প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৩ ১৫:০৯ পিএম
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৩ ১৫:৩২ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ছবি : সংগৃহীত
ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী গ্রুপ ওয়াগনারের বিদ্রোহের ফলে সৃষ্ট রাশিয়া সংকট দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কর্তৃত্বের ‘প্রকৃত ফাটল’ উন্মোচিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
তিনি রবিবার (২৫ জুন) ওই মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
ব্লিঙ্কেন সিবিএস নিউজ টক শো ‘ফেস দ্য নেশন’কে বলেন, ‘সপ্তাহান্তে ওয়াগনার এবং এর বিদ্রোহী নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের বিদ্রোহ পুতিনের কর্তৃত্বের জন্য একটি সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত হলো।’
যুক্তরাষ্ট্রের এ শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, ‘সুতরাং এটি একটি গভীর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে এবং প্রকৃত ফাটল প্রকাশ্যে এনেছে।’
ব্লিংকেনের ওই মন্তব্যটি ছিল রাশিয়ার উদ্ভুত পরিস্থিতি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্য।
ওয়াশিংটন ওয়াগনারের এমন বিদ্রোহের বিষয়টি নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে তার ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে পরামর্শ করে আসছিল।
এদিকে, পুতিন শনিবার গুরুত্বপূর্ণ এক বক্তৃতায় প্রিগোজিনকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করে অপরাধীদের শান্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন।
কিন্তু পরে বেলারুশের মধ্যস্থতায় একটি সাধারণ ক্ষমার আওতায় ওয়াগনার প্রধানের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ তুলে নেন তিনি।
প্রিগোজিনকে বিচার এড়িয়ে প্রতিবেশি দেশ বেলারুশে চলে যাওয়ার সুযোগও করে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, ইউক্রেন বাহিনী তাদের পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন করে একাধিক আক্রমণ চালিয়ে অগ্রসর হওয়ার দাবি করেছে।
দনবাস অঞ্চলে রাশিয়া বাহিনীকে মোকাবেলা করে সেখানে আরও কিছু এলাকা দখলে নেওয়ার দাবি করেছে তারা। ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হান্না মালিয়ার শনিবার এ খবর নিশ্চিত করেন।
হান্না মালিয়ার বলেছেন, ‘ইউক্রেনীয় বাহিনী ওরিখোভো-ভাসিলিভকা, বাখমুত, দানিভকা, ইয়াগিদনে, ক্লিশচিভকা এবং কুর্দিউমিভকা শহরের কাছে রাশিয়া বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে। ওই যুদ্ধে সকল দিক থেকেই অগ্রগতি রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, রাশিয়া বাহিনী এখনও পূর্ব ইউক্রেনের পুরো দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার চেষ্টা করছে। তা সত্ত্বেও প্রতিদিনই আমরা অগ্রসর হচ্ছি। হ্যাঁ, অগ্রসর হওয়ার গতি ধীর, কিন্তু আমাদের বাহিনী ওই এলাকায় পা রাখছে এবং তারা ক্রমশ অগ্রসর হচ্ছে।’
অন্যদিকে, রাশিয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে কিয়েভের পাল্টা আক্রমণ আকাঙ্ক্ষিত গতির চেয়ে ধীর হলেও এ বিষয়ে ইউক্রেন বাহিনীকে চাপ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
রাশিয়া বাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন ইউক্রেন বাহিনীর অগ্রযাত্রাকে ধীর করে দিচ্ছে বলে বুধবার (২১ জুন) যুক্তরাজ্যের বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন জেলেনস্কি।
তিনি দাবি করেন যে, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের সীমান্ত অঞ্চলের প্রায় ২ লাখ বর্গকিলোমিটার জায়গা রাশিয়ার ল্যান্ড মাইন দ্বারা পরিপূর্ণ।
জেলেনস্কি বলেন, ‘যে কারণে ওই এলাকার মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।’
জেলেনস্কি বিবিসিকে আরও বলেন, ‘কিছু মানুষ মনে করে যে, এই যুদ্ধ হলিউডের সিনেমা। তাই তারা এখনই ফলাফল আশা করছে। কিন্তু, এটা সত্যিকার যুদ্ধ, হলিউডের সিনেমা নয়।’
ইউক্রেনীয় বাহিনী কর্তৃক নিজ দেশের দক্ষিণ এবং পূর্বে আটটি গ্রাম পুনরুদ্ধারের খবর নিশ্চিত করে জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘ইউক্রেন ততক্ষণ কখনোই আলোচনায় বসবে না, যতক্ষণ রাশিয়া বাহিনী ইউক্রেনের ভূখণ্ডে থাকবে।’
লন্ডনে একটি সম্মেলনের ইউক্রেনের মিত্ররা বিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক ও পুনর্গঠন সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় বিবিসিকে ওই সাক্ষাত্কারটি দেন জেলেনস্কি।
বুধবার (২১ জুন) টেলিভিশনে প্রচারিত মন্তব্যে পুতিন বলেছিলেন, ‘কিয়েভ এই মাসের শুরুর দিকে রাশিয়া বাহিনীর দখলকৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধার করার জন্য পাল্টা আক্রমণ শুরুর পর থেকে গুরুতর সামরিক ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হয়েছে এবং ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইনে ‘নিস্তব্ধতা’ লক্ষ্য করেছে মস্কো।
সূত্র : এনডিটিভি