প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:০৩ পিএম
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:২৮ পিএম
ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্ত ক্রসিং পয়েন্ট। ছবি: সংগৃহীত
পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরি প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেন থেকে শস্য ও অন্যান্য খাদ্য আমদানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্থানীয় কৃষি খাতকে রক্ষা করতে শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুই দেশের সরকার এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন।
ইউক্রেনের খাদ্যশস্যের অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে উভয় দেশে নিজেদের উৎপাদিত খাদ্যপণ্যের দাম কমে গেছে বলেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিয়েভ এ সিদ্ধান্তের জন্য হাতাশা প্রকাশ করে বলেছে, একতরফাভাবে নেওয়া কঠোর পদক্ষেপ কোনো সমস্যারই সমাধান করবে না।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশগুলোই উৎপাদিত খাদ্যশস্যের তুলনায় সস্তা ইউক্রেনে উৎপাদিত শস্য। তবে দেশটিতে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর কৃষ্ণসাগরের বন্দর অবরুদ্ধ করে দিলে ইউরোপের মধ্যাঞ্চলের বাজারেই রপ্তানি করা হতো এসব খাদ্যশস্য। যে কারণে ওই দেশগুলোতে উৎপাদিত খাদ্যশস্যের দাম ব্যাপক হারে কমে গেছে। যা প্রভাব ফেলছে স্থানীয় কৃষকদের জীবনে।
গত মাসে এরকম পাঁচটি দেশ ইউরোপীয় কমিশনের কাছে একটি চিঠি দেয়। তাতে বলা হয়, শস্য, তৈলবীজ, ডিম, মুরগি ও চিনির মতো পণ্যগুলোর সরবরাহ নজিরবিহীন মাত্রায় বেড়েছে। যে কারণে ইউক্রেনের কৃষিপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এখন শুল্ক নিয়ে বিবেচনা করা উচিত।
নির্বাচনী বছরে অর্থনীতি স্থবিরতার মধ্যে নিমজ্জিত পোল্যান্ডের ক্ষমতাসীন আইন ও বিচার পার্টির (পিআইএস) জন্য একটি রাজনৈতিক সমস্যা তৈরি করেছে বিষয়টি।
পিআইএস নেতা জারোস্লো কাচজিনস্কি দলীয় এক সমাবেশে বলেন, আজ সরকার একটি প্রবিধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আওতায় পোল্যান্ডে শস্যসহ আরও বিভিন্ন ধরনের পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করা হবে। শস্য থেকে মধু পর্যন্ত এই পণ্যগুলোর তালিকায় রয়েছে।
ইউক্রেনের কৃষিনীতিমালা ও খাদ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, পোল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞাটি দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক চুক্তির বিরোধী। তাই বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বুঝতে পারছি যে পোল্যান্ডের কৃষকরা একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। তবে ইউক্রেনের কৃষকেরা এখন সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছে, আমরা তার ওপর জোর দিচ্ছি।’
পোল্যান্ডে এ সিদ্ধান্তের পর শনিবার হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের সরকারও এ নিষেধাজ্ঞায় যোগ দেয়। তারা বলে, স্থানীয় কৃষকদের মারাত্মক ক্ষতির কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
হাঙ্গেরি শস্য ও অন্যান্য খাদ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা কখন থেকে কার্যকর হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি। তবে বলেছে, আগামী জুনের শেষ নাগাদ এর মেয়াদ শেষ হবে।
পোল্যান্ডের পিআইএস নেতা কাচজিনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের একনিষ্ঠ বন্ধু ও মিত্র হয়ে আমরা পাশে আছি ও থাকব। আমরা তাদের সবসময় সমর্থন করব। তবে এটি প্রতিটি রাষ্ট্র, প্রতিটি কর্তৃপক্ষের কর্তব্য আগে তার নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষা করা।’
পোল্যান্ড শস্য সমস্যা নিষ্পত্তি করতে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
হাঙ্গেরির সরকার বলছে, তারা ইউক্রেনের বিষয়ে ইইউ পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত দেবে। পাশাপাশি তারা এটাও আশা করে যে ইউক্রেনের পণ্য আমদানিতে শুল্ক বর্জনের বিষয়টিও পুনর্বিবেচনা করা হবে।
সূত্র: রয়টার্স