রুশ হামলা ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর একটা বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। এক শিশুকে নিয়ে অসহায় মা। গত মার্চে মারিউপোল থেকে তোলা। ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য চীন ১২ দফার একটি শান্তি প্রস্তাব দিয়েছে। রাশিয়া, ইউক্রেন ও অন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছে বৃস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে এ শান্তি প্রস্তাব দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি চীনের শান্তি প্রস্তাবকে বাঁকা চোখে দেখছে।
চীনের শান্তি প্রস্তাবে বলা হয়, রাশিয়া ও ইউক্রেনকে যথ তাড়াতাড়ি সম্ভব আলোচনার টেবিলে আনার জন্য সব পক্ষকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সব পক্ষের সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানাতে হবে। রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে।
চীনা শান্তি প্রস্তাব প্রকাশের পরপর তা নিয়ে মন্তব্য করতে শুরু করেছেন পশ্চিমা নেতারা। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এস্তোনিয়ার রাজধানী তালিনে ন্যাটোপ্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, যুদ্ধ বন্ধের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে চীনের বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। কারণ তারা এখন পর্যন্ত ইউক্রেন হামলার সমালোচনা করেনি। তাছাড়া যুদ্ধ শুরুর কয়েক দিন আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি করেছেন। তাই মধ্যস্থতাকারীর মতো সুবিধাজনক অবস্থানে নেই বেইজিং।
একই দিন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দেয়ালিয়েন ও ন্যাটোপ্রধানের প্রতিধ্বইন করে বলেন, না, চীন কোনো শান্তি প্রস্তাব দেয়নি। তারা কিছু মূলনীতি প্রকাশ করেছে। কিন্তু চীন যাই করুক, তা বিশেষ প্রেক্ষাপটে দেখতে হবে। তারা যুদ্ধের আগ মুহুর্তে রাশিয়ার সঙ্গে অন্তহীন বন্ধুত্বের চুক্তি করে, এই মূলনীতি প্রস্তাব করছে। এ বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্ট জ্যাক সুলিভান সিএনএনকে বলেন, চীনা প্রস্তাবের প্রতি আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া হল, একটা পয়েন্টেই গোটা প্রস্তাবটা বাতিল হয়ে যায়। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সব জাতির সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।
সুলিভানের প্রশ্ন, সব জাতি বলতে এখানে কাকে কাকে বোঝানো হয়েছে? কই, ইউক্রেন তো রাশিয়াকে আক্রমণ করেনি। ন্যাটোও তো রাশিয়াকে আক্রমণ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রও তো রাশিয়াকে আক্রমণ করেনি। তাহলে, সব জাতির সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন আসল কোথা থেকে?
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধ বন্ধের চীনা প্রস্তাবের প্রতি একটু নরম সুরে মন্তব্য করেছে জার্মান সরকারের এক মুখপাত্র। শুক্রবার সাংবাদিকদের ওই মুখপাত্র বলেন, চীনা প্রস্তাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাধান বাদ পড়েছে। যেমন প্রস্তাবে ইউক্রেনের ভূখন্ড থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের কোনো প্রস্তাব করা হয়নি।
তা সত্ত্বেও চীনা প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে জার্মানি। জার্মানির ওই মুখপাত্র বলেন, যুদ্ধ বন্ধের বিষয় চীন ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছে, এটা ইতিবাচক দিক।
তবে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ে চীনা প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চীনা প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে প্রতিক্রিয়া জানানোর কথা জানিয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ হামলা ২৪ ফেব্রুয়ারি এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এই মধ্যে ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ ভূখন্ড দখলে নিয়েছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, উভয় পক্ষের প্রায় এক লাখ করে সেনা নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, নিহত হয়েছে ইউক্রেনের প্রায় আট হাজার সাধারণ মানুষ। উদ্বাস্তু হয়েছে ৮০ লাখের বেশি মানুষ। গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর একটা বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে।
সূত্র: আলজাজিরা
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.