প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০০:২৮ এএম
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:৩৮ পিএম
ভীমরুল কীট। ছবি: সংগৃহীত
এশিয়ার ভীমরুলের আগ্রাসনে ইউরোপের খাদ্য নিরাপত্তায় বিপর্যয় নেমে আসছে। এখনই তা রুখতে না পারলে পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, ২০১৯ সালের এক সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভীমরুল ও এ জাতীয় কীটের হানায় ২০১৯ সালে ইউরোপে ৪২৩ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩) বিবিসির এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, এশীয় জাতের ভীমরুমের আবাস দিনকে দিন বাড়ছে। এতে করে যুক্তরাজ্যে প্রতি বছর মধু আহোরণ উদ্বেগজনক হারে কমছে। সামনের দিনে মৌমাছির প্রজনন ব্যবস্থা ধ্বংসও হয়ে যেতে পারে। কারণ, এগুলো খেয়ে ফেলে ভীমরুলের মতো আগ্রাসী প্রজাতি।
আগ্রাসী ভীমরুল পুরো ইউরোপে সর্বনাশ বয়ে আনতে পারে। যুক্তরাজ্যেও এই প্রজাতি আস্তানা গেঁড়ে বসছে। ইস্ট সাসেক্স, কেন্ট, ডেভন ও ডরসেটে অসংখ্য ভীমরুলের চাক পাওয়া গেছে। অগ্রগণ্য বিজ্ঞানীদের এক বৈশ্বিক প্রতিবেদন থেকে আগ্রাসী এই প্রজাতির হুমকি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা গেছে।
বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, ছোট ছোট প্রাণী ও উদ্ভিদরাজি বিপন্ন হওয়ার জন্য এই ভিনদেশি আগ্রাসী প্রজাতি ৬০ শতাংশ দায়ী। এ কারণে বিশ্বজুড়ে বছরে অন্তত ৩৮০ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে।
ভিনদেশি প্রজাতিগুলো মানুষের মাধ্যমে এমন সব স্থানে পৌঁছে যাচ্ছে, যেখানে স্বাভাবিকভাবে তাদের আস্তানা গাঁড়ার কথা নয়। যেমন, জাপানের গুল্মজাতীয় উদ্ভিত থেকে ছত্রাক, যা অ্যাশ ট্রি (এক ধরনের বৃক্ষ, যা ছাই গাছ নামে পরিচিত) খেয়ে ফেলে।
ভীমরুলের মতো ভিনদেশি প্রজাতিগুলো জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে পাঁচটি বড় ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে, যা দিন দিন আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করছে। সেসব ক্ষতি হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে প্রকৃতি, খাদ্য নিরাপত্তা ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য আগ্রাসী প্রজাতি বড় হুমকি। এই প্রজাতি পৃথিবীর ৬০% প্রাণ ও উদ্ভিদের বিপন্ন হওয়ার জন্য দায়ী। প্রতি এক দশকে অর্থনৈতিক ক্ষতি বাড়ছে অন্তত গুণ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব সমস্যার সমাধান অবশ্য আছে। এর জন্য সীমান্ত ও আমদানি ব্যবস্থা কঠোরভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে রাখতে হবে।
আগ্রাসী প্রজাতিগুলোর মধ্যে এশীয় ভীমরুল একটি। এটি যুক্তরাজ্যে স্থায়ী আবাস গড়ে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সাইমন স্পার্টলি কেন্টের একজন মধুচাষী। তিনি আশঙ্কা করছেন, এশীয় ভীমরুলের আগ্রাসনে তার মধু চাষের মৌমাছির ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে। এই ভীমরুলের কারণে তার চাষের মৌমাছির প্রতি ১৭টির মধ্যে ১০টিই প্রাণ হারাচ্ছে। স্পার্টলির আশঙ্কা, ভীমরুল স্থায়ী আবাস গাঁড়লে কেন্টে মৌমাছি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভীমরুলের চাক দেখলেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খবর দিতে বলা হয়েছে, যেন দ্রুতই সেগুলো অপসারণ করা যায়। এ বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের উদ্ভিদ ও মৌমাছির স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা নিকোলা স্পেন্স।
সূত্র : বিবিসি