প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ২১:৪৯ পিএম
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩ ২২:১৯ পিএম
অভিযুক্ত খন্দকার মুশতাক আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত
ধর্ষণ মামলায় মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের জামিন বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত। তবে আদালত বলেছেন, ‘মুশতাক গভর্নিং বডির কোনো কর্মকাণ্ডে বা মিটিংয়ে অংশ নিতে পারবেন না। তিনি স্কুলের সীমানায়ও যেতে পারবেন না।’
আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম রবিবার (২০ আগস্ট) এ আদেশ দেন। সোমবার সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ সাইফুল আলম বিষয়টি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন।
১৭ আগস্ট মুশতাক আহমেদকে বিয়ে করা আইডিয়ালের ছাত্রীকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অভিযুক্ত মুশতাককে আগাম জামিন দেন আদালত। বিচারপতি শেখ জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ সেদিন এ আদেশ দেন।
ওই দিন আদালত বলেন, আইডিয়ালের ছাত্রীর বয়স নিয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। তাই ভিকটিমের বয়স নির্ধারণ করা জরুরি। বয়স নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ভিকটিম নারী ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে সেফহোমে (নিরাপদ হেফাজতে) থাকবে।
আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মুশতাকের জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল হাশেম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান লিখন।
এর আগে ১৬ আগস্ট এ মামলায় খন্দকার মুশতাক আহমেদের জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ। বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ অপারগতা প্রকাশ করে জামিন আবেদনটি ফেরত দেন।
১ আগস্ট কলেজছাত্রীকে প্রলোভন ও ধর্ষণের অভিযোগে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দাতাসদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার অন্য আসামি হলেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী। কলেজছাত্রীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম এ মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভুক্তভোগীকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজখবর নেওয়ার নামে আসামি ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কিছু দিন পর আসামি মুশতাক ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকাছাড়া করবে বলে হুমকি দেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী এ রকম আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে (২ নম্বর আসামি) ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি (অধ্যক্ষ) ব্যবস্থা করছি বলে আসামি মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন এবং ভুক্তভোগীকেও ক্লাস থেকে নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আসামিকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন। এ বিষয়ে বাদী ২ নম্বর আসামির কাছে প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি। বরং আসামি মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করে আসতে থাকেন।
ওই অভিভাবকের অভিযোগ, মেয়েকে নিয়ে তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রামের বাড়িতে গেলে ১২ জুন সেখান থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যান মুশতাকের সহযোগীরা।
ঠাকুরগাঁওয়ে অপহরণের মামলার পর ওই তরুণী ১৬ জুলাই আদালতে জবানবন্দি দিয়ে জানান, তিনি স্বেচ্ছায় এসেছেন। সেদিনই আদালত থেকে নিজ জিম্মায় মুক্তি নিয়ে তিনি মুশতাকের সঙ্গে আবার ঢাকায় চলে আসেন। পরে ওই তরুণীর বাবা তার মেয়েকে প্রলোভন ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।