প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:২৬ পিএম
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:১৮ পিএম
নোবেলজয়ী প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
ভারতে বিভাজন ও অসহিষ্ণুতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নোবেলজয়ী প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
গত রবিবার (৮ জানুয়ারি) কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে ছাত্র ও শিক্ষকদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এই কথা বলেন অমর্ত্য সেন। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
তার গুরুতর অভিযোগ, ‘ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ ও ভাষারভিত্তিতে পুরো দেশকে বিভক্ত করা হচ্ছে।’
অমর্ত্য সেন রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ‘বৈচিত্র্যে সমন্বয়’ শীর্ষক আলাপচারিতার আসরে নোবেলজয়ী বলেন, ‘মতের মিল না হলে মানুষকে মারধর করা হচ্ছে। অন্যের বক্তব্য শুনতে আপত্তি জানানো হচ্ছে। মানুষকে মর্যাদা দেওয়ার ক্ষমতা কমেছে। এটাই আমাদের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ।’
তার ভাষ্যমতে, ‘ধর্মে ধর্মে, জাতিতে জাতিতে ভয়ঙ্কর ভুল বোঝাবুঝি এক বড় সমস্যা। একে অপরের বিষয়ে অশিক্ষা, অজ্ঞানতা এর জন্য দায়ী।’
তবে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করে বলেছেন,, এই ধরনের বিভাজন কোনো দেশে বেশি দিন চলেনি। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দলের মধ্যে সমতা আনার প্রয়োজন।’
অমর্ত্য সেনের প্রশ্ন, ‘বৈচিত্র কি সব সময় ভালো?’ তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ভারতকে নানা ধরনের বৈচিত্র গ্রাস করেছে, যা আগে হয়নি।’
প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘দেশে বর্তমানে যে অসহনশীলতার পরিবেশ বিরাজ করছে তার বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। পারস্পরিক বিভেদ দূর করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বৈচিত্র্যের সুবিধা এবং অসুবিধা-দুটোই আছে। তবে আমাদের বৈচিত্র্যের ভালো দিকগুলির দিকে তাকিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
অমর্ত্য সেন বলেন, ‘দেশে কেউ খেতে পাচ্ছেন আর কেউ পাচ্ছেন না, বা কেউ শিক্ষালাভের জন্য বিদ্যালয়ে যেতে পারছেন, কেউ পারছেন না, এটাও তো বৈচিত্র? কিন্তু এই বৈচিত্র কি কাম্য? গান্ধী নিজেও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি পর্বে বলেছিলেন, আমাদের মধ্যে বিভেদ মেটাতে হবে।’
তাজমহলের উদাহরণ তুলে ধরে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘তাজমহলের স্থপতিদের অধিকাংশই ছিলেন হিন্দু। হিন্দু ও মুসসলমানদের মধ্যে সমন্বয়ের সবচেয়ে ভালো উদাহরণ তাজমহল।’