প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৩ ১২:০৪ পিএম
আপডেট : ২৬ মে ২০২৩ ১২:১৭ পিএম
রাজধানী ফ্রিটাউনে কটন ট্রি। ২০১৫ সালের মার্চে। ছবি : সংগৃহীত
কত মানুষ তার ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিয়েছে। ক্লান্ত পথিক ক্ষণিকের তরে তার নিচে বসে আত্মবিস্মৃত হয়েছে। কত পাখি তার ডালে আশ্রয় পেয়েছে হিসাব নেই।
তার প্রতিটি পাতা যেন একটি জাতির পুনর্জন্মের সাক্ষী। শত শত ঝড়তুফান ওতরাতে পারলেও শেষরক্ষ হলো না। প্রাকৃতিক নিয়মে হার মানতে হলো।
বলা হচ্ছে সিয়েরা লিওনের ৪০০ বছরের পুরোনো কটন ট্রির কথা। রাজধানী ফ্রিটাউনের এই প্রাচীন গাছটি বুধবার (২৪ মে) টানা বৃষ্টি ও ঝড়ে ভেঙে পড়ে। এটা নিয়ে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে শোক চলছে।
সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাদা বায়ো অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, গাছটি ছিল আমাদের জাতীয় প্রতীকের মতো। রাজধানীর কেন্দ্রে অবস্থিত গাছটি ভেঙে যাওয়ায় মানুষের হৃদয়ে এক ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এখন আমাদের কাজ হলো এই শক্তিশালী জাতীয় প্রতীকটিকে কীভাবে সংরক্ষণ করা যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা।
আলজাজিরা জানায়, ৪০০ বছরের পুরোনো এই কটন ট্রিটির উচ্চতা ২৩০ ফুট, ব্যাস ৫০ ফুট।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির জন্য এ গাছ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রফেরত আফ্রিকার সাবেক দাসদের হাতে তৈরি এ দেশটির গোড়াপত্তনের সঙ্গে এ গাছটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
স্থানীয় কিংবদন্তি অনুসারে, ১৭০০ সালের দিকে বন্দিদশা থেকে পালিয়ে স্থানীয়দের পূর্বপুরুষরা সিয়েরা লিওনে পৌঁছেন। নৌকা থেকে নেমে তারা এ গাছটির তলায় জড়ো হন এবং প্রার্থনা সারেন। শহরটির নাম দেওয়া হয় ফ্রিটাউন।
ধীরে ধীরে গাছটি দেশটির জাতীয় জীবনের কেন্দ্রে স্থান করে নেয়। গাছটি দেশটির স্বাধীনতা ও সাম্যের প্রতীকে পরিণত হয়। দেশটির ব্যাংকনোটে কটন ট্রির ছবি রয়েছে। এ গাছ নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক ছড়া।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সিয়েরা লিওন তাদের অন্যতম। ২০১৭ সালে প্রবল বৃষ্টি ও ভূমিধসে দেশটির ১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়।
সূত্র : আলজাজিরা