প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৩০ পিএম
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৫৫ পিএম
করোনার মতো ডেঙ্গুকেও গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ’সবাই করোনাকে যে রকম গুরুত্ব দিয়েছিল এবং ঐক্যবদ্ধভাবে করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করেছিল, তাতে করোনাযুদ্ধে আমরা সফল হয়েছিলাম। জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে ডেঙ্গুর মতো রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধেও আমাদের সে রকম সতর্ক ও সচেতন হতে হবে।‘
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনা সম্পর্কিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী, সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
মতবিনিময় সভার আগে নগরভবনের সামনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে নগরবাসীদের সচেতন করার লক্ষ্যে একটি শোভাযাত্রায় অংশ নেন তারা।
বিভিন্ন দেশের সমসাময়িক পরিস্থিতি তুলে ধরে তাজুল ইসলাম বলেন, ’বর্তমানে ১২৯টি দেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে সারা পৃথিবীতেই এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। তবে আশার কথা হলো, ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ হ্রাস করা সম্ভব। সেজন্য প্রধান কাজ হচ্ছে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা।’
এ সময় তিনি এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বা লার্ভা জন্মানোর মতো উপযুক্ত পরিবেশ আছে—এ রকম বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিস আদালতকে বড় অঙ্কের জরিমানা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মন্ত্রী বলেন, ’নানাভাবে সতর্ক করার পরও মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলার মতো অসচেতনতাকে ক্ষমা করার সুযোগ নেই।’
বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের ডেঙ্গু প্রতিরোধবিষয়ক মতামত তুলে ধরে তিনি বলেন, ’এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস না করে ডেঙ্গুর সংক্রমণ হ্রাস করার সহজ কোনো উপায় নেই। কারণ মশা এমন একটি প্রাণী, যা যে কাউকেই কামড়াতে পারে।’ এ সময় তিনি এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংসে বিটিআই প্যাকেটের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং তা সাংবাদিকদের দেখান।
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ’প্রতিটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু সচেতনতা তৈরিতে কাউন্সিলররা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডে মসজিদের ইমাম ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সংযুক্ত করা হয়েছে।‘
তিনি বলেন, ’সকল প্রক্রিয়া শেষ করে সিঙ্গাপুর থেকে মশার লার্ভা ধ্বংসকারী জৈব কীটনাশক বিটিআই আনতে সক্ষম হয়েছি। ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সিঙ্গাপুরের একটি বিশেষজ্ঞ টিমের শুক্র ও শনিবার কনফারেন্স হবে। আমাদের কর্মকর্তারা বিশেষজ্ঞ টিমের কাছ থেকে জানবে বিটিআই কীটনাশকটি কীভাবে মিক্সিং হবে, কীভাবে ও কোথায় ব্যবহার হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় রবিবার (৬ আগস্ট) থেকে বিটিআই প্রয়োগ করা হবে।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ’এডিসের লার্ভা পাওয়ায় আমরা অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করছি। সারা বছর এই অভিযান পরিচালনা করা হবে। লার্ভা পেলেই জরিমানা। আমি মন্ত্রী মহোদয়কে অনুরোধ করছি, ১০টি অঞ্চলের জন্য স্থায়ীভাবে ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করার জন্য। যেন তারা দীর্ঘদিন কাজ করে এডিসের লার্ভার উৎসস্থল সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন। এতে দক্ষতার সঙ্গে কাজটি করা সম্ভব হবে।’
এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি কীটতত্ত্ববিদ নিয়োগের জন্যও স্থানীয় সরকারমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান তিনি।