প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৩ ১৪:৫২ পিএম
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২৩ ১৫:২১ পিএম
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (বাঁয়ে) ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ২৩ আগস্ট, বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষার কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে চীন। পাশাপাশি বাংলাদেশে বিদেশি হস্তক্ষেপেরও বিরোধীতা করে দেশটি। এতে করে অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশ উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে বলে মনে করে বেইজিং।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে এক বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এসব কথা বলেছেন। জোহানেসবার্গে ব্রিকসের চলমান ১৫তম বার্ষিক সম্মেলনের এক পার্শ্ববৈঠকে বুধবার (২৩ আগস্ট) তারা দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন। চীনের সংবাদমাধ্যম সিনহুয়ার এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
চীন ও বাংলাদেশের মধ্যেকার বন্ধুত্ব পুরানো উল্লেখ করে শি বলেন, ‘২০১৬ সালে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আমরা কৌশলগত সহযোগিতার পার্টনারশিপে উন্নীত করেছি। এটা আমাদের গভীর পারস্পরিক সহযোগিতার গতিপথকে নির্দেশ করে। তা ছাড়া অবকাঠামো, তথ্য-প্রযুক্তি, নতুন জ্বালানি ও কৃষিসহ অন্য খাতে ঢাকার সঙ্গে বেইজিং সহযোগিতা বাড়াতে চায় বলেও জানান চীনা প্রেসিডেন্ট।‘
চীন ও বাংলাদেশ উভয়ে তাদের উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবন নিয়ে এক জটিল সময় পার করছে জানিয়ে শি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা উন্নয়ন কৌশল শক্তিশালী করতে ও নানা খাতের বাস্তবসম্মত সহযোগিতা আরও গভীর করতে চাই। এ জন্য বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগকে (বিআরআই) অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিতে বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ জানান শি।
স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে চীন ও বাংলাদেশ পরস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করে শি। বলেন, ‘উভয়পক্ষ তাদের কৌশলগত যোগাযোগ আরও মজবুত করবে। দুই দেশ নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে তথ্য ও মতামত বিনিময় করবে।’
সরকারি পর্যায়ের বাইরে দুই দেশের জনগণও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াবে, তাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন শি।
২০১৪ সালে চীনভিত্তিক ব্রিকস ব্যাংক বা নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে (এনডিবি) ২০২১ সালে যোগ দেয় বাংলাদেশ। এনডিবিতে যোগ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেন শি।
শির বিভিন্ন প্রস্তাব ও ধন্যবাদের জবাবে শেখ হাসিনাও চীনা প্রেসিডেন্টের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, শির ২০১৬ সালের বাংলাদেশ সফর দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশকে করোনাকালে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দেওয়ায় চীনের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। বিশেষ করে ওই খারাপ সময়ে চীনের অর্থনৈতিক সহায়তা বাংলাদেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ও জনজীবনের মান বাড়াতে সহায়তা করেছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধাভিত্তিক। তারা একে অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিআরআইয়ের ১০ম বর্ষ পূর্তিতে শিকে অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ এক-চীনা নীতিকে গভীরভাবে বিশ্বাস করে। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বাড়াতে চীনের গুরুত্বপূর্ণ চেষ্টাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। ব্রিকসের মতো জোটের মাধ্যমে বেইজিংয়ের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক আরও গভীর ও শক্তিশালী করতে চাই। ব্রিকস উন্নয়নের নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে বলেও আমি মনে করি।’
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ২২ আগস্ট থেকে ব্রিকসের তিন দিনব্যাপী ১৫তম বার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়। এতে যোগ দিতে সোমবার (২১ আগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকা পৌঁছেন শি জিনপিং। আরও একই সম্মেলনে যোগ দিতে পরের দিন মঙ্গলবার সেখানে পৌঁছান শেখ হাসিনা।
সূত্র : সিনহুয়া