জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের বিবৃতি
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৪৮ পিএম
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:১২ পিএম
ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংগৃহীত ফটো
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের দুই নেতাসহ বাংলাদেশে মানবাধিকারকর্মীদের আইনি প্রক্রিয়ায় অব্যাহত হয়রানির অভিযোগ তুলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানির পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এর আগে জেনেভায় রাভিনা ও মার্তা হুরতাদো এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের দুই কর্মকর্তাসহ মানবাধিকার আইনজীবী ও সুশীল সমাজের নেতাদের অব্যাহত ভীতিপ্রদর্শন ও হয়রানির ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।
হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় কাজ করতে মানবাধিকারকর্মী এবং অন্য সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের জন্য একটি নিরাপদ ও যথাযথ পরিবেশ তৈরির জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
‘ড. ইউনূস প্রায় এক দশক ধরে ভয়ভীতি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে দুটি মামলার বিচারকাজ চলছে, যাতে তার কারাদণ্ড হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মামলা দুটির একটি হচ্ছে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে এবং আরেকটি দুর্নীতির।’
‘যদিও ড. ইউনূস আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন, তারপরও তার বিরুদ্ধে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অপপ্রচারে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গতিপূর্ণ ন্যায়বিচারের অধিকার খর্ব করার ঝুঁকিতে পড়ায় আমরা উদ্বিগ্ন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও নাসিরউদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে দায়ের মামলাগুলোও আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, যেগুলোর রায় বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে। এই ফৌজদারি মামলাগুলো ১০ বছর আগের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং সম্পর্কিত। তারা ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাদের সংস্থার লাইসেন্সও নবায়ন করা হয়নি।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী ও ভিন্নমতালম্বীদের আইনি প্রক্রিয়ায় হয়রানি করা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও নাগরিকদের জন্য উদ্বেগজনক লক্ষণ। এই মামলাগুলোকে দেশটির স্বাধীন বিচারব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা বলে মন্তব্য করা হয়েছে বিবৃতিতে।
হাইকমিশনার যথাযথ প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের অধিকার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন গভীরভাবে পর্যালোচনা করছি। যা সম্প্রতি সমস্যাযুক্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই আইনে বিভিন্ন অভিযোগে জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ড এবং জামিনের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে বাকস্বাধীনতা রোধে আইনটির নির্বিচার ব্যবহার ঠেকাতে তাতে থাকা বিদ্যমান উদ্বেগগুলো চিহ্নিত করা সংসদের জন্য এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র : ওএইচসিএইচআর ডট অর্গ