পেশোয়ারে আত্মঘাতী হামলা
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:৩৯ পিএম
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:৪৪ পিএম
৩০ জানুয়ারি পেশোয়ার পুলিশ লাইনের হামলায় অন্তত ১০১ জন নিহত হয়েছেন। ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের পেশোয়ার পুলিশ লাইনের মসজিদে সোমবার এক ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারী একটি মোটরবাইকে করে পুলিশের ইউনিফর্ম পরে মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেছিলেন। ইউনিফর্ম পরা থাকায় তাকে গেটে আটকানো যায়নি। বৃহস্পতিবার প্রদেশের পুলিশপ্রধান এসব কথা জানান।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের পুলিশপ্রধান মোয়াজ্জাম জাহ আনসারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা মসজিদ প্রাঙ্গণের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখেছি। এতে দেখা যায়, প্রাঙ্গণের মূল ফটক দিয়ে হামলাকারী একটি বাইকে চড়ে প্রবেশ করেন। ঢুকে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে নির্দিষ্ট স্থানের খোঁজ নেন। এর অর্থ হামলাকারীর কাছে এই প্রাঙ্গণ পরিচিত ছিল না।’
সোমবারের (৩০ জানুয়ারি) হামলায় অন্তত ১০১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০০ জন। হতাহতদের অধিকাংশই পুলিশ সদস্য। এ ঘটনায় ২০ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সতর্ক বার্তা
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এতটা নিরাপদ স্থানে হামলা হওয়ায় পুলিশদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) কয়েক ডজন পুলিশ সদস্য হামলার প্রতিবাদে পেশোয়ারের নানান স্থানে বিক্ষোভ করেছেন। তারা হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, নিরাপত্তাব্যবস্থার ব্যর্থতার কারণেই এত বড় হামলা সম্ভব হয়েছে।
এদিকে ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) হামলার দায় স্বীকার করে। কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
মোয়াজ্জাম জাহ আনসারি বলেন, টিটিপির সঙ্গে অনেকগুলো সমমনা সংগঠন রয়েছে। তাদের একটি জামাতুল আহরার। তারাই এই হামলা চালিয়েছে। কিন্তু মসজিদের মতো স্পর্শকাতর স্থানে হামলা হওয়ায় টিটিপি ওই ঘটনা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিচ্ছে।
পেশোয়ারভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠীবিষয়ক গবেষণা সংগঠন খোরাসান ডায়েরির সম্পাদক ইফতিকার ফেরদাউস বলেন, ‘পুলিশের ইউনিফর্ম পরে ওই রকম নিরাপদ একটা স্থানে জঙ্গি প্রবেশ করতে পারা ভয়াবহ ব্যাপার। এটার অর্থ হলো, নিরাপত্তাব্যবস্থায় ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে যথাযথ কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই। এই হামলা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। এটা একটা সতর্ক বার্তা, জেগে ওঠার ডাক।’
টিটিপির সঙ্গে ইমরান খান সরকার একটি অস্ত্র বিরতি চুক্তি করেছিল। গত নভেম্বরে সেই চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয় জঙ্গি গোষ্ঠীটি। এরপর তারা পাকিস্তানজুড়ে হামলার ঘোষণা দেয়। সম্প্রতি দেশটিতে বেশকিছু জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র : আলজাজিরা।