প্রচ্ছদ
সুবর্ণা মেহ্জাবীন স্বর্ণা
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৫৩ পিএম
ঈদের মাত্র কয়েক দিন বাকি। ঈদের আনন্দ কয়েকগুণ বেড়ে যায় যখন পোশাকটি হয় মনের মতো। শুধু ফ্যাশনেবল ঈদের পোশাক কিনলেই হবে না। পোশাকটি যেন হয় আরামদায়ক নজর রাখতে হবে সেদিকেও। ফ্যাশনেবল আর আরামের পোশাকে সবার ঈদ হয়ে উঠুক রঙিন।
ইতোমধ্যেই অনেকে সেরে ফেলেছেন কেনাকাটা। আর যারা করেনি তারা ভিড় জমাচ্ছে শপিং মল, ফ্যাশন হাউস, পাইকারি ও খুচরা বাজারে। শুধু মেয়েরাই নয়, ছেলেরাও বেশ ফ্যাশন সচেতন। তাই এবার ঈদে ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফ্যাশনেবল পোশাক কিনতে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে ফ্যাশন হাউসগুলোতে। বছরকয়েক আগেও দেখা যেত ঈদ এলেই জমকালো পোশাকের চাহিদা অনেক বেড়ে যেত। তখন বেশিরভাগ ক্রেতাই আরাম থেকে বেশি প্রাধান্য দিত গর্জিয়াস পোশাককে। কয়েক বছরের ব্যবধানে পরিবর্তন এসেছে ক্রেতার চাহিদা ও ঋতুচক্রে। গরমের এই ঈদে বেশিরভাগ ক্রেতা আঁটসাঁট পোশাকের বদলে ঢিলেঢালা কাট পোশাককেই প্রাধান্য দিচ্ছে।
প্রতিবারই নতুন থিম আর মোটিফে ঈদের পোশাক আনার চেষ্টা থাকে ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রেতার চাহিদা ও আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে ঈদের পোশাক নকশা করেছেন ডিজাইনাররা। মোটিফ ও নকশায় রাখা হয়েছে উৎসবের আমেজ। এবারের ঈদে মেয়েদের পোশাক হিসেবে রয়েছেÑ শাড়ি, কুর্তি, থ্রি-পিস, কামিজ, লং টপস, কাফতান, ফতুয়া, গাউন, হাওয়াই পোশাক, টিউনিক, ওড়না, রেডি ব্লাউজ। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চুড়িদার, ডিভাইডার, পালাজ্জো, স্ট্রেইট প্যান্ট, ধুতি-সালোয়ার, সিগারেট প্যান্ট, বেল বটম প্যান্ট ইত্যাদির চাহিদা বেশি। অন্যদিকে ছেলেদের জন্য রয়েছে বিশেষ কাপড়ে তৈরি পাঞ্জাবির সংগ্রহ, যা সাধারণ কাপড়ের চেয়ে হালকা ও টেকসই। এ ছাড়া রয়েছে শার্ট, টি-শার্ট, কাবলি, শেরওয়ানি, পোলো শার্ট, ফতুয়া, ফিট চিনো প্যান্ট, ডেনিম প্যান্ট, কাইতেকি প্যান্ট, কার্গো প্যান্ট ইত্যাদি।
ঈদ আয়োজনের পোশাক আরামদায়ক ও সময়োপযোগী করতে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি, ডিজাইনড কটন, হ্যান্ডলুম কটন, লিনেন, সিকোয়েন্স, হাফ সিল্ক, নেট, মসলিন, বলাকা সিল্ক, এন্ডি সিল্ক, টু-টোন, জর্জেট, ক্রেপ জর্জেট, অ্যান্ডি, মসলিন, টিস্যু, শিফন ও সাটিন কাপড়। রঙ হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে লাল, টেন গোল্ড, মেরুন, মেজেন্টা, কফি, সাদা, ফিরোজা, পার্পল, ভায়োলেট, ল্যাভেন্ডার, চেরি রেড, অরেঞ্জ, হট ও কোরাল পিঙ্ক, নীল, অলিভ গ্রিন, ফরেস্ট গ্রিন, আকাশি নীল, সবুজ, বাদামি, মিন্ট গ্রিন, ব্রোঞ্জ গ্রিন ইত্যাদি রঙকে। পোশাককে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করতে পোশাকে হাতের কাজ, এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন ও ব্লকপ্রিন্ট, কারচুপি ও কাটিং অ্যান্ড সুইং, মেটালিক হাতের কাজ এবং টাই-ডাইয়ের মাধ্যমে অলংকরণ করা হয়েছে।
কো-অর্ডে আধুনিক
থ্রি-পিসের চল থাকলেও এখন ফ্যাশনে টুপিসের চল বেড়েছে। কো-অর্ড পোশাকে কামিজ ও প্যান্ট থাকে একই রকম। একরঙা বা প্রিন্ট কাপড়ে তৈরি কো-অর্ড দেখতে যেমন ফ্যাশনেবল তেমনি প্রকাশ করে মার্জিত রুচি। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসেই এখন মেলে এমন কো-অর্ড সেট। কামিজের গলায় ও হাতায় দেখা মিলছে বৈচিত্র্য। কামিজে প্রাধান্য পেয়েছে কটন, লিনেন, লন, সিল্ক, মসলিন, ভিসকস ও সিনথেটিক কাপড়। এসব কাপড়ে প্রতিটি ব্র্যান্ড নকশায় ফুটিয়ে তুলেছে নিজেদের স্বকীয়তা। কামিজের হাতায়ও দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন নকশা। বড় হাতায় এমব্রয়ডারি বা লেস দিয়ে করা হয়েছে নকশা। এ ছাড়া শর্ট স্লিভ, কোয়ার্টার, সেমিকোয়ার্টার ও ফুল স্লিভ সব রকম হাতার কালেকশন রেখেছে ফ্যাশন হাউসগুলো। হাতায় ব্যবহার করা হয়েছে রকমারি কাটছাঁট। যেমন- কোল্ড শোল্ডার, অফ শোল্ডার ও বেল বটম। নতুনত্ব এসেছে নেক লাইনেও। বড় গোল গলা থেকে শুরু করে বোট নেক, ব্যান্ড কলার, হাইনেক, শেরওয়ানি ও পাঞ্জাবি গলা প্রাধান্য পেয়েছে এবারের ঈদের জামায়। উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তুলতে লেইস, ফ্লেয়ার ও ফ্রিল ব্যবহার করা হয়েছে। মেয়েদের সব ধরনের পোশাকে লেয়ারিং স্টাইল এবার ঈদেও বহাল আছে। কারচুপির কাজ করা জর্জেট কামিজ এবং আরামদায়ক ভিসকস কামিজও রয়েছে কালেকশনে।
কুর্তি, কামিজ, কাফতানে বৈচিত্র্য
জ্যামিতিক কাটছাঁটের টপস দেখা যাচ্ছে এবারের ঈদ ফ্যাশনে। কামিজ, টপসের গলা, হাতায়ও রয়েছে বৈচিত্র্য। কামিজে প্রাধান্য পেয়েছে কটন, লিনেন, লন, সিল্ক, মসলিন ও সিনথেটিক কাপড়। এসব কাপড়ে প্রতিটি ব্র্যান্ড নকশায় ফুটিয়ে তুলেছে নিজেদের স্বকীয়তা। গরম বলেই স্লিভলেস বেশি চোখে পড়ছে। একই ডিজাইনে হাতাসহ এবং হাতা ছাড়া দুই ধরনের কালেকশনই আছে। এ ছাড়া শর্ট স্লিভ, কোয়ার্টার, সেমিকোয়ার্টার ও ফুল স্লিভ সব রকম হাতার কালেকশন রেখেছে ফ্যাশন হাউসগুলো। হাতায় ব্যবহার করা হয়েছে রকমারি কাটছাঁট। যেমন- কোল্ড শোল্ডার, অফ শোল্ডার ও বেল বটম। নতুনত্ব এসেছে নেক লাইনেও। বড় গোল গলা থেকে শুরু করে বোট নেক, ব্যান্ড কলার, হাইনেক, শেরওয়ানি ও পাঞ্জাবি গলা প্রাধান্য পেয়েছে এবারের ঈদের জামায়। উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তুলতে লেইস, ফ্লেয়ার ও ফ্রিল ব্যবহার করা হয়েছে। মেয়েদের সব ধরনের পোশাকে লেয়ারিং স্টাইল এবার ঈদেও বহাল আছে। কারচুপির কাজ করা জর্জেট কামিজ এবং আরামদায়ক ভিসকস কামিজও রয়েছে কালেকশনে।
পাঞ্জাবি-কাবলি- শেরওয়ানি
ঈদে ছেলেদের পোশাকে পাঞ্জাবি থাকে সব সময় এগিয়ে। গরমের কারণে এবার ঈদের পোশাকে সাদা রঙের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বাজার ঘুরেও তার প্রমাণ মিলল। পাশাপাশি অনেক তরুণ ঈদের নামাজের জন্য বেছে নিচ্ছেন কাবলি। বেশিরভাগ পাঞ্জাবি, কাবলি ও শেরওয়ানির ডিজাইন করা হয়েছে আধুনিক ও আরামদায়ক কাপড়ে।
পাঞ্জাবি ও শেরওয়ানির হাতা, গলায়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বুকের এক পাশে বা বুকজুড়ে হালকা নকশার কারুকাজ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ম্যাটেরিয়াল হিসেবে পাঞ্জাবি ও শেরওয়ানির নকশা ও ডিজাইনে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি সুতা, রঙ-বেরঙের স্টোন।
ঈদের সাজ
ঈদের পোশাকের পরই আসে সাজের ব্যাপার। না হলে যেন পূর্ণতা হয় না। নারীরা ত্বক পরিষ্কার করে টোনার ও ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন এবং সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। তারপর ফেস পাউডার লাগিয়ে, আইব্রো এঁকে নিন। চোখে কাজল পরতে চাইলে কালো না পরে ব্রাউন কালার বেছে নিতে পারেন। ঠোঁটে ন্যাচারাল কালারের লিপস্টিক লাগিয়ে নিন। চুল ফ্রেঞ্জ বেণি কিংবা খোঁপা করুন। যারা ঈদের দিন সকালবেলায় গোসল করেন তারা চুল খোলা রাখতে পারেন। দুপুরে বা বিকালে বাইরে যাওয়ার সময় সাজের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশনের সঙ্গে পাউডার মেখে হালকা করে ব্লাশন বুলিয়ে নিন দুই গালে। চোখের সাজে ভিন্নতা আনতে শ্যাডো আর আইলাইনার দিতে পারেন। দুপুরের ঝলমলে রোদে ঠোঁটে হালকা গোলাপি রঙের লিপস্টিক দিতে পারেন। এরপর রোদ পরে গেলে বিকালে সাজুন নিজের ইচ্ছেমতো। পুরুষেরাও কিন্তু আজকাল পিছিয়ে নেই। পরিপাটি থাকতে ঈদের নামাজে যাওয়ার সময়েই জেল দিয়ে চুল সেট করে নিতে পারেন। স্টাইলিশ লুকের জন্য দিনের বেলা সঙ্গে রাখুন সানগ্লাস। এ ছাড়াও হাতে ঘড়ি বা ব্রেসলেট পরলে বেশ ভালো মানাবে। এছাড়া সুগন্ধি ব্যবহার করতে ভুলবেন না। এ ক্ষেত্রে আতর ব্যবহার করাই ভালো।