× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সিএএ

ভোটের আগে ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৪ ২২:৩৭ পিএম

আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৪ ১১:১৪ এএম

ভোটের আগে ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর

ভারতের কার্যকরা হয়েছে বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। এই আইন কার্যকর হওয়ার ফলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারগুলোর মাধ্যমে দেশটিতে কাগজপত্রহীন মুসলিম নাগরিকরা অবৈধ বলে বিবেচিত হবে এবং তাদের গ্রেপ্তার করে ভারত থেকে বিতাড়িত করা যাবে। আইনটির বিরুদ্ধে ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সোচ্চার ছিল। তবে এখন তাদের অবস্থান কী হয়, তা দেখার বিষয়।

ভারতের জাতীয় নির্বাচন (লোকসভা নির্বাচন) তফসিল ঘোষণার আগেই সোমবার (১১ মার্চ )সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সিএএ কার্যকরের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। পার্লামেন্টে আইন পাসের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনের বিধিবিধান তৈরি করেছে গত চার বছর ধরে। 

২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদির সরকার এই আইন পাস করেছিল। আইনে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সিধর্মীয় সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণে ভারতে চলে এসেছেন, এ আইনে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। চার বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর লোকসভা ভোটের ঠিক আগে আইনটি সারা দেশে চালু হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করার ফলে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকেই ওই তিন দেশ থেকে ভারতে আসা বাসিন্দারা নাগরিকত্ব পেতে আবেদন জানাতে পারবেন। আবেদন করতে হবে অনলাইনে।

পশ্চিমবঙ্গে এই আইনের ব্যাপক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদিও বলেছেন, রাজ্যে কিছুতেই সিএএ চালু হতে দেবেন না তিনি।

প্রথম থেকেই এই আইনের বিরোধিতা হয়ে আসছে প্রবলভাবে। আইনটি পাস হওয়ার সময় দিল্লিতে দীর্ঘদিন অবরোধ চলেছে। দাঙ্গাও হয়েছ। সারা ভারতে প্রতিবাদ হয়েছে। প্রতিরোধও হয়েছে। সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ। এবারও বিক্ষোভ–সহিংসতা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সারা ভারতের সব জেলার পুলিশ প্রশাসনকে সতর্ক করে কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, আগেরবারের মতো জেলায় জেলায় যেন ঝামেলা না হয়।

এই আইনের বিরোধিতাকারীদের অভিযোগ, আইনটি ভারতের সংবিধানের পরিপন্থী। কেননা, এই আইনে ধর্মীয় কারণে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য করা হচ্ছে। বিজেপির বক্তব্য, এই আইনে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। যাঁরা ধর্মীয় বৈষম্যের কারণে এ দেশে চলে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

বিতর্কিত এই আইন ভারতে তো বটেই, বিদেশেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করার সময় স্থানীয় এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে মন্তব্য করে বলেছিলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি না, ভারত কেন এটা করল। এই আইনের কোনো প্রয়োজনই ছিল না।’

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বলতে যা বোঝায়

সিএএর ঠিক আগে আসামে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) তৈরি করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল,অবৈধভাবে ঢোকা বিদেশিদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানো। কিন্তু রিপোর্ট পেশের পর দেখা যায়, রাজ্যে মুসলমানের চেয়ে হিন্দু অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা বেশি। তখন থেকেই আসামে এনআরসির রূপায়ন বাতিল হয়ে যায়। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ২০১৯ সালে বলেছিলেন, ‘এক-দুই করে বলছি, প্রথমে নাগরিকত্ব বিল আনা হবে। তা পাস করা হবে। ধর্মীয় কারণে তিন দেশ থেকে চলে আসা সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তারপর এনআরসি হবে এবং সেটা হবে সারা দেশের জন্য।’

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির অন্যতম নীতিনির্ধারক অমিত শাহ গত ১০ ফেব্রুয়ারি জানিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগেই সিএএ কার্যকর করা হবে। সোমবার তার ঘোষণারই প্রতিফলন হলো। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রতিক্রিয়া দেখানো শুরু করেছে। সূত্র : রয়টার্স, এনডিটিভি ও আনন্দবাজার পত্রিকা

রমজানের আগে নাগরিকত্ব আইন চালু এক ধরনের প্ররোচনা : মমতা

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল সন্ধ্যায় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রমজান মাস শুরুর আগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু হতে পারে। এটা এক ধরনের প্ররোচনা।’

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের একটু পরেই কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে। কারণ, তা সরকারি গেজেট আকারে ঘোষণা করা হয়েছে।

এই আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন ধর্মের যেসব মানুষ ভারতে এসেছেন, তাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। শুধু মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ পারবেন না। এই কারণেই আইনটি বিতর্কিত। এই আইন নিয়ে এরই মধ্যে আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে জনবিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যা রোধ করতে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা গতকাল বলেছেন, সিএএ বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতীক বাতিল করতে আসাম সরকার নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানাবে।

সিএএ বাস্তবায়নের ঘোষণার পরে আসামে বড় ধরনের বিক্ষোভের আশঙ্কা করছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। কারণ আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রধানত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ মনে করছেন, সিএএ বাস্তবায়িত হলে আদিবাসী নন এমন মানুষ আদিবাসী অঞ্চলে জমি কিনতে পারবেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন। এতে জমির ওপরে তারা তাদের দখল হারাবেন। যদিও এই আইনের আদিবাসী অঞ্চলে জমি কেনাবেচার ওপরে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেন চার বছর ফেলে রাখার পরে এই সময় সিএ বাস্তবায়িত হতে চলেছে, তা আমরা বুঝতে পারি। সামনেই রমজান মাস শুরু হতে চলেছে, তারপরই আসছে দোল, তারপর রামনবমী। এই সময় এটা চালু করা হচ্ছে। কোনো প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি চাই না, রাজ্যে কোনো ঝামেলা হোক।’

এই আইনকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গেও বড় ধরনের বিক্ষোভের আশঙ্কা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন, এই আইনের জেরে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ভয় পাবেন না, চিন্তা করবেন না। কারও যাতে অধিকার কেড়ে নেওয়া না হয়, তা আমি দেখব। এর আগে যখন পরিচয়পত্র আধার কার্ড বাতিল করার চেষ্টা হয়েছে, আমরা তারও বিরোধিতা করেছি। সাহস থাকলে ফেলে না রেখে চার বছর আগে কেন এই কাজ করা হলো না?’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা