প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:২৪ পিএম
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:২৫ পিএম
নার্গিসমুহাম্মদি । ছবি : সংগৃহীত
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন ইরানের কারাবন্দি নারী অধিকারকর্মী নার্গিস মুহাম্মদি। ইরানি নারীদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। নরওয়ের নোবেল কমিটি শুক্রবার (৬ অক্টোবর) এ পুরস্কার ঘোষণা করে।
নরওয়ের রাজধানী অসলোয় এদিন পুরস্কারটি ঘোষণা করেন দেশটির নোবেল কমিটির প্রধান বেরিত রেইস-আন্ডারসেন। তিনি বলেন, নিপীড়িত ইরানি নারীদের জন্য তিনি কয়েক দশক ধরে সংগ্রাম করে আসছেন। সংগ্রাম করছেন মানবাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য। এসব সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি ১৩ বার বন্দি হয়েছেন। তাকে পাঁচবার দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তার এ পর্যন্ত ৩১ বছরের জেল হয়েছে। বেত্রাঘাত করা হয়েছে ১৫৪টি।
৫১ বছর বয়সি মুহাম্মদি নারী অধিকার আন্দোলনের পাশাপাশি লেখালেখিও করেন। তিনি ইরানের ডিফেন্ডারস অব হিউম্যান রাইটস সেন্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ২০০৩ সালে শান্তিতে নোবেল পাওয়া ইরানের আরেক মানবাধিকার কর্মী শিরিন এবাদি এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন।
মুহাম্মদি দুই দশকের বেশি সময় ধরে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরিধান ও মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। এসব আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবরণের পাশাপাশি তাকে নানা ধরনের অত্যাচারের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
২০২১ সালের নভেম্বরে মুহাম্মদিকে সর্বশেষবার গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তাকে তেহরানের ইভিন কারাগারে রাখা হয়েছে। সেখানে ১৬ সেপ্টেম্বর মাহসা আমিনির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তিনি ও অন্য তিন কয়েদি হিজাব পুড়িয়েছেন।
যথাযথভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে গ্রেপ্তার মাহসা আমিনি ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তথাকথিত নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মারা যান। তার মৃত্যুর প্রতিবাদে সারা ইরানে আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনে স্লোগন ওঠে : নারী, জীবন ও স্বাধীনতা।
কঠিন হাতে আন্দোলন দমন করে ইরান সরকার। সরকারি বাহিনীর হাতে অন্তত ৫৫১ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন। এর মধ্যে ৬৮ শিশু। নারী ৪৯ জন।
গত সেপ্টেম্বরে আমিনির মৃত্যুবার্ষিকীর আগে হিজাব বিষয়ে আরও কঠিন আইন করেছে ইরান। কিন্তু তা উপেক্ষা করে তেহরানের মতো দেশটির বড় শহরগুলোয় হিজাববিহীন নারীদের চলাফেরা বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সরকারের ধরপাকড়।
নোবেল কমিটি মুহাম্মদির মুক্তির দাবি জানিয়েছে। এই নারী অধিকারকর্মীকে মুক্তি দেওয়া না হলে ১০ ডিসেম্বর অন্য কাউকে তার তরফে অসলো থেকে এ শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করতে হবে।
সূত্র : আলজাজিরা