প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:০৮ পিএম
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:৩০ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। ছবি : সংগৃহীত
ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের যৌথ স্বার্থ রয়েছে। বাংলাদেশে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের ওপর সরকারের পদ্ধতিগত নিপীড়নের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়েছে। বিভাগের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক সাংবাদিকের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেছেন।
এক সাংবাদিক মিলারের কাছে জানতে চান, জি-২০ সম্মেলনের ঠিক আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বাংলাদেশ সফর করেন। ঢাকায় এক সভায় তিনি বলেছেন, মস্কো এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ প্রতিষ্ঠার যেকোনো প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করবে। একই সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির নাম দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখানে এসে এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।
(মিস্টার মিলার) এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল সম্পর্কে আপনার অবস্থান কী?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি রাশিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলব, যে দেশ তার দুটি প্রতিবেশী দেশকে আক্রমণ করেছে, যারা এখনও ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে এবং সেখানে তারা প্রতিদিন স্কুল, হাসপাতাল এবং আবাসিক ভবনে বোমা হামলা চালাচ্ছে, তাদের অন্য কোনো দেশের ওপর আদেশ চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কথা বলা উচিত নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির ক্ষেত্রে আমি বলব, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অবাধ ও উন্মুক্ত, সংযুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ এবং স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের অভিন্ন লক্ষ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এটাই আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের উদ্দেশ্য এবং এটাই আমাদের অবস্থান।
মিলারের এই জবাবের পর ওই সাংবাদিক দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- বাইডেন ও শেখ হাসিনার মধ্যে ভালো কথোপকথন হয়েছে, যদিও আমরা হোয়াইট হাউস বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি জাতীয় কিছু দেখিনি?
উত্তরে মিলার বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অন্য যেসব নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন সে বিষয়ে হোয়াইট হাউস বিস্তারিত প্রকাশ করেছে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এরপর ওই সাংবাদিক বাংলাদেশে সাংবাদিক নিপীড়নের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মত জানতে চান। তিনি জিজ্ঞেস করেন, বাংলাদেশে দুই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিককে আদালত সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে এবং নিউইয়র্কে নির্বাসিত একজন সাংবাদিকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সরকার সাংবাদিক-প্রতিবেদক ও জ্যেষ্ঠ সম্পাদকদের যে হয়রানি করছে, এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
উত্তরে মিলার বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশে সাংবাদিকরা অপরিহার্য ভূমিকা পালন করেন। তাদের কাজ দুর্নীতি উন্মোচন করে, জনসাধারণের তথ্য জানার অধিকার রক্ষা করে। মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয় সে সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার সুযোগ দেওয়া দরকার। তাদের নির্বাচিত নেতাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং আমি এখানে প্রতিদিন যা বলি তার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করি। হয়রানি, সহিংসতা বা ভয়ভীতি ছাড়াই সাংবাদিকদের কাজ করতে দিতে হবে। সরকারকে জবাবদিহি করার চেষ্টা করে যাওয়া সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের ওপর বাংলাদেশ সরকারের পদ্ধতিগত এবং ব্যাপক নিপীড়নের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।
সূত্র : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের ওয়েবসাইট