প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৪৫ পিএম
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:০৪ পিএম
শিশুকে সময় দিচ্ছেন বাবা। ছবি : সংগৃহীত
জন্মের পর একটি শিশু খুবই অসহায় থাকে। তখন তার মাতা-পিতার স্নেহ-ভালোবাসা ও যত্নের প্রয়োজন হয়। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব দেশে মাতৃত্বকালীন ছুটি চালু থাকলেও পিতৃত্বকালীন ছুটি এখনও সব দেশে চালু নেই।
কিন্তু ৫০ বছর আগে যৌথভাবে মাতৃ-পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে আইন পাস করেছে সুইডেন। ছুটি চলাকালে নবজাতকের বাবারাও মায়েদের মতো সরকার থেকে বেতন ও অন্য সুযোগ-সুবিধা পান। বিশ্বের যেসব দেশে এখনও পিতৃত্বকালীন ছুটি চালু হয়নি সেগুলো সুইডেন থেকে শিক্ষা নিতে পারে।
১৯৭৪ সালে সুইডেনে মাতৃ-পিতৃত্বকালীর ছুটি বিষয়ক আইন পাস করা হয়। এ আইন নানা সময়ে সংস্কার করা হয়েছে। দেশটিতে শুরু দিকে মাতৃ-পিতৃত্বকালী ছুটি ছিল ১৮০ দিন। সন্তানের বাবা ও মা সুবিধা মতো ভাগ করে ১৮০ দিন ছুটি কাটাতেন। ছুটি চলাকালে রাষ্ট্র তাদের ৯০ শতাংশ বেতন বহন করত। পিতা ছুটি নেওয়া শুরু করলে মাকে ফুল টাইম কাজে ফিরতে হতো।
এখন মাতৃ-পিতৃত্বকালীন ছুটি ৪৮০ দিন করা হয়েছে। বিশ্বের আর কোনো দেশে এত লম্বা মাতৃ-পিতৃত্বকালী ছুটি নেই। ছুটিতে তারা রাষ্ট্র থেকে ৩৯০ দিন পর্যন্ত মূল বেতনের ৮০ শতাংশের সমান সুযোগ-সুবিধা পান। এর বাহিরে ছুটি চলাকালে সন্তান পালনের জন্য তারা দুজনে মিলে দৈনিক ১৬ ডলার অতিরিক্ত পাবেন। আগের মতো ৪৮০ দিন ছুটি ভাগাভাগি করে নেবেন মা ও বাবা।
জনক-জননীর পাশাপাশি সন্তান দত্তক নেওয়া পিতা-মাতা, এলজিবিটিকিউ সদস্য এবং একক পিতা-মাতারাও বর্তমানে মাতৃ-পিতৃত্বকালীন ছুটি পান সুইডেনে।
৭৪ বছর বয়সি কেজেল সার্নল্ড পাঁচ দশক আগে নিজের পিতৃত্বকালীন ছুটির স্মৃতিচারণ করেছেন বিবিসির কাছে। এ সময় তিনি আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। এ সময় তার চোখগুলো ছলছল করছিল।
সার্নল্ড জানান, ১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি তার কোম্পানির থেকে চার সপ্তাহের প্রথম পিতৃত্বকালীন ছুটি পান। তখন তার ছেলের বয়স ছিল আট মাস। ছুটি চলাকালে তিনি ঘর সামলাতেন, রান্না-বান্না করতেন। সন্তানকে সঙ্গ দিতেন। কান্নাকাটি করলে আদর দিয়ে কান্না থামাতেন। সন্তানের ন্যাপি পাল্টানোসহ সব ধরনের পরিচর্যা করতেন। এ সময়টা উপভোগ করতেন বলে জানান সার্নল্ড।
স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইডিশ ইনস্টিটিউশন ফর সোশ্যাল রিসার্চের এগবেষক ইলভা মোবার্গ সুইডেনের আইনটি সম্পর্কে বলেন, এ আইনটির একটি মূল লক্ষ্য ছিল পিতাদের বাড়ির পরিচর্যার কাজে আরও বেশি সংশ্লিষ্ট করা। একই সঙ্গে মায়েদের দ্রুত কাজে ফেরার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া।
সূত্র : বিবিসি