বৃক্ষটি চিলিতে ‘গ্রেট গ্র্যান্ডফাদার’নামে পরিচিত। ছবি : সংগৃহীত
চিলির ঘন অরণ্যে ডালপালা মেলে থাকা বিশালাকার একটি বৃক্ষ বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো গাছের স্বীকৃতি পাওয়ার পথে।
বৃক্ষটির বয়স পাঁচ হাজার বছরেরও বেশি বলে জানা গেছে। বৃক্ষটি চিলিতে ‘গ্রেট গ্র্যান্ডফাদার’ নামে পরিচিত।
বয়সের হিসাবে মমির বয়সকেও ছাপিয়ে গেছে এই গ্রেট গ্র্যান্ডফাদার। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া তার একটি শিকড়ের ব্যাসার্ধই ১৩ ফুট। আর দৈর্ঘ্যে সেটি প্রায় ৯২ ফুট।
এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো বৃক্ষের রেকর্ড ছিল ‘মেথুসেলা’র দখলে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ওই গ্রেট বেসিন বিস্লকোন পাইন গাছটি চার হাজার ৮৫০ বছরের পুরোনো।
এত বছর ধরে কীভাবে বিরূপ পরিবেশের ঝড়ঝাপ্টা সামলে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখল এই গ্রেট গ্র্যান্ডফাদার, তা জানতে বৃক্ষটির থেকে তার অংশ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ চিলির অরণ্যের এই বৃক্ষটির প্রকৃত বয়স জানতে এর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় নেমেছেন একদল বিজ্ঞানী। তার মধ্যে রয়েছেন আর্জেন্টিনার অস্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তোনিয়ো লারা।
চিলির সেন্টার ফর ক্লাইমেট সায়েন্স অ্যান্ড রেজ়িলিয়েন্সের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি।
গবেষক লারা বলেন, ‘এই গাছটি উত্তরজীবী। অন্য কোনো গাছের এত বছর বেঁচে থাকার সুযোগ হয়নি।’
চিলির রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দক্ষিণে লস রিওয় অঞ্চলের অরণ্যে একটি খাদের ধারে রয়েছে বৃক্ষটি।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সরলবর্গীয় চিরহরিৎ এই গাছটি আসলে ফিৎরোজোয়া কাপ্রেসোদেস প্রকৃতির। লাতিন আমেরিকায় এটি স্থানীয় গাছ হিসেবে পরিচিত।
কিছু দিন আগে পর্যন্ত ঘণ্টাখানেক হেঁটে অরণ্যের গভীরে গিয়ে বৃক্ষটির সঙ্গে ছবি তুলতে যেতেন পর্যটকরা। তবে এর বয়স নিয়ে হইচই শুরু হতেই এর পাহারায় রেঞ্জারের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ১৯৭২ সালে চিলির এই অরণ্যে ঘোরাফেরা করার সময় এই গাছটিকে খুঁজে পেয়েছিলেন ওয়ার্ডেন আনিবাল হেনরিকুয়েজ়। তার পর থেকে এর সম্পর্কে কৌতূহলী হয়ে ওঠেন বিজ্ঞানীরা।
বৃক্ষটির খোঁজ পাওয়ার প্রায় ষোলো বছর পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান হেনরিকুয়েজ়। তবে আমৃত্যু এটির কথা নাকি গোপন রাখতে চেয়েছিলেন তিনি।
গাছটির কথা গোপন রাখার কারণ কী? হেনরিকুয়েজ়ের মেয়ে ন্যান্সি সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, ‘এই গাছটি যে অত্যন্ত মূল্যবান, তা বুঝতে পেরেছিলেন বাবা। তাই পর্যটক বা আমজনতার থেকে এর অস্তিত্ব গোপন রেখেছিলেন।’
২০২০ সালে বৃক্ষটির কেন্দ্রস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহে নেমেছিলেন বারিচিভিচ ও লারা। তাদের সঙ্গে ছিল বিশেষজ্ঞ দল। কিন্তু কেন্দ্রস্থল পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি তারা।
তবে গাছটির নমুনা পরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞদের দাবি ছিল, সেটি প্রায় আড়াই হাজার বছর পুরোনো।
বারিচিভিচের মতে, বৃক্ষটির সম্ভাব্য পথের ৮০ শতাংশ দেখে মনে হচ্ছে, এটি পাঁচ হাজার বছরের পুরোনো হবে। শিগগিরই এর প্রকৃত বয়স নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে। সে জন্য ‘ডেনড্রোক্রোনোলজি’ নামে এক পরীক্ষার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
বারিচিভিচ বলেন, ‘এ ধরনের প্রাচীন গাছের বিশেষ ইতিহাস রয়েছে। কারণ এরা প্রতিরোধের প্রতীক। কীভাবে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়, তা জানে এরা। এ ধরনের গাছ আসলে প্রকৃতির সেরা অ্যাথলেট।’
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.