খতনায় আয়ানের মৃত্যু
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:১২ পিএম
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৩২ পিএম
আয়ান। ছবি : সংগৃহীত
সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি হাইকোর্ট। তাই ফের তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি নতুন কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আতাবুল্লার বেঞ্চ এ কমিটি গঠন করে দেন।
হাইকোর্ট পাঁচ সদস্যের নতুন এ কমিটিতে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মাকসুদুল আলমকে প্রধান করেছেন। কমিটির অন্য চার সদস্য হলেন শশাঙ্ক কুমার মণ্ডল, আজিজুর রহমান কাজল, সাথী মর্তুজা ও আমিনুর রশীদ। এর মধ্যে একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং তিনজন চিকিৎসক।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম জানান, কমিটিকে বিষয়টি অনুসন্ধান করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা আদালতের মনঃপূত হয়নি। তাই আবার তদন্ত করতে নতুন কমিটি করে দিয়েছেন।’
রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ। ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষারকান্তি রায়।
শুনানির এক পর্যায়ে জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিটির রিপোর্ট আমাদের মনঃপূত হয়নি। আমরা পাঁচ সদস্যের নতুন কমিটি করে দিচ্ছি।’
এর আগে ২৯ জানুয়ারি এ মামলার শুনানিকালে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির রিপোর্টকে ‘আইওয়াশ‘ ও ‘হাস্যকর‘ বলেছিলেন বিচারক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওই প্রতিবেদনে আয়ানের মৃত্যুর নির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত না করে কয়েকটি সম্ভাবনার কথা বলা হয়। শিশুটির এমন মৃত্যুর জন্য সরাসরি কাউকে দায়ী না করে ভবিষ্যতে এ ধরনের মৃত্যু এড়াতে চার দফা সুপারিশ তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
প্রতিবেদনের এক জায়গায় বলা হয়েছে, শিশু আয়ানের ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা ছিল এবং সেজন্য তাকে স্টেরয়েড দেওয়া হয়। আয়ানের ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা জানার পরও তাকে অপারেশন কেন করা হয়েছিল, সে প্রশ্ন সেদিন রেখেছিলেন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক। স্বাস্থ্য বিভাগ ‘দায় এড়ানোর জন্য’ এ ধরনের রিপোর্ট দাখিল করেছে বলেও সেদিন মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
এর আগে পাঁচ বছর বয়সি আয়ানকে খতনা করানোর জন্য গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার সাতারকুল এলাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিল তার পরিবার। অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর তার আর জ্ঞান ফেরেনি। এ অবস্থায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। ৭ জানুয়ারি আয়ানকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ পরে বাড্ডা থানায় মামলা করেন।