প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৩ ১২:৩২ পিএম
আপডেট : ২০ জুন ২০২৩ ১২:৪৩ পিএম
বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব পিপলে বৈঠক করেন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও শি জিনপিং। ছবি : সংগৃহীত
তাইওয়ানের সঙ্গে সরাসরি কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু কয়েক বছর ধরে বেইজিংয়ের আগ্রাসি মনোভাবের বিরুদ্ধে তাইওয়ানকে সমর্থন করে আসছে ওয়াশিংটন।
এ অবস্থার মধ্যে চীনের মাটিতে পা রেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বেইজিংয়ে নেমে তিনি বলেন, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র।’
তিনি আরও বলেন, ওয়াশিংটন এখনও ‘এক চীন’ নীতিতে বিশ্বাস করে।
তার এ মন্তব্য চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষতে কিছুটে প্রলেপ দিতে পারে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।
যদিও এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একাধিকবার দাবি করেছেন, চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায় তাহলে তারা তাইওয়ান রক্ষায় এগিয়ে আসবে।
কিন্তু ব্লিঙ্কেনের ওই মন্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের ‘তাইওয়ান নীতি’ নিয়ে ফের সংশয় তৈরি হলো। তাইওয়ান ইস্যুতে বারবারই সম্পর্ক বিগড়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের।
এদিকে আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে সে দেশের অর্থনীতির দিকে নজর দিতে হবে বাইডেন প্রশাসনকে। আর মার্কিন অর্থনীতির প্রসার ঘটানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে চীন।
আবার আগামী বছর তাইওয়ানেও নির্বাচন রয়েছে। বেশ কয়েক মাস ধরেই তাইওয়ানসংলগ্ন এলাকায় নিজেদের বাহুবল দেখিয়ে আসছে চীন। এমনকি বহুবার তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে চীনা যুদ্ধবিমান। এ আবহে চীন যদি তাইওয়ানের ওপর সত্যি সত্যি হামলা করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে কৌতূহলী সবাই।
গত আগস্ট থেকেই তাইওয়ানকে ঘিরে ধরে ব্যাপক সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছিল চীন। মার্কিন কংগ্রেসের প্রাক্তন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে যাওয়ার পর চীনা হামলার আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছিল কয়েক গুণ। তবে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ পরিস্থিতিতে ব্লিঙ্কেনের ‘এক চীন’ নীতি নিয়ে এ মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত বিশ্লেষকদের।
এদিকে ব্লিঙ্কেন তাইওয়ান ইস্যুতে এটাও বলেন, ‘কোনো পক্ষই যাতে একতরফাভাবে স্থিতাবস্থা না বদলায়।’ এদিকে কয়েক বছর ধরে তাইওয়ানের সেনাকে যুদ্ধ সরঞ্জাম সরবরাহ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার (১৯ জুন) বেইজিংয়ের তিয়ান আনমেন স্কয়ারের পঞ্চিমে অবস্থিত গ্রেট হল অব পিপলে ব্লিঙ্কেন ও শি জিনপিংয়ের বৈঠক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যার কথা ওই বৈঠকে তুলে ধরেছেন ব্লিঙ্কেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা এড়িয়ে যায় চীন।’
তিনি বলেন, ‘চীনের সঙ্গে সামরিক পর্যায়ে আলোচনার জন্য আবেদন জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে অনেক সময়ই সংঘাত থামানো সম্ভব হতে পারে। তবে চীন এ নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করেনি।’
জানা গেছে, শিনজিয়াং, তিব্বত ও হংকংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়েও জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্লিঙ্কেন।
তা ছাড়া চীনে মার্কিন নাগরিকদের আটকে রাখার বিষয়টিও উত্থাপন করেছেন তিনি।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি, ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে দুজনের মধ্যে।
সূত্র : ডেইলি মেইল