প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৩ ১২:১০ পিএম
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর এ বিষয়ে রাশিয়ার `হুমকি’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হেগের যুদ্ধাপরাধ আদালতে আঘাত করার হুমকি দেওয়ার পর গত বুধবার (২২ মার্চ) উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি প্রকাশ করে আইসিসি।
আইসিসির অ্যাসেম্বলি অফ স্টেট পার্টিসের প্রেসিডেন্সি জানিয়েছে, ‘তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতি অটল সমর্থনকে পুনরায় নিশ্চিত করছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের জন্য দায়মুক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের সম্মিলিত অঙ্গীকারকে মূর্ত করে। আমরা সব রাষ্ট্রকে তাদের বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতাকে সম্মান করার আহ্বান জানাই।’
গত সোমবার মেদভেদেভ বলেছিলেন, ‘হেগের আদালতে একটি রাশিয়ার জাহাজ থেকে উত্তর সাগর থেকে একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা সম্ভব।’ তিনি আরও বলেন, ‘সবাই ঈশ্বর এবং রকেটের নীচে চলে। আকাশের দিকে সাবধানে তাকাও।’
গত শুক্রবার জারি করা পুতিনের জন্য আইসিসি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রাশিয়ার নেতার বিরুদ্ধে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় শিশুকে বেআইনিভাবে বিতাড়নের জন্য অভিযুক্ত করেছে। তারা বলেছে, এটি একটি যুদ্ধাপরাধ।
ওই আইনি পদক্ষেপটি আইসিসির আদালতের ১২৩ সদস্য রাষ্ট্রকে পুতিনকে গ্রেপ্তার করতে এবং যদি সে তাদের ভূখণ্ডে পা রাখে তবে তাকে বিচারের জন্য হেগে স্থানান্তর করতে বাধ্য করবে।
যদিও রাশিয়া বা ইউক্রেন কেউই আইসিসির সদস্য নয়, তথাপি কিয়েভ তার ভূখণ্ডে সংঘটিত অপরাধের বিচার করার জন্য আইসিসির আদালতকে এখতিয়ার দিয়েছে। এই ট্রাইব্যুনালের নিজস্ব কোনো পুলিশ বাহিনীও নেই বলে তারা অপরাধীকে গ্রেপ্তারের জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ওপর নির্ভর করে।
একই অভিযোগে রাশিয়ার শিশু অধিকার বিষয়ক প্রেসিডেন্ট কমিশনার মারিয়া লভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করেছে আইসিসি।
মস্কো ওই আদেশগুলোকে ‘অকার্যকর’ হিসাবে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং রাশিয়ার শীর্ষ তদন্ত কমিটি বলেছে, পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। মস্কো আরও বলেছে যে, ১৯৭৩ সালের জাতিসংঘ কনভেনশনের অধীনে রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মান প্রাপ্য।
কমিটি বলেছে, জেনেশুনে একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে ওয়ারেন্ট জারি করার ক্ষেত্রে আইসিসির পদক্ষেপ রাশিয়ার আইনে অপরাধের সামিল।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা মিত্ররা আইসিসির পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আইসিসি স্বীকৃত নয়, তবুও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত শুক্রবার বলেছেন, ‘পুতিন স্পষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধ করেছেন। আইসিসির ওই প্রেপ্তারী পরোয়ানা ন্যায্য।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আইসিসির সকল সদস্যকে ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
সূত্র : আলজাজিরা