প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:৪৫ পিএম
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:৫২ পিএম
দিল্লিতে ভারত জোড়ো যাত্রায় রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধী। ২৪ ডিসেম্বর তোলা। ছবি: সংগৃহীত
কংগ্রেসের সাবেক প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ১১৩ বার নিরাপত্তা প্রোটোকল ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে ভারতের সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)। ২০২০ সাল থেকে কংগ্রেসের চলমান ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ বা এক হও ভারত র্যালিতে রাহুল এসব নিরাপত্তা প্রোটোকল ভঙ্গ করেছেন বলে বৃহস্পতিবার অভিযোগ করা হয়েছে। রাজধানী নয়াদিল্লিতে ভারত জোড়ো যাত্রাকে যথাযথভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি, কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগের এক দিন পর পাল্টা অভিযোগ করল সিআরপিএফ।
স্ক্রলডটইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে সিআরপিএফ জানায়, নয়াদিল্লিতে ভারত জোড়ো যাত্রাকে যথেষ্ট নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি বলে কংগ্রেস যে অভিযোগ করছে, তা ঠিক নয়। তাদের যথেষ্ট নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। এমন কি রাহুল গান্ধীকে নয়াদিল্লিতে এটাও জানানো হয়েছে যে, তিনি নিরাপত্তা প্রোটোকল ভঙ্গ করছেন। রাহুল গান্ধীর নিরাপত্তা প্রোটোকল ভঙ্গের বিষয়টি এখন থেকে গুরুত্বের সঙ্গে নেবে সিআরপিএফ।
তার আগে বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে লেখা এক চিঠিতে রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারত জোড়ো যাত্রা দিল্লিতে প্রবেশের পর প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেয়নি পুলিশ। অথচ রাজধানী নয়াদিল্লিতে প্রবেশের পর যাত্রাকে স্বাগত জানাতে দিল্লিতে জড়ো হয়েছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাসহ লোকসভার অনেক সদস্য। পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, তার ব্যবস্থা নিতে এবং লোকসভার সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অমিত শাহের কাছে আহ্বান জানান রাহুল গান্ধী।
যাত্রা নয়াদিল্লিতে প্রবেশের পর যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি বলে গত রবিবারই (২৫ ডিসেম্বর) অভিযোগ তোলেন কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি কে সি ভেনুগোপাল। তিনি বলেন, ‘যাত্রা নিয়ে রাহুল গান্ধীর নয়াদিল্লিতে প্রবেশের সময় তাদের স্বাগত জানাতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমায়। তখন পুলিশের নিরাপত্তা অপরিহার্য ছিল। অথচ পুলিশ তা পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। এ অবস্থায় কংগ্রেস কর্মীদের রাহুল গান্ধী ও উপস্থিত লোকসভা সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়েছে।’
সরকারের প্রতি ভেনুগোপালে আহ্বান, প্রতিশোধমূলক রাজনীতি থেকে বিরত থাকুন। কংগ্রেসের নেতাদের নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থা করুন।
টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা নরেন্দ্র মোদির ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ভারতের মানুষকে একাট্টা করতে দেশটির দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ু থেকে গত ৭ সেপ্টেম্বর ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু করে কংগ্রেস। যাত্রার নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাহুল গান্ধী।
যাত্রাটি পার্শ্ববর্তী রাজ্য হরিয়ানা থেকে শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) নয়াদিল্লিতে প্রবেশ করে। যাত্রাটি সেখানে নয় দিন বিরতি নেবে। এরপর ৩ জানুয়ারি থেকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ফের হাঁটা শুরু করবে।
পায়ে হেঁটে ১৫০ দিনে তিন হাজার ৫৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জম্মু-কাশ্মিরে গিয়ে যাত্রাটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। যাত্রাটি ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ইতোঃপূর্বে ভারত জোড়ো যাত্রা স্থগিত করতে গত ২০ ডিসেম্বর আহ্বান জানান বিজেপি সরকারের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়া। মান্ডাভিয়ার দাবি, ভারতে নতুন করে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, তাই যাত্রাটি বন্ধ করা উচিত। কিন্তু করোনা নয়, মানুষের জাগরণকে ভয় পেয়েই বিজেপি নেতারা যাত্রা বন্ধ করতে চাচ্ছেন বলে মনে করে কংগ্রেস।
যাত্রা নিয়ে মনসুখ মান্ডাভিয়ার সমালোচনার জবাবে ২১ ডিসেম্বর কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মান্ডাভিয়া যদি করোনা বিধিনিষেধ নিয়ে এতই উদ্বিগ্ন থাকেন, তাহলে বিজেপির নেতারা তা নিয়ে যে কোনো তোয়াক্কা করেছেন না, তা নিয়ে তিনি কিছু বলেন না কেন? সম্প্রতি গুজরাট নির্বাচনে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা যেভাবে গণসংযোগ করেছেন, তা নিয়ে তো তারা টুঁ-শব্দটি করেননি।’
অধীর রঞ্জন চৌধুরী মনে করেন, ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে বিজেপি ব্যাপক ভয়ে আছে। এ যাত্রার মধ্য দিয়ে মানুষ জাগছে। তাই তারা এসব কথা বলছে।