প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৩৬ এএম
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৪৮ এএম
মহড়ায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা। ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরান। এতে অন্তত দুই শিশু নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও পাঁচ বালিকা। সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসলামাবাদে নিয়োজিত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সীমান্তের কাছাকাছি দক্ষিণ-পশ্চিম বেলুচিস্তান প্রদেশের একটি গ্রামে এ হামলা চালানো হয়। হামলায় ইরানের একাধিক যুদ্ধবিমান ও ড্রোন অংশ নিয়েছে। বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রমালিকানাধীন তাসনিম সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইরান নিখুঁত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে বেলুচিস্তানের জইশ আল-আদল নামক উগ্রবাদী গ্রুপের দুটি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এটি ইরানে জইশ আল-ধুম নামে পরিচিত। বেলুচিস্তানের কোহ-সবজ বা সবুজ পর্বত এলাকায় ছিল ঘাঁটি দুটি।
বুধবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মমতাজ জাহরা বালুচ বলেন, পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ইরানের এমন হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে পাকিস্তান। এ ধরনের কর্মকাণ্ড পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন ও পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। এর পরিণাম হতে পারে ভয়াবহ।
পাকিস্তানে হামলার ১০-১২ ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ভোরে ইরাক ও সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কুর্দিস্তানে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে ইরান। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) এ হামলায় কুর্দিস্তানে অন্তত চারজন নিহত হয়।
ইরাকের পাশাপাশি একই সময়ে উত্তর সিরিয়ায়ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। সেখানে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘান হানা হয়েছে।
পাকিস্তানের ভেতরে ইরানের এ ধরনের হামলা নজিরবিহীন। যে এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে সেখানে দুই দেশের প্রায় ৯০০ কিলোমিটার (৫৫৯ মাইল) সীমান্ত রয়েছে। এ সীমান্ত উভয় দেশের কাছেই উদ্বেগের বিষয় হয়ে রয়েছে। এ অঞ্চলে পাকিস্তান-ইরান উভয়েই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর হামলার শিকার হয়। জইশ আল-আদল নামের গ্রুপটি কয়েক দশক ধরে হালকা বসতিপূর্ণ এ অঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে।
গত মাসে এ গ্রুপের হামলায় এক ডজনের বেশি ইরানি পুলিশ নিহত হয়েছিল। ইরান দাবি করেছিল, পাকিস্তান থেকে এসে সন্ত্রাসীরা হামলাটি চালিয়েছিল। ইউএস ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের মতে, জইশ আল-আদল হলো সিস্তান-বেলুচিস্তানে সক্রিয় সবচেয়ে সক্রিয় ও প্রভাবশালী সুন্নি উগ্রবাদী গ্রুপ।
জইশ আল-আদলকে বিশ্বের কয়েকটি শক্তিশালী দেশ অর্থায়ন করে বলে শোনা যায়। তবে কোন কোন দেশ এ সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে অর্থায়ন করে তা মূলধারার কোনো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এখন পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়নি।
সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি, গার্ডিয়ান