প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৩ ০৮:৩৭ এএম
আপডেট : ১৬ জুন ২০২৩ ১১:০৯ এএম
উচ্চ জোয়ার এবং ভারী বৃষ্টিপাতের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের গুজরাটে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়ে’র আঘাতে অন্তত ২২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
তীব্র ঝড়োবাতাসে ভেঙে পড়েছে বাড়িঘর, বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং উপড়ে পড়েছে গাছ।
ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় রাজস্থানের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)।
আইএমডি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়ে’র তীব্রতা কমে আসছে। ঘূর্ণিঝড়টি এখন সমুদ্র থেকে স্থলভাগে চলে গেছে এবং সৌরাষ্ট্র-কচ্ছের দিকে কেন্দ্রীভূত হয়েছে।
আইএমডি ডিরেক্টর মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ১০৫-১১৫ কিলোমিটার হ্রাস পেয়েছে।
রাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, গুজরাটের বিভিন্ন স্থানে ৫২৪টিরও বেশি গাছ এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি ঝড়ের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে কারণে প্রায় ৯৪০ গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আরব সাগরজুড়ে তৈরি হওয়ার পর ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় প্রতি ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটার থেকে ১৪০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুজরাটের জাখাউ বন্দরের কাছে আঘাত হেনেছিল। তবে শুক্রবার সকাল থেকে এটি শক্তি হারাতে শুরু করে।
ডা. এম মহাপাত্র বলেছেন, ‘এর প্রভাবে ১৬ এবং ১৭ জুন রাজস্থানে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’
আবাসন কাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, উচ্চ গতির বাতাস, উচ্চ জোয়ার এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গাছ ও ডালপালা ভেঙে পড়ার বিষয়ে ইতোমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ।
বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেন।
গুজরাট সরকার জানিয়েছে, ৯৪ হাজার উপকূলীয় মানুষকে নিচু এলাকা থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে রাজ্যটির ট্রেন পরিষেবাতেও। প্রায় ৯৯টি ট্রেন স্বল্প সময়ের জন্য বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে ভারতের পশ্চিম রেলওয়ে।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) ১৮টি দল, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ) ১২টি দল, রাজ্য সড়ক ও ভবন বিভাগের ১১৫টি দল এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বিভাগের ৩৯৭টি দল উপকূলীয় জেলাগুলোর মাঠে রয়েছে।
আগামীকাল পর্যন্ত সেখানে মাছ ধরার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বিখ্যাত দেবভূমি দ্বারকার দ্বারকাধীশ মন্দির এবং গির সোমনাথ জেলার সোমনাথ মন্দিরও বৃহস্পতিবার বন্ধ রাখা হয়।
গুজরাটের জামনগর বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জরুরি পরিস্থিতিতে বিমানবন্দর পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ডিজেল ও পেট্রোল মজুদ করা হয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি