প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৪০ পিএম
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২২ ২১:৪৯ পিএম
একটি ক্ষুধার্ত হাতিরপালকে খাওয়াচ্ছেন এক সরকারি কর্মী। কেনিয়ার রেতেটি হাতির অভয়ারণ্যে। গত ১২ অক্টোবর তোলা। ছবি : সংগৃহীত
কেনিয়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে ২০৫টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে একই সময়ে ৫১২টি কৃষ্ণসার বা নু-হরিণ, ৩৮১টি সাধারণ জেব্রা, ১২টি জিরাফ ও ৫১টি বনমহিষের মৃত্যু হয়েছে। খাবারের উৎস সংকোচন, বিশেষত টানা খরার কারণে পানীয় জলের অভাবে এসব প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। দেশটির পর্যটনমন্ত্রী পেনিনা মালোনজা এক বিবৃতিতে শুক্রবার (৪ নভেম্বর) এসব তথ্য জানিয়েছেন।
আলজাজিরা জানিয়েছে, বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশে টানা খরা চলছে। ৪০ বছরের মধ্যে এমন খরা দেখেনি পূর্ব আফ্রিকা। এতে প্রাণীদের খাবারের উৎসে টান পড়েছে। বিশেষত অনাবৃষ্টির কারণে প্রাণীদের পানীয় জলের ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে চলমান খরায় হাতি, হরিণ ও জেব্রাসহ অন্তত ১৪টি প্রজাতির প্রাণী নানা ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
কেনিয়ার পশু সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করে এমন একটি এনজিও ‘গ্রেভি’স জেব্রা ট্রাস্ট গত সেপ্টেম্বরে এক প্রতিবেদনে জানায়, দেশটিতে তিন মাসে ৪০ গ্রেভি জেব্রার মৃত্যু হয়েছে, যা দেশটির মোট গ্রেভি জেব্রায় প্রায় ২ শতাংশ। কিন্তু আলাদা আরেকটি প্রতিবেদনে ৪৯ গ্রেভি জেব্রার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শুক্রবারের বিবৃতিতে খরায় বন্য পশুপাখির মৃতের যে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে স্বাভাবিক খাবার না পেয়ে অনেক মাংসাশী প্রাণী মৃত প্রাণীর মাংস খাচ্ছে। এতে প্রাণীগুলো আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
কেনিয়ায় নয় মাসে যেসব প্রাণী মারা গেছে, তাদের একটা অংশের মৃত্যু হয়েছে দেশটির বিভিন্ন পার্কে। এসব পার্কে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বিদেশি পর্যটক যায়। দেশটির মোট জাতীয় আয়ের প্রায় ১০ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। আর এ খাতে কাজ করে প্রায় ২০ লাখ মানুষ।
কেনিয়ায় এ বিপুল হাতি ও অন্য প্রাণীর মৃত্যুর খবরটি এমন একসময় এলো, যখন জাতিসংঘের ২৭তম জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা বিষয়ক সম্মেলন (কপ-২৭) দুয়ারে কড়া নাড়ছে। রবিবার (৬ অক্টোবর) থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী কপ-২৭ উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মিসরে অনুষ্ঠিত হবে।
মিসরের লোহিত সাগরের তীরবর্তী শারমুল শেখ নামক পর্যটন শহরের এবারের সম্মেলনে জলবায়ু তহবিল ও ক্ষয়-ক্ষতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য উন্নত দেশগুলোর তহবিলের বিষয়টির একটি সুস্পষ্ট পদ্ধতি ও রূপরেখা চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে।