প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৯:৪৭ পিএম
ফরাসি মডেল ও যুদ্ধ ফটোগ্রাফার মারি-লর ডি ডেকার। ছবি : সংগৃহীত
যুদ্ধ ফটোগ্রাফার হিসাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফ্রান্সের মারি-লর ডি ডেকার ৭৫ বছর বয়সে মারা গেছেন।
তার মৃত্যুর খবর শনিবার (১৫ জুলাই) নিশ্চিত করেছে তার পরিবার।
তার পরিবার জানিয়েছে, দীর্ঘ অসুস্থতার পর শনিবার তিনি হাসপাতালে মারা যান।
সাবেক ফরাসি উপনিবেশ আলজেরিয়ায় জন্মগ্রহণ করা মারি-লর ডি ডেকার ফটোগ্রাফিতে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মডেল হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন।
১৯৬০ সালের শেষভাগে তিনি শিল্পী ম্যান রে এবং মার্সেল ডুচ্যাম্প এবং লেখক ফিলিপ সোপল্টের স্মরণীয় ফটোশ্যুটে মডেল হিসাবে অংশ নিয়েছিলেন।
ফটোগ্রাফির শুরুর দিকে তিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধ কভার করেছিলেন এবং তার আপেক্ষিক অভিজ্ঞতার অভাব সত্ত্বেও সাফল্যের দেখা পেয়েছিলেন।.
এ প্রসঙ্গে এক স্মৃতিচারণে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে বলেছিলাম, মানুষ আমাকে দেখে বুঝতে পারবে না যে, আমি একজন সত্যিকারের ফটোগ্রাফার। কারণ, আমার সঙ্গে কেবল একটি পুরানো লাইকা ক্যামেরা ছিল। আমি পরে বুঝতে পেরেছিলাম, এই পুরানো লাইকা একটি বিস্ময় ছিল।’
একজন নারী ফটোগ্রাফার হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়ে তিনি বিশেষ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আপনি যদি একজন নারী হন, তবে আপনাকে কখনওই সিরিয়াসলি নেওয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন নারী হওয়ার তেমনি আবার একটি সুবিধাও আছে। সেটি হলো, তারা আপনাকে এখনই হত্যা করবে না।’
তার মৃত্যুর সংবাদে শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান চাদের মুসা ফাকি মাহামত।
তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘চাদের ইতিহাসের অমর অংশ হলেন মারি-লর ডি ডেকার।’
ডি ডেকার তার ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় অর্থ্যাৎ ১৯৭১ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত গামা ফটো এজেন্সিতে কাজ করেছেন।
এই গামা ফটো এজেন্সির সঙ্গে খুব বাজেভাবে তার সম্পর্কের ইতি ঘটেছিল। যখন তিনি তার তোলা ছবিগুলো ফেরত চেয়েছিলেন, তখন তাকে কেবল সাদা-কালো ছবিগুলো দেওয়া হয়েছিল, রঙিনগুলো নয়৷
সেগুলো পাওয়ার জন্য পরবর্তীতে তাকে আইনি লড়াইয়ে যেতে হয়েছিল এবং ফটোগুলোর ডিজিটাল সংস্করণের জন্য তার কপিরাইট স্বীকৃত হয়৷
ডি ডেকার অভিনেতা ক্যাথরিন ডেনিউ এবং শার্লট র্যাম্পলিং, গায়ক সার্জ গেইনসবার্গ, মোনাকোর ক্যারোলিন এবং ফ্রান্সের সাবেক রাষ্ট্রপতি ভ্যালেরি গিসকার্ড ডি'ইস্টাইংয়ের মতো সেলিব্রিটিদের ছবি তোলার জন্যও পরিচিত।
তিনি জানান, সেই ছবিগুলো থেকে পাওয়া অর্থ বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে তার মিশনের অর্থায়নে সাহায্য করেছে।
তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আপনি যখন গরীবদের ছবি তোলেন, তখন কেউ আগ্রহী হয় না। বিক্রি করার জন্য আপনাকে ধনীদের ছবি তুলতে হবে।’
২০১৩ সালে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে কাজ করার জন্য অ্যালবার্ট কান ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানেট প্রাইজে ভূষিত করা হয় তাকে।
আইনজীবী থিয়েরি লেভির সঙ্গে তার সংসারে দুই ছেলে রয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি