রুশ সেনাদের লক্ষ করে রকেট ছুড়ছে ইউক্রেনীয় সেনারা। ছবি : সংগৃহীত
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পরই রুশ সেনারা অভিযান শুরু করে। সে হিসেবে দুই দেশের লড়াইয়ের এক বছর হয়ে গেল আজ।
যদিও সামনে ঠিক কবে নাগাদ এ যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না; কিন্তু ইউক্রেন
পরিস্থিতি নিয়ে এই এক বছর ছিল বিশ্বরাজনীতিতে বেশ ঘটনাবহুল। বেশ কিছু ইস্যুতে দীর্ঘদিনের
চলে আসা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নীতি বদলে গেছে এ যুদ্ধের কারণে।
নিরপেক্ষতার
খোলস ছেড়ে ন্যাটোর দুয়ারে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন
ফিনল্যান্ড সরাসরি রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ, অন্যদিকে সুইডেনের দীর্ঘ ইতিহাস ছিল রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের নিরপেক্ষতা ধরে রাখার। এমনকি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়ও বিশ্বব্যাপী চলা স্নায়ুযুদ্ধেও এ দুই দেশ নিজেদের নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখে।
কিন্তু ইউক্রেনে সামরিক অভিযান, তাদের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। নিরপেক্ষতার খোলস ছেড়ে নিরাপত্তার জন্য এখন এ দুই দেশ ন্যাটোর দুয়ারে।
যদিও তুরস্ক ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশ হওয়ায় এখনও তাদের সদস্য হওয়া
নিশ্চিত নয়। এর পরও তাদের নীতিতে এত বড় পরিবর্তন কিছুদিন আগেও ভাবা যেত না।
রুশ গ্যাসনির্ভরতা,
ইউরোপে চিন্তার ভাঁজ
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে একের পর নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে মস্কো। তবে এতে বুমেরাং হয়েছে ইউরোপেরও। কারণ রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ করে দেওয়ায় এরই মধ্যে দেশটিতে বিদ্যুৎ নিয়ে সংকট দেখা দিয়েছে, বাড়াতে হয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম।
নাগরিকদের
মধ্যেও দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। ফ্রান্স, জার্মানি, চেক রিপাবলিকের মতো দেশ দেখছে রেকর্ড
মুদ্রাস্ফীতি। ইউরোপের অনেক দেশে ন্যাটোবিরোধী আন্দোলনও হয়েছে। সব মিলিয়ে ইউক্রেনে সামরিক
অভিযানে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ইউরোপের দেশগুলোতেও।
রাশিয়ার আরও
কাছাকাছি চীন
পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ চীনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ কেন্দ্র করে। মস্কোর ওপর দেওয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মানেনি বেইজিং। উল্টো যুদ্ধের এই বছরে রাশিয়া থেকে রেকর্ড পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করেছে বেইজিং।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, চীন রুশ সেনাদের অস্ত্র সরবরাহের পাঁয়তারা করছে। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেইজিং।
এ ছাড়া ভারতও এই চলমান যুদ্ধে রাশিয়া থেকে রেকর্ড জ্বালানি আমদানি করেছে। আরব বিশ্বের সঙ্গেও উষ্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে পেরেছে রাশিয়া।
আরও কাছাকাছি ন্যাটো
পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধে আরও কাছাকাছি এসেছে ন্যাটো দেশগুলো। বিশেষ করে যুদ্ধকালীন ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিতে প্রতিটি ন্যাটোভুক্ত দেশ এগিয়ে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পর্যন্ত বলেছেন, ন্যাটোর ইতিহাসে এর সদস্যরা সবচেয়ে কাছাকাছি এবং ন্যাটোভুক্ত দেশের সীমানা রক্ষায় সংস্থাটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইউক্রেন যুদ্ধ
সৃষ্টি করেছে পারমাণবিক সংঘাতের শঙ্কা
ন্যাটোর সহায়তায় রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে প্রবল লড়াই করছে ইউক্রেনীয় সেনারা। অনেক রুশ সেনা হতাহতের বিষয়টি বেশ কয়েকবার স্বীকার করেছে খোদ ক্রেমলিন। এমন পরিস্থিতিতে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের।
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বেশ কয়েকবারই বলেছেন, পারমাণবিক শক্তিশালী দেশ যুদ্ধে হারতে পারে না। সম্প্রতি পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত চুক্তি থেকে বেরিয়েও গেছে মস্কো।
এর আগে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিত দিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, প্রয়োজনে হাতে থাকা সব উপায় তারা ব্যবহার করবেন। এ ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধের ইস্যুতে জাতিসংঘ মহাসচিবও বলেছিলেন, পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি এখন বাস্তব।
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.