প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:২৬ পিএম
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:০৪ পিএম
কুষ্টিয়া জেলা যুবদল নেতা অলি হাসান। ছবি : সংগৃহীত
বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর মহাসমাবেশ থেকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির দুই নেতার (দুজনই সাবেক সংসদ) পরিকল্পনায় কয়েকজনকে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ওইদিন দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা যুবদল নেতা অলি হাসানসহ কয়েকজন প্রধান বিচারপতির কাকরাইলের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর করে। নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য তাদের টাকাও পরিশোধ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যুবদল নেতা অলি এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
সোমবার (৬ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। এর আগে এই দিন অলি হাসানসহ ২৬ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র্যাব।
র্যাবের ভাষ্য, কুষ্টিয়া জেলা যুবদল নেতা অলি হাসান জিজ্ঞাসাবাদে জানান, জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন মূল ইন্ধনদাতা। তারা বলেছিলেন, ঢাকায় গিয়ে কিছু কর্মসূচি পালন করতে হবে। আগুন দেওয়া ছাড়াও প্রধান বিচারপতির বাসার সামনে গিয়ে এমন সিনক্রিয়েট ঘটাতে হবে যাতে দেশবাসীর নজরে আসা যায়। এ ছাড়া বাসে করে ঢাকায় আসার সময় বলা হয়েছিল, হরতালসহ যে কর্মসূচিগুলো সামনে আসবে তা কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা করতে হবে ও আগুন দিতে হবে।
বিষয়গুলো পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে অলি আরও জানান, কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় আসার পর জেলা বিএনপির দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সরকার ও কাজল মজুমদার বিচারপতির বাসভবনে হামলায় লিড দেন। অগ্নিসংযোগ করাসহ নানা বিশৃঙ্খলায় অলিসহ আরও বেশ কয়েকজন অংশ নেন। এ কাজের জন্য কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের টাকা দেয়া হয়। এ ছাড়া জাকির হোসেন সরকার খাবারের জন্য বিরিয়ানির ব্যবস্থা করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতকারী ও সন্ত্রাসীরা রাজধানীর কাকরাইল, পল্টন, ফকিরাপুল ও মতিঝিলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস কায়দায় হামলা ও আক্রমণ চালায়। তারা গণপরিবহন, ব্যক্তিগত পরিবহন ও সরকারি বিভিন্ন যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, আক্রমণ ও ভাঙচুর করে। তাদের হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী ও সাধারণ মানুষসহ বহু হতাহত হন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব সোমবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও সহিংসতার ঘটনায় কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা এলাকা থেকে কুষ্টিয়া জেলা যুবদলের দলের সদস্য ও স্থানীয় ক্যাডার অলি হোসেন, গাজীপুরের শ্রীপুরের জৈনা বাজার এলাকা থেকে শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব আমিনুল ও সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং সাবেক ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক দুলালকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ থেকে ৩ জন, গাজীপুর থেকে একজন, মানিকগঞ্জ থেকে একজন, রাজশাহী থেকে একজন, যশোর থেকে ৮ জন, ফরিদপুর থেকে একজন, ময়মনসিংহ থেকে একজন এবং কক্সবাজার থেকে ২ জনসহ মোট ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।