প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ১২:২৮ পিএম
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ১২:৫০ পিএম
অগ্নিকাণ্ডে সৃষ্ট ঘন কালো ধোঁয়ায় ক্রিমিয়ার বন্দর শহর সেভাস্তোপলের আকাশ ঢেকে যাচ্ছে। ছবি : আলজাজিরা
ক্রিমিয়ার বন্দর শহর সেভাস্তোপলের জ্বালানি স্টোরেজ ট্যাঙ্কে ড্রোন হামলার পরে বিশাল অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে।
শহরটির গভর্নর মিখাইল রাজভোজায়েভ টেলিগ্রামে মারফত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাশিয়ার নিউজ এজেন্সি তাস জানিয়েছে, শনিবার (২৯ এপ্রিল) গভর্নর মিখাইল রাজভোজায়েভ টেলিগ্রামে লিখেছেন, ‘একটি জ্বালানি ট্যাঙ্কে আগুন লেগেছে। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী একটি ড্রোন হামলার কারণে ওই আগুন লেগে থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, বিশাল ওই অগ্নিকাণ্ডে ১ হাজার বর্গমিটার এলাকা পুড়ে গেছে। হতাহতের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ফুটেজ এবং অগ্নিকাণ্ডের চিত্রে দেখা গেছে, আগুনের শিখা জ্বালানি সঞ্চয় ট্যাঙ্কগুলোকে গ্রাস করছে এবং ঘন কালো ধোঁয়ায় শহরের আকাশ ঢেকে যাচ্ছে।
ইউক্রেন বারবার ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ পুনরুদ্ধার করার তার অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে, যেটিকে রাশিয়া ২০১৫ সালে বেআইনিভাবে সংযুক্ত করেছিল।
রাজভোজায়েভ সোমবার রিপোর্ট করেছিলেন যে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী একটি ইউক্রেনীয় সারফেস সামুদ্রিক ড্রোন ধ্বংস করেছে, যেটি ভোরে বন্দরে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল এবং দ্বিতীয় ড্রোনটি বিস্ফোরিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, বিস্ফোরণে বেশ কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের জানালা ভেঙে গেছে কিন্তু অন্য কোনো ক্ষতি হয়নি।
রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের প্রধান নৌঘাঁটি সেভাস্তোপলে সিরিজ হামলার মধ্যে এ আক্রমণটি ছিল সাম্প্রতিকতম।
সেভাস্তোপল এবং অন্যান্য অঞ্চলে পূর্ববর্তী হামলার পরে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে দায়িত্ব স্বীকার করা বন্ধ করে দিয়েছেন।
তবে কিয়েভ বলেছে, রাশিয়ান আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার অধিকার ইউক্রেনের রয়েছে।
ইউক্রেনের আবাসিক এলাকায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ২৫ জন নিহত হওয়ার এক দিন পর সেভাস্তোপলে হামলার ঘটনা ঘটল এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মিত্রদের প্রতি তার সেনাদের যুদ্ধবিমানসহ আরও ভালো বিমান প্রতিরক্ষা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি শুক্রবার রাতে একটি ভিডিওবার্তায় বলেছেন, ‘বিমান প্রতিরক্ষা ও একটি আধুনিক বিমানবাহিনী ছাড়া কার্যকর বিমান প্রতিরক্ষা অসম্ভব। এর সঙ্গে প্রয়োজন আর্টিলারি সাঁজোয়া যান। আমাদের শহরগুলোয়, আমাদের গ্রামগুলোয়, পশ্চিমাঞ্চলে এবং সম্মুখ লাইনের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এসব প্রয়োজন।’
শুক্রবার ভোররাতে উমান শহরে হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ওই হামলায় চার শিশুসহ অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চেরকাসি অঞ্চলের উমানে ১০টি আবাসিক ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। ফ্ল্যাটের একটি ব্লক ধ্বংস করা হয়েছে। হামলায় ১৮ জন আহত হয়েছেন যাদের মধ্যে নয়জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলে রাতের সময় রাশিয়ার গোলাবর্ষণে এক নারী এবং তার দুই বছর বয়সি মেয়েও নিহত হয়েছেন।
সে সময় জেলেনস্কি দিনের শুরুতে টুইটারে লিখেছিলেন, ‘রাশিয়ার হামলা অস্ত্র দিয়ে থামানো যায় এবং আমাদের রক্ষকরা তা করছেন। এটি নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমেও বন্ধ করা যেতে পারে। বিশ্বব্যাপী নিষেধাজ্ঞাগুলো অবশ্যই উন্নত করতে হবে।’
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ ভ্যালেরি জালুঝনি শুক্রবার রাতে ইউক্রেনে ছোড়া মোট ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ২৩ বলে জানিয়েছেন। এর মধ্যে ২১টি গুলি করে ধ্বংস করা হয়েছে। দুটি ড্রোনও ধ্বংস করা হয়েছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাজধানী কিয়েভের কাছেও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল, যার মধ্যে ১১টি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিধ্বস্ত করেছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ শুক্রবার জানিয়েছে, রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের শহর দোনেটস্কে গোলাবর্ষণে সাতজন নিহত ও ১৯ জন আহত হয়েছেন।
সূত্র : আলজাজিরা