প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২২ ১৭:২৯ পিএম
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২২ ১৮:১৮ পিএম
১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ভাষণ শেষে ঋষি সুনাক। ছবি : সংগৃহীত
সাত সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী পেল যুক্তরাজ্য। কোনো দেশের টালমাটাল সময় বোঝার জন্য এ একটা পরিমাপকই হয়ত যথেষ্ট। ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে একের পর এক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যখন গদি ছাড়ছেন, ঠিক তখনই ভরসার কাঁধ উঁচু করে দিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। অল্প সময়ের মধ্যেই তাকে সফলতার ইঙ্গিত দিতে পারতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
বিবিসি ও গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাকিংহাম প্যালেসে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঋষি সুনাক। প্রাথমিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর সুনাককে নতুন সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক আহ্বান জানান রাজা।
রাজার আহ্বানের একটু পরই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বাস ভবন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে প্রবেশ করেন যুক্তরাজ্যের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। সেখানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ভাষণে অর্থনৈতিক সংকট সমাধান ও নিজের দল কনজারভেটিভ পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করা নিজের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ রাজনীতিক।
পাঁচ মিনিটের ভাষণে সুনাক বলেন, ‘এক গভীর অর্থনৈতিক সংকট পার করছে যুক্তরাজ্য। কঠিন এ সময়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা ও নতুন সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা অর্জনই আমাদের প্রধান কাজ। এটা করতে কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সদ্য পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সুনাক বলেন, ‘কর কর্তন করে লিজ ট্রাস অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে চেয়েছিলেন। তার এ সিদ্ধান্ত ভুল ছিল না। আমি তার বিরামহীন কর্মপ্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই।’
ট্রাসের সিদ্ধান্তের ত্রুটির দিকে ইঙ্গিত করে সুনাক মন্তব্য করেন, ‘হ্যাঁ, তিনি (ট্রাস) কিছু ভুল করেছেন। কোনো ধরনের অসৎ বা খারাপ মতলব থেকে তিনি এসব ভুল করেননি। বরং সম্পূর্ণ তার উল্টো। যাই হোক, ভুল ভুলই।’
সুনাকের ভাষণের প্রায় ঘণ্টাখানেক আগে ডাউনিং স্ট্রিটে নিজের বিদায়ী ভাষণ দেন লিজ ট্রাস। এতে কোনো ধরনের ভুল স্বীকার তো তিনি করেনইনি, বরং আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন। রোমান স্টয়িক দার্শনিক সেনেকাকে উদ্ধৃত করে ট্রাস বলেন, ‘আমাকে এ কারণে পদত্যাগ করতে হয়নি যে, সঠিক কাজ করতে আমরা যথেষ্ট উদ্যমী ছিলাম না; বরং আমরা যে এক কঠিন সময় পার করছি, তা মেনে নিতে সাহস দেখাতে পারেননি আমার দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপি। তাই নতুন প্রধানমন্ত্রীকে আমি বলব, আপনাকে যথেষ্ট বেপরোয়া হতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের প্রথম ভাষণে ৪২ বছর বয়সি এ রাজনীতিক রেনার অভিযোগের উত্তর আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। ভাষণে সুনাক বলেন, ‘২০১৯ সালে জনগণ কনজারভেটিভ পার্টিকে যে ম্যানডেট বা দেশ চালানোর ক্ষমতা দিয়েছে, তা কোনো ব্যক্তিকে দেওয়া হয়নি। এটা পার্টিকে দেওয়া হয়েছে।’
বুধবার (২৬ অক্টোবর) পার্লামেন্টে প্রশ্ন-উত্তর পর্বের মুখোমুখি হওয়ার আগে মঙ্গলবারই (২৫ অক্টোবর) সুনাকের মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ শুরু করার কথা। সন্ধ্যা সাতটার (২৫ অক্টোবর) দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় নতুন কোনো মন্ত্রীর নাম ঘোষণা হয়নি। তবে ১১ দিন আগে লিজ ট্রাসের নিয়োগ দেওয়া জেরেমি হান্টই অর্থমন্ত্রী থাকছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রবা/টিএ/টিই