বিতর্কিত দ্বীপ নিয়ে বিবৃতি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:৪৩ এএম
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:০১ পিএম
হরমুজ প্রণালির আবু মূসা, গ্রেটার তুম্ব ও লেসার তুম্বের দ্বীপ নিয়ে ইরান ও আমিরাতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। ছবি : সংগৃহীত
হরমুজ প্রণালিতে ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে তিনটি দ্বীপ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিতর্কিত এসব দ্বীপ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সম্প্রতি একটি বিবৃতি দিয়েছে রাশিয়া। মস্কোর এ ধরনের আহ্বান সার্বভৌমত্বে আঘাত মন্তব্য করে তেহরানে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে ইরান। জানিয়েছে কঠোর প্রতিবাদ।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) ইরানের সংবাদ সংস্থা ইরনার বরাতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
রুশ রাষ্ট্রদূতকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে পরস্পরের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান থাকাটা বাঞ্ছনীয়। বিতর্কিত তিনটি দ্বীপ স্থায়ীভাবে ইরানের। এ বিষয়ে কোনো বিদেশি শক্তির কোনো ধরনের পরামর্শ অগ্রহণযোগ্য।
পারস্য ও ওমান উপসাগরের মাঝখানে হরমুজ প্রণালিতে অবস্থিত দ্বীপ তিনটি হলো আবু মূসা, গ্রেটার তুম্ব ও লেসার তুম্বের। কৌশলগত কারণে দ্বীপগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
আধুনিক সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) গঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তথা ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দ্বীপ তিনটি ব্রিটিশ নৌবাহিনীর অধীনে ছিল। ওই বছর ব্রিটিশ বাহিনী পারস্য উপসাগরীয় এলাকা ত্যাগ করে। সঙ্গে সঙ্গে দ্বীপগুলো দখলে নেয় ইরান। কিন্তু তখন থেকেই দ্বীপগুলো নিজেদের বলে দাবি করে আসছে ইউএই।
মালিকানা প্রশ্নে কয়েকটি আরব দেশ ও রাশিয়া সম্প্রতি একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে দ্বীপগুলোর ওপর সংযুক্ত আরব আমিরাতের মালিকানা দাবি করা হয়।
মালিকানা প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ওই তিনটি দ্বীপের মালিকানা দাবি করে আসছে ইরান। এর আগে এই ৩টি দ্বীপ ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অধীনে ছিল।
চলতি সপ্তাহে আরব-রাশিয়া সহযোগিতা ফোরামের ৬ষ্ঠ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে মরক্কোয়। বৈঠকে রাশিয়ার বিবৃতিতে ওই দ্বীপগুলোর বিষয়টি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে (এ দ্বীপগুলোর) বিতর্ক সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। এ জন্য শান্তিপূর্ণ সমাধানের পদক্ষেপ নিতে হবে। দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সম্ভব না হলে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে যেতে হবে।
রাশিয়ার এ বিবৃতি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ জানায় ইরান। অন্যদিকে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনা করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহ।
হরমুজ প্রণালির ওই দ্বীপের আমিরাতের দাবির পক্ষে রাশিয়া ও চীনের সমর্থন সম্প্রতি বেড়েছে।
বিতর্কিত দ্বীপগুলো নিয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চীনও একটি বিবৃতি দিয়েছিল। ওই বিবৃতির পর প্রতিবাদ জানাতে চীনা রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছিল তেহরান।
গত জুলাইলে প্রায় একই ধরনের একটি বিবৃতি দিয়েছিল রাশিয়া। তখনও তেহরানে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিল ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সূত্র : আলজাজিরা