কুয়েটের বিল্টটেক ফেস্ট
আবদুল্লাহ আল মামুন
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪ ১৪:৪২ পিএম
কুয়েটে অনুষ্ঠিত বিল্টটেক ফেস্টে চ্যাম্পিয়ন এবং রানারআপ পাবিপ্রবির দুই দল ছবি: লেখক
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এর বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট (বিইসিএম) বিভাগের উদ্যোগে পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত ‘বিল্টটেক ফেস্ট ৫.০’-এ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) একটি দল চ্যাম্পিয়ন এবং একটি দল রানারআপ হয়।
চলতি মাসে অনুষ্ঠিত এ ফেস্টে দেশের ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং, কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, নগর ও উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং স্থাপত্য বিভাগের প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
ফেস্টে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং ও কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্টের ছয়টি বিভাগের ওপর প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে মেকানিকস মেনিয়া, পোস্টার প্রেজেন্টেশন, ক্যাড মাস্টার, টেকনিক্যাল রাইটিং, ভিজ্যুয়াল রেন্ডারিং এবং ম্যানেজমেন্ট মাস্টারমাইন্ড বিভাগের প্রতিযোগিতা ছিল। এর মধ্যে ভিজ্যুয়াল রেন্ডারিং বিভাগে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ট্রাই অ্যাঙ্গেল’ চ্যাম্পিয়ন এবং ‘টিম স্পেস ভিজ’ রানারআপ হয়েছে। টিম ট্রাই অ্যাঙ্গেলে ছিলেন দিদার এলাহী, ইমন ইসলাম সজীব ও মহিম অর্ণব পাল মিথুন। টিম স্পেস ভিজে ছিলেন আজিজুর রহমান বাঁধন, সিলমা সুবহা ও আসিফুল হাসান জামি। এরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী। চ্যাম্পিয়ন দল প্রাইজমানি পায় ১৫ হাজার এবং রানারআপ দল পায় ৬ হাজার টাকা।
প্রতিযোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভিজ্যুয়াল রেন্ডারিং বিভাগটি ছিল আর্কিটেকচারাল মডেল তৈরির একটা প্রতিযোগিতা, যেখানে আর্কিটেকচারাল মডেল ভিজ্যুয়ালি দেখতে কেমন হবে সেটা কম্পিউটারে উপস্থাপন করা। প্রতিযোগিতায় আয়োজকরা একটি ভ্যাকেশন হাউসের থ্রিডি ভিজ্যুয়াল মডেল তৈরির কাজ দেন।
প্রতিযোগীরা জানান, আয়োজকরা ভ্যাকেশন হাউসটি তৈরির জন্য গ্রামীণ পরিবেশের কিছু উপাদানসহ একটা প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন, এর ওপর ভিত্তি মডেল তৈরি করতে হবে। এর জন্য সময় ছিল ২০ ঘণ্টা, যেখানে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটিসহ ১৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০টির বেশি দল অংশগ্রহণ করে।
চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য দিদার এলাহী বলেন, ‘একাডেমিক চাপ থাকার কারণে পুরস্কার বিতরণীর দিন কুয়েটে যেতে পারিনি। ক্লাসের কাজ শেষ করে চায়ের দোকানে টিমমেটরা মিলে আড্ডা দিচ্ছি। তখন একজন ফোন করে জানাল আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, ভেবেছি দুষ্টামি করছে হয়তো। পরে ঘটনা সত্যি হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমাদের প্রথম প্রতিযোগিতা ছিল। চ্যাম্পিয়ন যে হব তা ভাবতে পারিনি, তবে মনোবল ছিল যে আমরা ভালো কিছু করব। এ অর্জন আমাদের অনেক দূর এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জোগাবে।’
রানারআপ দলের সদস্য আজিজুর রহমান বাঁধন বলেন, ‘করোনার সময় আমরা বন্ধুরা মিলে স্কিল ডেভেলপমেন্টের অনেক কাজ শিখেছি। ভিজ্যুয়ালাইজেশনের কাজ আমাদের কাছে ভালো লাগত, এটা নিয়ে আমরা অনেক সময় দিয়েছি। আমাদের একটা দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর যখন শুনলাম আমাদেরও দলটা রানারআপ হয়েছে তখন আমরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ি। তখন বুঝতে পারলাম এতদিন আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশনের ওপর যে সময় দিয়েছি তা সার্থক হয়েছে।’
রানারআপ দলের আরেক সদস্য আসিফুল হাসান জামি বলেন, ‘যতগুলো বিভাগ ছিল এর মধ্যে বেশিরভাগ পুরস্কার বুয়েট, রুয়েট, কুয়েটের মতো বড় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ই পেয়েছে। ভিজ্যুয়াল রেন্ডারিং বিভাগটিই একমাত্র বিভাগ যেখানে আমাদের মতো একটা বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন, রানারআপের পুরস্কার পেয়েছে।’
শিক্ষার্থীদের এমন অর্জনে আনন্দ প্রকাশ করেছেন স্থাপত্য বিভাগের চেয়ারম্যান বিজয় দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের এমন অর্জনে আমি এবং আমার বিভাগের সবাই আনন্দিত। ওরা এ প্রতিযোগিতায় যেভাবে কাজ করেছে তাতে আমরা ভালো কিছু আশা করেছি। প্রতিযোগিতার ফলাফলে আমাদের সে আশারই প্রতিফলন ঘটেছে।’