প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৫৬ পিএম
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:১২ পিএম
মিসরের একটি মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান ও ইসলামিক জ্ঞান অর্জনের সংকল্পের দ্বারা উজ্জীবিত হয়েই এমন পদক্ষেপ নেয় মামাদু সাফায়উ ব্যারি। ছবি : সংগৃহীত
অনেকেই নিজের স্বপ্নকে সত্যি করতে
হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন। এবার এমনই এক কঠিন কাজ করেছেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনির এক
যুবক। তিনি তার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে শুধু সাইকেল চালিয়ে চার হাজার কিলোমিটার
পথ পাড়ি দিয়েছেন।
২৫ বছর বয়সি ওই যুবকের নাম মামাদু সাফায়উ
ব্যারি। একটি সন্তানও রয়েছে তার। মিসরের রাজধানী কায়রোর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে
ইসলামিক স্টাডিজ কোর্সে ভর্তির লক্ষ্যে মে মাসে বাড়ি ছাড়েন তিনি। পরে সাইকেলে করে পশ্চিম
আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ পার হয়ে মিসরে আসেন ব্যারি। তবে এই যাত্রার সময় তিনবার আটক হন
এই যুবক।
মিসরের একটি মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে
যোগদান ও ইসলামিক জ্ঞান অর্জনের সংকল্পে উজ্জীবিত হয়েই এমন পদক্ষেপ নেন তিনি।
তার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবল একটি আসনই অর্জন করেননি বরং একটি পূর্ণ
বৃত্তিও পেয়েছেন ব্যারি।
ব্রিটিশ ম্যাগাজিন টাইমস হায়ার এডুকেশন
অনুসারে, আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় ৯৭০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। আজহার বিশ্ববিদ্যালয়কে ইসলামী শিক্ষার একটি সম্মানিত
কেন্দ্র হিসেবেও চিন্তা করা হয়।
ব্যারি বলেন, 'আমি জানতাম যে এই কোর্সটি বহন করার সামর্থ্য আমার নেই। কিন্তু তারপরও একটি সাইকেলে চার মাসের যাত্রা শুরু করি। এ সময় পশ্চিম আফ্রিকার কিছু দেশ ভ্রমণ করেছি। এর মধ্যে মালি, বুরকিনা ফাসো, নাইজার, টোগো, বেনিন ও চাদ অন্তর্ভুক্ত ছিল।'
তিনি বলেন, 'এই দেশগুলোর
মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করা খুব কঠিন। এই দেশগুলো সম্প্রতি বহু রাজনৈতিক অস্থিরতা, অভ্যুত্থান
ও সহিংসতা দেখেছে। ফলে এ সময়ে তাদের তেমন কোনো নিরাপত্তা নেই। মালি ও বুরকিনা ফাসোতে
লোকেরা আমার দিকে এমনভাবে তাকিয়ে ছিল যেন আমি একজন খারাপ মানুষ। সর্বত্র আমি সামরিক
বাহিনীকে তাদের বন্দুক ও গাড়ি নিয়ে টহল দিতে দেখতাম।'
ব্যারি আরও বলেন, তিনি দুবার বুরকিনা
ফাসো ও একবার টোগোতে গ্রেপ্তার হন। পরে চাদে পৌঁছালে একজন সাংবাদিক তার সাক্ষাৎকার
নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরেন। এতে বহু মানুষ তার দুর্দশার কথা জনতে পারে
ও বিভিন্ন জায়গা থেকে সাহায্য আসতে শুরু করে।
অবশেষে ব্যারি ৫ সেপ্টেম্বর তার স্বপ্নের
বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান এবং ইসলামিক স্টাডিজ কোর্সের জন্য নির্বাচিত হন। পরে আল-আজহার
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের ডিন ড. নাহলা এলসেইডি তাকে বৃত্তি প্রদান করেন।
সূত্র : খালিজ টাইমস