকে। অর্কিড সংগ্রহ করতে গিয়েই বনাজি গাছের প্রেমে পড়েন। অর্কিডের পাশাপাশি বনাজি গাছ সংগ্রহ করেন। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার আবদুল্লাহ আল হারুনের অনুপ্রেরণায় ফাইকাস সংগ্রহ করছেন তিন বছর ধরে।

প্রকৃতিপ্রেমী হেভেন চাকমা স্বপ্ন দেখেন পাহাড়ে হারিয়ে যাওয়া সব অর্কিড এবং মূল্যবান ফাইকাস তার সংগ্রহে থাকবে। এসব ফাইকাস ও অর্কিডের সৌন্দর্য দেখে নতুন প্রজন্ম পাহাড়ের সৌন্দর্যের ধারণা পাবে। একসময় সমতল কিংবা পাহাড়ের কারও ইচ্ছা হলেই গবেষণা করতে পারবে তার এ সংগ্রহ দিয়ে।

তিনি বলেন, ‘কখনও কখনও অর্কিড সংগ্রহ করতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ২০-২৫ কিলোমিটার হেঁটে যাওয়ার পর গিয়ে দেখা যায় অর্কিড গাছগুলো নষ্ট করা হয়েছে। অনেকে আবার টাকা ছাড়া দিতে চান না। এমনও হয়েছে, এ অর্কিডগুলো ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে। মূলত পাহাড়ের পাদদেশে বড় বড় গাছে অর্কিড প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয় এবং বেড়ে ওঠে। ছোটবেলায় দেখতাম পাড়ার বড় বড় কাঁঠাল, বট, পাকুড়সহ গাছে লাল, সাদা, হলুদ ইত্যাদি রঙের ফুল ফুটে থাকত। প্রাকৃতিক বা বুনো অর্কিডের এখন দুঃসময় চলছে। একসময় পাহাড়ে অনেক বড় বড় গাছ ছিল। জুম চাষ, বনাঞ্চল উজাড়সহ পরিবেশবিধ্বংসী নানান কর্মকাণ্ডে পাহাড় থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে অর্কিড। পাহাড়ের মানুষ অর্কিড সম্পর্কে সচেতন নয়, পরগাছা আর আগাছা ভেবে মূল্যবান অর্কিডগুলো নষ্ট করে দেয়। অর্কিড গাছের তেমন পরিচর্চা করতে হয় না ঠিক, তবে শুধু ঘরের ভেতরে লাগানো গাছগুলোয় নিয়মিত পানির স্প্রে করে দিতে হয়। আর ফাইকাস গাছ মাটি বা টবে অন্য গাছগুলোর মতো যত্ন নিতে হয়।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মালেক বলেন, ‘পাহাড় থেকে হারিয়ে যাওয়া অর্কিড, বনাজি, ফাইকাসগুলো সংগ্রহ করা জরুরি। এগুলো একসময় হারিয়ে যাবে। হেভেন চাকমাকে সাধুবাদ জানাই তার সংগ্রহের কারণে। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রেও হারিয়ে যাওয়া কিছু অর্কিড সংগ্রহ করা হয়েছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা