× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভারতের হুমকি উস্কানিমূলক, ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া পাকিস্তানের

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১২:২০ পিএম

আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৩ পিএম

ক্ষমতাসীন বিজেপি গত দুই নির্বাচনে পাকিস্তান ইস্যুকে গুরুত্ব দিয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

ক্ষমতাসীন বিজেপি গত দুই নির্বাচনে পাকিস্তান ইস্যুকে গুরুত্ব দিয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ভারতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করে কেউ সীমান্ত পেরিয়ে পালালে তাকে পাকিস্তানে ঢুকে মেরে আসবে ভারত।’ তার এ বক্তব্যকে উস্কানিমূলক আখ্যা দিয়ে এর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তান বলেছে, ভোটের সময় ফায়দা নিতে ভারতের শাসক দল অভ্যাসগতভাবে এ ধরনের ঘৃণাপূর্ণ বক্তব্য রাজনীতিতে ব্যবহার করে। তবে অন্য দেশের মাটিতে প্রবেশ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড পরিচালনার মতো যে ঘটনার কথা বলেছে নয়াদিল্লি, আন্তর্জাতিক বিশ্বকে সমন্বিতভাবে এর জবাব দেওয়া উচিত। 

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সময় এলেই দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো পাকিস্তান সরব হয়। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন বিজেপি গত দুই নির্বাচনে পাকিস্তান ইস্যুকে গুরুত্ব দিয়েছে। তাদের এই কৌশলকে উগ্র জাতীয়তাবাদ চাঙ্গা করার অপ্রয়াস হিসেবে দেখেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক, বিশ্লেষক, এমনকি দেশটির বিরোধী দলগুলো। এবারও ভোটের মাঠে ঢুকে পড়েছে পাকিস্তান প্রসঙ্গ। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সিএনএন নিউজ নেটওয়ার্ক নিউজ এইটটিনকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বিজেপির সাবেক সভাপতি ও মোদি সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভারতে প্রবেশ করে তথাকথিত সন্ত্রাসী হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। একই হুমকি দিয়েছেন, যদি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে কেউ পাকিস্তানে পালিয়ে যায়, তাহলে সে দেশে ঢুকে মেরে আসবে ভারত। 

সম্প্রতি ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সাল থেকে ভারত সরকার পাকিস্তানে প্রায় ২০ জনকে হত্যা করেছে। বিদেশের মাটিতে বাস করা সন্ত্রাসীদের নির্মূল করার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এমন অভিযান চালাচ্ছে তারা।

এই প্রতিবেদনের বিষয়ে সিএনএন নিউজ ১৮ জানতে চাইলে রাজনাথ সিং বলেন, ‘তারা (সন্ত্রাসী) যদি পাকিস্তানে পালিয়ে যায়, আমরা পাকিস্তানে ঢুকে তাদের মারব।’

তবে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন সম্পর্কে মন্তব্য চেয়ে রয়টার্সের পক্ষে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো সাড়া দেয়নি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার কথা অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান।

ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ‘ভারত সব সময় প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়... কিন্তু যদি কেউ ভারতকে বারবার রক্তচক্ষু দেখায়, ভারতে আসে এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, তাহলে আমরা তাদেরকে ছেড়ে দেব না।’

২০১৯ সালে কাশ্মিরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি গাড়িবহরে বোমা হামলার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। ওই বছর পুলওয়ামা হামলার পর জনসভা থেকে রাজনাথের মতোই ঘরে ঢুকে মেরে আসার হুমকি দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

পুলওয়ামা হামলার কয়েক দিনের মধ্যেই পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালিয়েছিল ভারত। সেই হামলা জঙ্গি ঘাঁটিতে চালানো হয়েছিল বলে দাবি দিল্লির।

চলতি বছরের শুরুতে পাকিস্তান বলেছিল, তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ রয়েছে যে, পাকিস্তানি ভূখণ্ডে ভারত দুই নাগরিককে হত্যা করেছে। ২৫ জানুয়ারি তথ্য-প্রমাণসহ ভারতের কাছে নথিপত্র দেয় পাকিস্তান। তবে ভারত এই অভিযোগকে মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণা বলে আখ্যা দিয়েছে।

শনিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, পাকিস্তানের মাটিতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং আন্তর্জাতিক হত্যাকাণ্ডে ভারতের জড়িত থাকার ‘অকাট্য প্রমাণ’ রয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নির্বিচারে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করে আরও বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করার ভারতের প্রস্তুতির বিষয়টি স্পষ্টভাবে তাদের দোষ স্বীকার করার শামিল। তাদের এই জঘন্য ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভারতকে জবাবদিহি করা অপরিহার্য।’

পাকিস্তান আরও বলেছে, পাকিস্তান তার অভিপ্রায় এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার ক্ষমতায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ২০২৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের বেপরোয়া অনুপ্রবেশের বিষয়ে পাকিস্তান দৃঢ় প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল, যা সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করা ভারতের ফাঁফা অবস্থাকে প্রকাশ করেছিল।

‘ভারতের এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ কেবল আঞ্চলিক শান্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না বরং গঠনমূলক শান্তিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে, দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব রাখে। পাকিস্তান সব সময় এই অঞ্চলে শান্তির প্রতি তার অঙ্গীকার প্রদর্শন করেছে। যাই হোক, শান্তির জন্য আমাদের আকাঙ্ক্ষাকে ভুল বোঝানো উচিত নয়। ইতিহাস প্রমাণ করে, পাকিস্তানের দৃঢ় সংকল্প এবং নিজেকে রক্ষা করার ক্ষমতা আছে।’ 

এদিকে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ভারত হত্যা বা হত্যার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ওঠার কয়েক মাস পর দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়। গত বছর সেপ্টেম্বরে কানাডা বলেছিল, ওই বছর জুনে এক শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে গুলি করে হত্যায় ভারতের যোগসূত্র থাকার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। ভারত এমন অভিযোগ অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দেয়। এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল।

তবে জানুয়ারিতে কানাডার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভারত সহযোগিতা করছে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে।

আবার গত বছর নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রও বলেছিল, তাদের মাটিতে একজন শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে হত্যার চেষ্টা নস্যাৎ করেছে তারা। এ ঘটনায় জড়িত যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই ব্যক্তি এই হত্যা পরিকল্পনা সমন্বয় করতে ভারতের সঙ্গে কাজ করেছিল।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ ঘটনার বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে ভারত তা তদন্ত করে দেখবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন।

সূত্র : রয়টার্স

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা