× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ

প্রকৃতিই এখন শেষ ভরসা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:৫৭ এএম

আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:২৪ পিএম

প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছে শিশু ফাতেমা। রবিবার বিকালে বাড্ডার বাসা থেকে মুগদা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ডাক্তারের পরামর্শে মাথায় জলপট্টি দেন মা। ছবি: আলী হোসেন মিন্টু

প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছে শিশু ফাতেমা। রবিবার বিকালে বাড্ডার বাসা থেকে মুগদা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ডাক্তারের পরামর্শে মাথায় জলপট্টি দেন মা। ছবি: আলী হোসেন মিন্টু

এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও কার্যকর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নিতে পারছে না ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। বরং মশার ওষুধ আমদানিতে জালিয়াতি, নগরবাসীকে জেল-জরিমানা করা, হাস্যকর নিয়ন্ত্রণমূলক কার্যক্রম এবং বক্তৃতা-বিবৃতির কারণে সংস্থা দুটি সমালোচিত হচ্ছে। যদিও বছরের শুরুতেই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছিলেন এ সংস্থা দুটিকে। বৃষ্টিপাত কমে এলে বা শুষ্ক মৌসুমে প্রাকৃতিকভাবেই এডিস মশার বংশবিস্তারের সুযোগ কমে যাবে। এডিস ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এই প্রকৃতিগত ঘটনাই এখন নাগরিকদের শেষ ভরসা। 

এদিকে সদ্যসমাপ্ত আগস্ট মাসে দেশে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি (+৩৫.৯%) বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর পরের মাস অক্টোবরে বৃষ্টিপাত আরও কমবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত আর বৃষ্টিপাত কমে গেলে এডিসের লার্ভা নষ্ট হওয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসবে। যেহেতু এ মাসেও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই ডেঙ্গুর প্রকোপ পুরোপুরি কমবে না। তবে আগস্টের চেয়ে কমতে পারে। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আরও বাড়তে পারে। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি মেম্বার কীটতত্ত্ববিদ জিএম সাইফুর রহমান বলেন, অক্টোবরে মশা যদি একটু কমে যায়, তাহলে সিটি করপোরেশন বলবে মশা নিয়ন্ত্রণ হয়ে গেছে। এতে মশা সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না। মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কীটতত্ত্ববিদদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, মেয়ররা আজ আছে, কয়েক বছর পর নেই। বিষয়টি একটি বিভাগের অধীনে থাকলে সেটি সারা বছর জবাবদিহির আওতায় থাকে। তারাই তখন দেখবে ক্লাস্টারগুলোর অবস্থা কী, সেগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যায়। তারা ভাইরাস গবেষণাও করবে।

বারবার ভুল পথে হেঁটেছে সিটি করপোরেশন

দীর্ঘদিন ধরে ভোরে মশার লার্ভা নিধনে লার্ভিসাইডিং ও সন্ধ্যার আগে পূর্ণ বয়স্ক মশা মারতে ফগিং করে আসছে সিটি করপোরেশন। কিন্তু এ পদ্ধতিতে কখনও সফলতা আসেনি। ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলামও যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এক আলোচনায় স্বীকার করেছিলেন, ফগিং পদ্ধতি সঠিক নয়। সম্প্রতি ডিএনসিসি সিঙ্গাপুর থেকে আধুনিক প্রযুক্তির কীটনাশক ‘বাসিলাস থুরিনজেনসিস ইসরায়েলেনসিস’ (বিটিআই) আমদানি করে। এ কীটনাশকটি মূলত এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। মশার লার্ভা ধ্বংস করে। কিন্তু ‘বিটিআই’ আমদানিতে জাল-জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসার পর এর প্রয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছে।

কীটতত্ত্ববিদদের মতে, মশা মারতে ফগিং খুবই দুর্বল ও অকার্যকর একটি প্রক্রিয়া। কেননা এটি কেবল উড়ন্ত মশা মারতে ব্যবহার হয়। পরীক্ষার সময় ফগিংয়ের কার্যকারিতা শতকরা ৯০ ভাগের ওপর পাওয়া গেলেও খোলা জায়গায় তা সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ। বদ্ধ ও উন্মুক্ত স্থানে ফগিংয়ের কার্যকারিতার এত বেশি হেরফের হওয়ার কারণ, পরীক্ষার সময় ছোট বাক্স বা একটি নির্দিষ্ট স্থানে মশা আবদ্ধ করে ফগিং করা হয়। এতে মশা পালাতে পারে না, তাই তাদের গায়ে সরাসরি ওষুধ লেগে মারা যায়। কিন্তু খোলা জায়গায় ফগিং করতে গেলে প্রথমেই শব্দ শুনে মশা উড়ে যায়। সেই সঙ্গে খোলা বাতাসে ওষুধ দ্রবীভূত হওয়ায় এর ঘনত্ব কমে কার্যকারিতা হারায়। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পরিচ্ছন্নতার কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করা। এক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রাখতে পারেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধি মশক নিয়ন্ত্রণ কাজে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। 

মশার বংশবিস্তার রোধে এর আগে ড্রেনে গাপ্পি মাছ, জলাশয়ে নোভালরুন ট্যাবলেট প্রয়োগ, হাঁস ও ডোবায় ব্যাঙ ছেড়েছিল দুই সিটি করপোরেশন। ড্রোন দিয়ে মশার উৎসস্থলও চিহ্নিত করা হয়। নির্মাণাধীন ভবনে মশার উৎপত্তিস্থল পাওয়া গেলে জরিমানাও করা হয়। ব্যাপকভাবে পরিচালনা করা হয় মশক নিধন অভিযান। তবে প্রতিবছরই এসব আয়োজন চলে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার পর।

এদিকে রাজধানীর নির্মাণাধীন স্থাপনাগুলোকে মশার বংশবিস্তারের আধার বলা হলেও তা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কার্যক্রম নেই বললেই চলে। নাগরিকদের অভিযোগÑ এক্ষেত্রে রাজউক, গণপূর্ত, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ওয়াসার মতো সেবা সংস্থাগুলোর তেমন তৎপরতা চোখে পড়ে না।

মশা মারতে ১২০০ কোটি টাকা

দুই সিটি করপোরেশনের বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মশা নিয়ন্ত্রণে চলতি অর্থবছরে সংস্থা দুটি খরচ করবে ১৬৮ কোটি টাকা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এ খাতে বরাদ্দ রেখেছে ৪৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বাজেট এ খাতে ১২১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

এর মধ্যে মশার ওষুধ কিনতে ডিএসসিসি ৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ডিএনসিসি ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। ফগার, হুইল, স্প্রে মেশিন পরিবহন খাতে ডিএসসিসি ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা আর ডিএনসিসি ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। মশা নিধনের যন্ত্রপাতি কিনতে উত্তরের বরাদ্দ ৩০ কোটি টাকা, যেখানে দক্ষিণের বরাদ্দ মাত্র ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর বাইরে উত্তর সিটিতে আগাছা পরিষ্কার ও পরিচর্যা বাবদ ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা; মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের বিশেষ কর্মসূচি বাবদ ১ কোটি টাকা; আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে মশা নিধন কার্যক্রমে ৩০ কোটি টাকা; মশা নিধনে চিরুনি অভিযান পরিচালনায় ২ কোটি টাকা এবং ডেঙ্গু মোকাবিলা, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও প্রচারে ৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

ঢাকা সিটি করপোরেশন ভাগ হয়ে দুটি সংস্থা হওয়ার পর ১১ বছরে মশা মারতে প্রায় ১ হাজার ৮০ কোটি টাকা খরচ করেছে। এর মধ্যে ডিএনসিসি খরচ করেছে ৫৮৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আর ডিএসসিসি খরচ করেছে ৪৯৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ করা ১৬৮ কোটি টাকা খরচ করলে এই ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা।

মেয়ররা যা বলছেন 

এ প্রসঙ্গে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এত টাকা খরচ করার পরও মশা নিয়ন্ত্রণে কেন সুফল আসছে না, তা নিয়ে আমরাও ভাবছি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা ডিএনসিসি থেকে তিন স্তরে কাজ করছি। তবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এ মুহূর্তে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা সবচেয়ে জরুরি। তিনি বলেন, বাড়ির ভেতরে গিয়ে মশার ওষুধ দেওয়া সম্ভব নয়। লার্ভিসাইডিং আমাদের রেগুলার প্রোগ্রাম, আরেকটি হচ্ছে হটস্পট ধরে মশা নিধন। আমরা সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছি জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর।

ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনায় আমরা আমূল পরিবর্তন এনেছি। বছরব্যাপী সমন্বিত মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের আওতায় পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ, মানসম্পন্ন কীটনাশক ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং মাঠপর্যায়ে সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। কেউ যদি মশা নির্মূলে আরও কোনো কার্যকর পদ্ধতির পরামর্শ দিতে পারেন, আমি সেটি গ্রহণে সবার আগে প্রস্তুত আছি।

মশা মারা নিয়ে হাস্যরস 

সম্প্রতি ডেঙ্গু প্রতিরোধে ডিএসসিসির এক কাউন্সিলর ও ডিএনডিসির সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান নিয়ে রাজধানীর নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। মশক নিয়ন্ত্রণ অভিযানের নামে লোকদেখানো এ কর্মসূচিতে অনেক নাগরিকের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অনেকের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে। মোহাম্মদপুর এলাকার চন্দ্রিমা মডেল টাউনের ক্ষুব্ধ বাসিন্দা এমদাদুল হক এ নিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

গত ২৮ আগস্ট দক্ষিণ সিটির ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইদুল ইসলাম মাতবর মশক নিধনে গিয়ে বুড়িগঙ্গা নদীর পানিতে নৌকায় করে কীটনাশক ছিটান ও ফগিং করেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীর পানিতে স্রোত থাকলে মশা জন্মায় না। নদীর স্রোতে কীটনাশক স্প্রে করা হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। নদীর জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হতে পারে। কাউন্সিলরের এ কাণ্ড স্থানীয়দেরকে অবাক করেছে।

তবে কাউন্সিলর সাইদুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যায় নদীর ধারে স্থানীয়রা বসেন। তাদের সুরক্ষায় এটি করা হয়েছে। ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বিষয়টি ইতিবাচকভাবে না নিলে আর করব না।

গত ৩১ আগস্ট আগারগাঁওয়ের শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানের আয়োজন করে ডিএনসিসি। এ কর্মসূচি নিয়েও অনেক নাগরিক নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

কারা অধিদপ্তর যেন এডিস লার্ভার কারখানা

গতকাল সোমবার ডিএসসিসির উদ্যোগে বকশীবাজারে অবস্থিত কারা অধিদপ্তরের সদর দপ্তরের কনভেনশন হল ও সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক মশক নিধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলে। এ সময় শতাধিক পরিত্যক্ত পাত্র ও স্থানে এডিস মশার ব্যাপক লার্ভা পাওয়া যায়। পরে এসব লার্ভা ধ্বংস করা হয়। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা সেখানে মশার ওষুধ ছিটান এবং পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান। 

কারা কনভেনশন হল ও সংলগ্ন এলাকায় পরিচালিত এই পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রম নগর ভবনে স্থাপিত কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির সরাসরি তদারকি করেন।

এ প্রসঙ্গে ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, ‘কারা অধিদপ্তরে বিপুল সংখ্যক লার্ভা পাওয়া গেছে। যেটা একদম কল্পনারও বাইরে। স্তূপ করে রাখা পরিত্যক্ত পাত্র ও বাঁশের গর্তে লার্ভা কিলবিল করছিল। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

ডেঙ্গুর ভয়ানক রূপ গত জুলাই-আগস্ট মাসের মতো সেপ্টেম্বরেও অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় আরও ২ হাজার ৮২৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি বছর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৬৪৬ জনে পৌঁছল।

গত আগস্ট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩৪২ জনের মৃত্যু হয়। জুলাইয়ে প্রাণ হারায় ২০৪ জন। আর সেপ্টেম্বরের চার দিনেই মৃত্যু হলো ৫৩ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৮১৮ জন। সব মিলিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার ১৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজার ৪১৯ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো ডেঙ্গু-বিষয়ক নিয়মিত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

দেশে ২০০০ সালে প্রথম ডেঙ্গুর সংক্রমণ শুরু হয়। ওই বছর আক্রান্ত হয় ৫ হাজার ৫৫১ জন এবং মৃত্যু হয় ৯৩ জনের। আর ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। ওই বছর আক্রান্ত হয় ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। আর মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের। ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জন মারা যায়। এর আগে ও পরে এক বছরে ডেঙ্গুতে এত আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়নি। তবে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড এরই মধ্যে ভেঙে গেছে।

লার্ভাপর্যায়ে মশা ধ্বংস করা গেলে ডেঙ্গু কমবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

মশা না কমলে ডেঙ্গু রোগী ও মৃত্যু কমবে না উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, মশা একবার উড়ে গেলে তো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। লার্ভাপর্যায়ে মশাকে ধ্বংস করতে পারলে আগামীতে ডেঙ্গু কম থাকবে।

গতকাল সোমবার সচিবালয়ে চীনের সিনোভ্যাক্স ফাউন্ডেশনের দেওয়া ডেঙ্গুর ২০ হাজার টেস্টিং কিট হস্তান্তর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু ডেঙ্গুর মৌসুমে স্প্রে করলে হবে না, বছরজুড়ে কার্যক্রম চালাতে হবে। যে ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেটির মান ও পরিমাণ সঠিক হতে হবে, যাতে মশার মৃত্যু ঘটে।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু কিছুটা কমলেও জেলাপর্যায়ে বেড়েছে। আগে যা ছিল তা প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি পৌঁছেছে। সবগুলো জেলায় বাড়তি এবং প্রত্যেক জেলায় পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ডেঙ্গুর লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। জেলাপর্যায়ে যারা আক্রান্ত হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই গেছে ঢাকা থেকে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, ঢাকায় চীনা দূতাবাস ও সিনোভ্যাক্সের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা