× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘ঘৃণার আদর্শ গ্রাস করছে ভারতকে’

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:১৫ পিএম

আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:৪৯ পিএম

 মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্র তুষার গান্ধী। ছবি : সংগৃহীত

মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্র তুষার গান্ধী। ছবি : সংগৃহীত

ভারতে ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকা হিন্দু জাতীয়তাবাদ মহাত্মা গান্ধীর আদর্শের প্রতি অপমান বলে মনে করছেন তার প্রপৌত্র তুষার গান্ধী। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারতের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সফলতা গড়ে উঠেছে ঘৃণার ওপর ভিত্তি করে। মহাত্মা গান্ধী হত্যাকাণ্ডের ৭৫ বছর পূর্তি সামনে রেখে এ মন্তব্য করেন তিনি।

১৯৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে ধর্মীয় উগ্রবাদী নথুরাম গডসের গুলিতে মারা যান মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। দেশের মুসলিম সংখ্যালঘুদের প্রতি ভারতীয় এ নেতার সহৃদ আচরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন গডসে। হত্যাকাণ্ডের পরের বছরই গডসের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় এবং এখনও তিনি বড় পরিসরেই নিন্দিত।

তবে লেখক ও সামাজিক অধিকারকর্মী তুষার গান্ধী বলছেন ভিন্ন কথা। তার মতে, গডসের নীতি এবং আদর্শ এখন বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়েছে ভারতে। তুষার বলেন, ওই পুরো আদর্শ এখন ভারত এবং ভারতীয় হৃদয়ে ধারণ হচ্ছে, ওই ঘৃণা, মেরুকরণ এবং বিভক্তকরণের আদর্শ।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে তুষার আরও বলেন, তাদের জন্য গডসেকে নিজেদের দেশপ্রেমিক আদর্শ হিসেবে ধরাটা খুব স্বাভাবিক।

মূলত নিজ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) উত্তরণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন তিনি। ৬৩ বছর বয়সি তুষারের মতে, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বহু সাংস্কৃতিক প্রথার অবদমনের জন্য মোদি সরকার দায়ী।

তুষার বলেন, ‘তার (মোদির) সফলতা ঘৃণার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। আমাদের সবার অবশ্যই তা মেনে নিতে হবে। তিনি এমন আগুন জ্বেলেছেন যা একসময় ভারতকে গ্রাস করে নেবে, তা যে নিজ অন্তরের অন্তস্তলে মোদিও জানেন, এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই।’  

নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মোদি সরকার ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় আসার এক বছর পর ২০১৫ সালে গডসেকে উৎসর্গ করে নয়াদিল্লির কাছে মন্দির তৈরি হয়। এমনকি অনেকে গডসের নামে শহরের নামকরণের মধ্য দিয়ে তাকে সম্মানিত করার দাবিও জানান।

গডসে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সদস্য ছিলেন। চরম ডানপন্থি এই হিন্দু দলের সদস্যরা এখনও বেসামরিক মহড়া ও প্রার্থনা বৈঠকের উদ্দেশ্যে একাট্টা হন। আরএসএস অনেক আগেই গডসের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র নেই বলে জানিয়েছে। তবে এখনও তারা বেশ দৃঢ়ভাবেই হিন্দু জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করে। আজকের বিজেপির গড়ে ওঠাটাও কয়েক দশক আগে এই সংঘ থেকেই হয়েছিল। দলটির মূল উদ্দেশ্য ছিল, রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে হিন্দুদের সমস্যা নিয়ে লড়াই করা। 

মোদি প্রায় নিয়মিতভাবেই গান্ধীর আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কখনও তার হত্যাকারীর কোনো নিন্দা করতে দেখা যায়নি তাকে। মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই ভারতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঘটনা বেড়েছে। দেশটির ১৪০ কোটি জনসংখ্যার ১৫ শতাংশজুড়ে রয়েছে মুসলিমরা।

বিজেপি এবং আরএসএস হিন্দুদের ইসলাম এবং খ্রিষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত না হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। এমনকি ‘জনসংখ্যা-সংক্রান্ত ভারসাম্যহীনতা’ বিরুদ্ধে লড়তে পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে।

মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের নিপীড়নে ক্ষমতাসীন বিজেপি ইন্ধন জোগায় বলেও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বিজেপি বরাবরই তা অস্বীকার করেছে।

গত সপ্তাহে ভারত সরকার বিবিসির তৈরি এক তথ্যচিত্র প্রদর্শনীতে বাদ সেধেছে। ইন্ডিয়া দ্য মোদি কোশ্চেন নামের তথ্যচিত্রটিতে গুজরাট দাঙ্গার সময় মোদি কী ভূমিকা রেখেছিলেন, সে বিষয়টি উঠে এসেছে। এরই মধ্যে দুটি পর্ব প্রকাশিত হয়েছে তথ্যচিত্রটির।

এরই মধ্যে তথ্যচিত্রটিকে অপপ্রচার হিসেবে অভিহিত করেছে বিজেপি। টুইটার ও ইউটিউবকে নির্দেশ দিয়েছে নিজ নিজ প্লাটফর্ম থেকে তথ্যচিত্রটি সরাতে। তবে সরকারের চোখরাঙানি উপেক্ষা করে ভারতীয় কিছু ছাত্রসংগঠন এবং বিরোধী দল কংগ্রেস তথ্যচিত্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখানোর ব্যবস্থা নিয়েছে। এ রকম প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে ভারতের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধরপাকড়ের ঘটনাও ঘটেছে।

২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় মোদি ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫৯ হিন্দু তীর্থযাত্রী মারা যাওয়ার পর ওই দাঙ্গা শুরু হয়। অস্থিরতার জেরে প্রায় দুই হাজার ব্যক্তি সে সময় প্রাণ হারিয়েছিলেন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম। সূত্র : এএফপি 


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা