প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২২ ১৬:২২ পিএম
সালমান রুশদি
ছুরিকাঘাতের জন্য বরং ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঔপন্যাসিক সালমান রুশদিকেই দায়ী করেছে ইরান। তবে ওই হামলাকারীর সঙ্গে কোনো ধরনের সংযোগ থাকার খবর অস্বীকার করেছে তেহরান।
স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের শাটাকোয়া ইনস্টিটিউটের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় মঞ্চে ছুরি হামলার শিকার হন রুশদি। কয়েক ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পর তাকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। শনিবার ওই কৃত্রিম ব্যবস্থা খোলা হলেও তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নয় জানিয়েছেন তার চিকিৎসক।
১৯৮৮ সালে রুশদির চতুর্থ উপন্যাস ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশিত হলে তা বিশ্বজুড়ে বিতর্কের জন্ম দেয়। বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকেই তিনি হত্যার হুমকি পেয়ে আসছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশদির ওপর হামলার পর ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে উচ্ছ্বাস প্রকাশের অভিযোগ তোলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ওই আচরণকে ঘৃণ্য বলে মন্তব্য করেন শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক।
ইরানের সংবাদমাধ্যম ওই হামলাকে ‘ঐশ্বরিক প্রতিশোধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম দৈনিক জাম-ই-জাম গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করেছে, ‘এক চোখ অন্ধ হতে পারে রুশদির।’
ওই হামলা হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছিল, হামলাকারী হাদি মাতার উগ্র শিয়া মতাদর্শে বিশ্বাসী। সে ইরানের ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) নীতিমালার প্রতিও সহানুভূতিশীল।
রুশদির ওপর হামলার পর প্রথমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচনায় আসে সেই ইরান। এই দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি এই লেখকের মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া ঘোষণা করেছিলেন।
রুশদির মাথার দাম ঘোষণা করা হয় ৩০ লাখ ডলার। ইরানের প্রায় তিন দশক আগের সেই ঘোষণা এখনও বহাল আছে।
এমন প্রেক্ষাপটে সোমবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখাপাত্র নেসার কানানি বলেন, ‘তেহরান ওই ঘটনার সঙ্গে যেকোনো ধরনের সংযোগের বিষয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।’ তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কারো কোনো অধিকার নেই।
তবে তিনি বলেন, বাক স্বাধীনতা কিন্তু ধর্ম অবমাননাকে ন্যায্যতা দেয় না।
এই ইরানি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এই হামলায় আমরা সালমান রুশদি ও তার সমর্থকরা ছাড়া অন্য কাউকে দোষারোপ এমনকি নিন্দার যোগ্য মনে করি না।’
এর আগে বিখ্যাত লেখকের ওপর হামলার বিষয়ে উসকানির জন্য ইরানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের নিন্দা জানান ব্লিঙ্কেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, রুশদি সবসময় বাক-স্বাধীনতা, ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা ও সর্বোপরি সাংবাদিকতার স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার থাকেন।
‘বিশেষ করে রুশদির বিরুদ্ধে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সহিংসতায় ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম উসকানি দিচ্ছে। এটা নিন্দনীয়।’
/প্রবা/এইচকে/